সখীপুরে সেতুর উপর বাশেঁর সাঁকো দুর্ভোগের শিকার ১০ গ্রামের মানুষ

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার ছোট মৌশা-সিলিমপুর সড়কে খালের ওপর একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। গ্রামীণ সড়কটি পাকা করার পর ওই পুরোনো সেতু ভেঙে নতুন সেতু নির্মাণের প্রকল্প নেওয়া হয়।

এ বছরের জুলাই মাসে সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো পুরোনো সেতু অপসারণের কাজই শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ফলে উপজেলার ছোট মৌশা, কৈয়ামধু, সিলিমপুর, প্রতিমা বংকীসহ অন্তত আরো ১০ গ্রামের মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে রয়েছে ছোট মৌশা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বাধ্য হয়ে পুরোনো ভাঙা ওই সেতুর ওপর বাঁশ দিয়ে সাঁকো তৈরি করে পারাপার হয় শিক্ষার্থীরা।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ৮৩ লাখ টাকা ব্যয়ে গ্রামীণ সড়কের ১৫ মিটার দৈর্ঘ্যর সেতুটির নির্মাণকাজ পেয়েছে মায়ের দোয়া এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। চলতি বছরের জুলাই মাসেই সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। ঠিকাদার বলছেন, জানুয়ারিতে আকস্মিক বৃষ্টির কারণে নির্মাণকাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পুরোনো সেতুর ভাঙা পিলারের ওপর বাঁশের সাঁকো। সাঁকোর নিচেই লম্বালম্বি দাঁড়ানো চিকন রড। পা পিছলে পড়ে গেলেই নিশ্চিত বড় ধরনের দুর্ঘটনা। সেতুর পাশ দিয়ে বিকল্প সড়ক করার নিয়ম থাকলেও তা মানেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রয়োজনের তাগিদেই সেতুর ওপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করে পারাপার হন সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীরা।

ছোট মৌশা আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, প্রথম কয়েক দিন পারাপারের সময় খুব ভয় লাগত। কিন্তু এই সড়ক ছাড়া স্কুলে যাওয়ার অন্য কোনো উপায় নেই। এখন ভয় লাগে না।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আশরাফুল ইসলাম জানান, স্কুলের প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থীই ওই সাঁকো পার হয়ে আসে।বাঁশের সাঁকোটি স্কুলের উদ্যোগে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় নির্মাণ করা হয়েছে। তবে অভিভাবকেরা ছেলে-মেয়েকে স্কুলে পাঠিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, নির্ধারিত সময়ে সেতুটি শেষ না হওয়ায় দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। তাই স্কুল কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী আবদুল হালিম এখলাছ জানান, ‘শুরুতেই আকস্মিক বৃষ্টি হওয়ায় সেতুটির কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে। পানিতে বিকল্প সড়কটিও তলিয়ে গেছে। সেতুর ওপর আমরা একটি সাঁকো বানিয়ে দিয়েছিলাম। আশা করছি, কাজের মেয়াদ বাড়ানো হবে। আর পানি চলে গেলেই নির্মাণকাজ শুরু করা হবে।’

বুধবার (১০ আগস্ট) দুপুরে সখীপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সাখাওয়াত হোসেন জানান, ‘বিষয়টি আমি অবগত রয়েছি। মূলত কাজ শুরু করার পরপরই বৃষ্টির কারণে কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। আশা করছি, নভেম্বরের শুরুতেই সেতুটির নির্মাণকাজ পুনরায় শুরু হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ বিভাগের আরো সংবাদ
Share via
Copy link
Powered by Social Snap