গোপালপুরে ঘনঘন লোডশেডিংয়ে জমিতে সেচ দিতে বিড়ম্বনায় পরেছেন প্রান্তিক চাষিরা

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইল গোপালপুরে ঘনঘন লোডশেডিং এর কারণে জমিতে সেচ দিতে বিড়ম্বনায় পরেছেন প্রান্তিক চাষিরা। এদিকে আমন ধান রোপনের মৌসুম শুরু হওয়ার এমনিতেই অনা বৃষ্টি কারণে গভীর নল কূপ বসিয়ে বেশি দামে ডিজেল কিনে সেচ দিতে হিমশিম খাচ্ছে চাষিরা। বেশীর ভাগ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় সেচ ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে বলে কৃষকদের অভিযোগ।

উপজেলার মোহনপুর গ্রামের কৃষক মালেক জানান, এখন আমন মৌসুম চলছে। জমিতে পানি নাই। বিদ্যুৎ ঠিক মতো থাকছে না। কৃষক যাতে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পায় সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন। কৃষক আবুবকর সিদ্দিক বলেন, ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের জন্য সেচ পাম্প মালিক ক্ষেতে পানি দিতে পারতেছে না। সার দিতে এসে দেখি ক্ষেতে পানি নাই। পানি ছাড়া ক্ষেতে সার দিলে ভাল কাজ করবে না। ফলন ভালো হবে না ধান চিটা হবে।

মোঃ জামাল বলেন, পানির জন্য বীজতলা প্রস্তুত করতে পারেছিনা। সময়মতো বীজ লাগানো না গেলে ফলন ভালো হবে না। সেচ পাম্প মালিক আরিফ জানান, ঘন ঘন লোডশেডিং এর কারনে মানুষের ক্ষেতে পানি দিতে পারি না। এ নিয়ে প্রতিদিনই তর্কবির্তকে জড়াতে হয় আমাদের।

গোপালপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বৃষ্টি না হওয়ার কারণে পানি সংকটে ধানের চারা রোপন করতে পারেননি কৃষক। এমনকি ধানের চারা রোপন করলেও অনাবৃষ্টির কারণে ক্ষেত শুকিয়ে কারণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ধানের চারা।

পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহকরা বলছেন, ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১৫ থেকে ২০ ঘন্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকছে না। রাতে ঘন্টার পর ঘন্টা লোডশেডিং হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন তীব্র গরমে জনজীবন অতিষ্ট হয়ে পরেছে, অপর দিকে দিকে আমন চাষের বাদে ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যুৎ না থাকায় গরমে রাতে খেটে খাওয়া মানুষ ঘুমাতে পারছে না। বেশি বিপাকে পড়েছেন এসএসসি ও এইচ এসসি পরীক্ষার্থী ও শিক্ষার্থীরা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামীমা আক্তার জানান, এই মৌসুমে উপজেলায় সাড়ে ১১ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে। ইতি মধ্যে সাড়ে ৮হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমন আলাগে সক্ষম হয়েছি। এক সপ্তাহের মধ্যে আমরা লক্ষ্যমাত্রা চেয়ে বেশী আমাদের ছাড়িয়ে যাবে। বর্তমানে লোডশেডিং এটা তেমন সমস্যা না।

তবে বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে আছে। আমন ধান সাধারনত বৃষ্টি নির্ভরশীল হয়। বৃষ্টি যদি ঠিকঠাক পাওয়া যায় তাহলে আমন ধান ফলনে তেমন কোন ক্ষতি হবে না।

গোপালপুর জোনাল অফিস, ময়মনসিংহ পল্লী সমিতির ১, ডিজিএম মোঃ মাজহারুল ইসলাম বলেন, গোপালপুরে বিদ্যুৎ গ্রাহক সংখ্যা সাড়ে ৮১ হাজার। তার মধ্যে বিদ্যুৎ চালিত সেচ গ্রাহক সংখ্যা সাড়ে ৩ হাজার। এই পরিমান গ্রাহকে প্রতিদিন বিদ্যুতের যে চাহিদার চেয়ে সরবরাহ অনেক কম।

দিনের বেলা চাহিদা ১৬ মেগাওয়াট সেখানে পাওয়া যায় ৫ মেগাওয়াড, রাতের বেলা বিদ্যুতের চাহিদা ২০ মেগাওয়াড বিপরীতে পাওয়া যায় ৭ সাত মেগাওয়াড। বিদ্যুত চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এতে কৃষক আমন রোপনে ভোগান্তিতে পড়েছে। দুই মাসের মধ্যেই বিদ্যুতের যে মানুষের ভোগান্তি তা লাগব হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ বিভাগের আরো সংবাদ
Share via
Copy link
Powered by Social Snap