ভূঞাপুরে পূর্ব না পশ্চিম কোন পাড়ে হবে স্কুল স্থান নির্ধারণ নিয়ে বঞ্চিত হচ্ছে শত শত শিশু

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের চরচন্দনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন যমুনা নদীতে বিলীন হওয়ার এক বছরেও চালু হয়নি পাঠদান। বিদ্যালয়ের স্থান নির্ধারণ নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালু না হওয়ায় শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শত শত শিশু।

পূর্ব না পশ্চিম কোন পাড়ে হবে স্কুল, এ জটিলতার কারণে দীর্ঘ এক বছরে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদানের ব্যবস্থা হয়নি।

স্থানীয়রা জানান, ভূঞাপুর সদর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরের চরচন্দনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠা ১৯৩৮ সালে। ২০২১ সালের ১৮ জুলাই যমুনার ভাঙনে বিদ্যালয় ভবনটি নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ওই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে স্থানীয় সংসদ সদস্য ছোট মনির বিদ্যালয়টি নদীর পশ্চিম পাশে স্থানান্তরের জন্য ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সুপারিশ করেন। সেই সুপারিশ মতে, ২৫ অক্টোবর তৎকালীন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল আজিজ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর প্রতিবেদন পাঠান। ২২ নভেম্বর তিনি সরেজমিন পরিদর্শন করে ফের প্রতিবেদন দেন। ২০২১ শিক্ষাবর্ষে শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ১৫৮ জন শিক্ষার্থী ভর্তি ছিলো। নদীর পূর্ব পাড়ের আশে পাশে একাধিক সরকারি প্রতিষ্ঠান থাকায় বিদ্যালয়টি পশ্চিম পাশে করা যেতে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন।

প্রতিবেদন পেয়ে ৭ ডিসেম্বর  প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর আগ্রহী জমিদাতার অঙ্গীকারনামা চেয়ে চিঠি দেয়। ২৬ ডিসেম্বর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জমিদাতার অঙ্গীকার নামা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে পাঠান। এ বছরের গত ৩০ জুন বিদ্যালয়টি পুনঃস্থাপনের জন্য রেকর্ড পত্র সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হয়। ১৪ জুলাই বর্তমান জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ প্রয়োজনীয় সকল তথ্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠান। এতকিছুর পরেও বিদ্যালয়টি আজো চালু করা যায়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন, প্রধান শিক্ষক নাজমুল মোর্শেদ নিজের সুবিধার জন্য তিনি বিদ্যালয়টি নদীর পূর্বপাড়ে স্থাপন করতে চাইছেন। এছাড়াও তার গাফিলতির কারণে এখনও বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়নি। তিনিসহ শিক্ষকরা বসে বসে সরকারি বেতন নিচ্ছেন। এতে করে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি মাদক এবং সন্ত্রাসে জড়িয়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে।

অভিভাবক সাইফুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম ও শাহজাহান মিয়া জানান, স্কুল না থাকায় তাদের ছেলে মেয়েরা পড়াশোনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। মেয়ে শিক্ষার্থীরা বাড়ি খেলাধুলা করে আর ঘুরে বেড়ায়। ছেলে শিক্ষার্থীরা বাপের সাথে মাছ ধরতে নদীতে যায়। স্কুলটি পূর্বপাড়ে হলে নদী পাড় হয়ে অনেকেই স্কুলে যেতে পারবে না। এতে অনেক শিক্ষার্থী ঝড়ে পরবে। স্কুল না থাকাতে অনেক শিক্ষার্থী অনমানুষ হয়ে যাচ্ছে।

বিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সভাপতি আব্দুল লতিফ আকন্দ বলেন, বিদ্যালয় চালু না হওয়ায় নদীর পশ্চিম প্রান্তের ছেলে মেয়েরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বিদ্যালয়টি দ্রুত সময়ের মধ্যে আরও উন্নত করে চালু করার জোর দাবি জানাচ্ছি।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, স্কুলটি নদীর পশ্চিম পাশে নতুন করে প্রতিষ্ঠা করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ বিভাগের আরো সংবাদ
Share via
Copy link
Powered by Social Snap