নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের সখীপুরে এক বখাটের উৎপাত ও হুমকির মুখে আলিম (একাদশ) পড়ুয়া এক ছাত্রী গত ১৭ দিন যাবৎ মাদ্রাসায় যেতে পারছে না। এ বিষয়ে আইনি সহায়তা চেয়ে গত ২৮ জুলাই ওই ছাত্রীর বাবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরারর লিখিত অভিযোগ দিলেও গত ৮ দিনেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। লিখিত অভিযোগ করেও আইনি সহায়তা না পেয়ে আতঙ্কে কাটাচ্ছেন ওই শিক্ষার্থী ও তার পরিবার।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মাদ্রাসায় যাওয়া-আসার পথে উপজেলার ইছাদিঘী গ্রামের ফজল হকের ছেলে আলামিন ওই ছাত্রীকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত শুরু করে। পরবর্তীতে ওই বখাটে ছেলের বিরুদ্ধে স্থানীয় ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে কয়েকবার সালিস বৈঠক করা হলেও নিস্তার হয়নি ।
এতে ওই বখাটে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওই মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর বাড়ির ২০ হাজার টাকা মূলের দুটি খড়ের পালা রাতের আধারে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে। মাদ্রাসায় যাওয়াও বন্ধ। নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছে ওই শিক্ষার্থীর পরিবার।
ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী জানায়, “মাদ্রাসা কিংবা বাড়ির বাইরে কোথাও গেলে ওই বখাটে আমার পিছু নিয়ে উত্যক্ত করে। বিভিন্ন হুমকি ধামকি দেয়। ওর ভয়ে আমি বাড়ি থেকে এখন বাইরে বের হইনা। আমি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতা চাই।”
মেয়ের বাবা আব্দুল লতিফ মিয়া বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, অনেক আশা নিয়া মেয়েটাকে লেখাপড়া করাইতাছি। কিন্তু অরা তা করবার দিব না। প্রায় বছর খানেক মত হবে আমার মেয়েকে যেখানে পায় বিভিন্ন উপায়ে বিরক্ত করে আসছে। একদিন মাদ্রাসা থেকে আসার পথে ওই বখাটে আলামিন আমার মেয়ের হাত ধরে মোবাইল নাম্বার চায়। খবরটা শুনে ওই ছেলেকে শ্বাসাইয়া দেই। যেন আর কোন দিন আমার মেয়ের সামনে না আসে। এরপর আমার বাড়িতে খড়ের পালায় আগুন দেয়। মেয়ে তোলে নেওয়ার হুমকি দেয়। স্থানীয়রা বিষয়টি জানেন।
তিনি আরোও বলেন, ভয়ে মেয়েটা মাদ্রাসায় যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। স্থানীয় কহিনুর মেম্বারের কাছে গেছি অনেকবার বসার সময় দিতে পারে নাই। এখন উপায় না পেয়ে ইউএনও স্যারে কাছে সুবিচার পেতে আবেদন করছি তাও ৮ দিন হলো।
উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কহিনুর ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, লতিফ মিয়ার খড়ের পালায় আগুন দেওয়া ঘটনাটি সত্য। আমি বিষটি জানার পর বসা হয়েছিলো কোন সমাধানে পৌছাতে পারিনি।
অভিযুক্ত ওই বখাটে আলামিনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে বলেন, আমি আগে জড়িত ছিলাম এখন ওই মেয়ে বা পরিবারের সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক নেই। পাশাপাশি বাড়ি তাই আমাকে ইচ্ছে করে অভিযুক্ত করছে। লেখাপড়ায় ব্যস্তু আছি সামনে পরীক্ষা এই বিষয়ে আর কিছু বলতে পারবো না। এই বলে ফোন রেখে দেন।
ইছাদিঘী গ্রামের মাতব্বর আবুল কালাম বলেন, বখাটে আলামিনের বিষয়ে অভিযোগ সত্য। দুই ওয়ার্ডের দুই মেম্বার বিষয়টি জানেন। আমরা সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছি।
সখীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রেজাউল ইসলাম বলেন, এখনো কোন অভিযোগ পাইনি পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নিবো।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ফারজানা আলম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। ইফটিজার হাতেনাতে না ধরলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যায় না । উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশেপাশে পুলিশের টহল রাখার জন্য ওসি সাহেবকে বলা হয়েছে।
Leave a Reply