নিজস্ব প্রতিনিধিঃ তীব্র দাবদাহ ও ভ্যাপসা গরম, অপরদিকে বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিং। এমন অবস্থায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে মানুষের জনজীবন। বয়োজ্যেষ্ঠ, শিশু ও শিক্ষার্থীরা চরম বিপাকে পড়েছে। দফায় দফায় বিদ্যুৎ বিভাগের এমন কাণ্ডে ক্ষুদ্ধ সাধারণ মানুষ। তার মধ্যে ছোট-বড় শিল্প-কারখানা ও পোল্ট্রি খামার মালিকরাও চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায়। দিন-রাত সব মিলিয়ে ২৪ ঘণ্টায় কমপক্ষে ১৫-২০ বারের চেয়েও বেশি লোডশেডিং নিচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
গত মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) এক দিন আগে থেকেই গ্রাহকদের সাথে এমন অদ্ভুত কাণ্ড ঘটাচ্ছেন টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ। অন্যদিকে স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলছেন, লোডশেডিং সিডিউলের বিষয়ে এলাকাগুলোতে অবহিত করেনি বিদ্যুৎ বিভাগ।
জানা গেছে, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে দেশজুড়ে এলাকাভিত্তিক ১ ঘণ্টা, প্রয়োজনে দেড় ঘণ্টা লোডশেডিং দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় দেশজুড়ে লোডশেডিং থাকার কথা। কিন্তু ভূঞাপুর বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ সরকারের নির্দেশনাকে গুরুত্বপূর্ণ না দিয়ে ঘোষণার একদিন আগে থেকেই ইচ্ছেমতো যখন-তখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং দিচ্ছে।
এরই ন্যায় গতকাল বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) রাত ৯টা থেকে শুক্রবার (২২ জুলাই) সকাল ৬টা পর্যন্ত পুরো উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় টানা ৯ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ে হাজার হাজার মানুষ ভোগান্তিতে পড়েন। এছাড়া বৃহস্পতিবার দিনের বেলা ১৫-১৬ বার বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করেছে। ১৫ মিনিট বিদ্যুৎ দিলে তার ১ থেকে দেড় ঘণ্টা লোডশেডিং নেয়। শুক্রবার সকাল ৬ টার পর থেকে বিকাল পর্যন্ত কমপক্ষে ১০-১২ বার আসা-যাওয়া করেছে।
ওষুধ ব্যবসায়ী হারুন অর রশিদ জানিয়েছেন, দিন-রাত অসহনীয় পর্যায়ে লোডশেডিং নিচ্ছে। ফলে গরমে খুব খারাপ অবস্থা। শিশুদের নিয়েও বিপাকে পড়তে হচ্ছে। বিদ্যুৎ অফিসের এমন কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে গেছি।
শিক্ষক হাবিবুর রহমান বলেন, সিডিউল অনুযায়ী এলাকা ভিত্তিক ১-২ ঘণ্টা লোডশেডিং দেওয়ার কথা থাকলেও সেটা মানছে না বিদ্যুত বিভাগ। ফলে ঘণ্টায় ঘণ্টায় বিদ্যুতের লোডশেডিং দিচ্ছে তারা। নির্দেশনার একদিন আগে থেকেই দিন-রাতে ব্যাপকহারে লোডশেডিং হচ্ছে।
এসএসসি পরীক্ষার্থী সাগর জানান, কিছু দিন পরেই শুরু হতে যাচ্ছে এসএসসি পরীক্ষা। একদিকে যেমন অসহনীয় গরম অন্যদিকে, বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে ঘরে থাকা যায় না। ঠিকমতো লেখাপড়া করতে পারছি না। পরীক্ষার আগে এমন অবস্থা চলতে থাকলে আমরা শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবো।
এদিকে, ভূঞাপুর বিদ্যুৎ বিভাগ সরকারের বিধি ভঙ্গ করায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বইছে নানা আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী লোকজন করছে ব্যাপক প্রতিবাদ। তাদের দাবি, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বিদ্যুৎ দিতে হবে।
এ ব্যাপারে ভূঞাপুর বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ভূঞাপুরে বিদ্যুতের চাহিদা ১৭ মেগাওয়াট। তারমধ্যে আমরা পাচ্ছি মাত্র ৭-৮ মেগাওয়াট, যা চাহিদার তুলনায় অর্ধেক। ফলে লোডশেডিং হচ্ছে। এছাড়া এলেঙ্গায় সঞ্চালন লাইনে বৃহস্পতিবার রাতে বজ্রপাতের কারণে সমস্যা দেখা দেয়ায় শুক্রবার ভোর পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবাহ বন্ধ থাকে।
Leave a Reply