সখীপুরে ছেলের হত্যাকারীদের ফাঁসি চায় মাজহারুলের মা-বাবা

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ খেলার মাঠে মেয়েদের উত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় কলেজ ছাত্র মাজহারুল বখাটেদের হামলার শিকার হয়। পরে ১২ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত দেড়টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে মৃত্যু বরণ করে। নিহত মাজহারুল টাঙ্গাইল জেলার সখীপুর উপজেলার কালিয়ান গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে। সে টাঙ্গাইলের করটিয়া সরকারি সা’দত কলেজের সম্মান প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। ছেলের মৃত্যুতে দিশেহারা পরিবার। আমি ফাঁসি চাই। আমি ফাঁসি চাই। আমার ছেলেকে যারা মারছে, তাদের ফাঁসি চাই। যারা আমার ছেলেরে খুন করেছে, তাদের উপর্যুক্ত শাস্তি চাই।’ সন্তান হারা মায়ের এমন আর্তনাদে ভারী হয়ে ওঠে সখীপুরের কালিয়ান এলাকা। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সকলের ফাঁসি চায় মাজহারুলের পরিবার।

পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার ৯ সেপ্টেম্বর উপজেলার কালিয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন মাঠে ওই গ্রামের বিবাহিত বনাম অবিবাহিতের ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। ওই এলাকার কিছু মেয়েরা খেলা দেখতে মাঠে আসেন। ওই এলাকার ইয়ারুল নামে এক বখাটে খেলার মাঠে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে। এ সময় মাজহারুল উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করলে ইয়ারুলের সঙ্গে তর্ক বিতর্কের একপর্যায়ে ধাক্কাধাক্কি হয়। এ ঘটনার জেরে ওই দিন সন্ধ্যায় ইয়ারুলের নেতৃত্বে একদল যুবক মাজহারুলের ওপর হামলা করে। গুরুতর আহত মাজহারুলকে ওই রাতেই স্বজনেরা প্রথমে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে রাজধানী ঢাকার নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি করে। সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাত দেড়টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাজহারুল মারা যায়।

মাজহারুলের বোন মারজিয়া বলেন, আমি ঢাকায় অনার্সে চান্স পাওয়া সত্ত্বেও আমার এই ভাইয়ের জন্য আমি করটিয়া সরকারি সা’দত কলেজে এক?ই বিভাগে ভর্তি হই। অথচ আমার সেই ভাইকেই কেড়ে নিল ওরা। শুনেছি দেশে আইন আছে, আইনের সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে আমার ভাইয়ের হত্যাকারীদের ফাঁসি দাবি জানাচ্ছি।

চোখ মুছতে মুছতে মাজহারুলের মা আমিনা বেগম বলেন, ‘আজ আমার ছেলে গেছে, কাল আরেক মায়ের বুক খালি হবে। আমার মতো আর যেন কোনো মায়ের কষ্ট নিতে না হয়। এসময় তিনি সব আসামিদের আইনের আওতায় এনে ফাঁসির দাবি জানান।

মাজহারুলের বাবা বলেন, যে সকল আসামি এখনো গ্রেপ্তার হয়নি তাদের দ্রুত গ্রেফতার করে সুষ্ঠু বিচার চাই? আমার ছেলেকে যারা নির্মমভাবে হত্যা করেছে তাদের প্রত্যেকের ফাঁসির রায় হবে এমনটাই প্রত্যাশা আমার। বহেড়াতৈল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওয়াদুদ হোসেন বলেন, হত্যাকারীদের কঠিন শাস্তি হলে আর কোনো মেধাবী শিক্ষার্থীদের এভাবে চলে যেতে হবে না।

সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে ৫ আসামীকে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আশা করছি দ্রুতই তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ বিভাগের আরো সংবাদ
Share via
Copy link
Powered by Social Snap