নাগরপুরের দপ্তিয়র ইউপির সাথে জেলার সরাসরি রাস্তা না থাকায় দূর্ভোগে হাজারো জনগণ

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার দপ্তিয়র ইউনিয়নের সারোটিয়া গাজি ও পাছ আরড়া গ্রামের উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগের সরাসরি রাস্তা না থাকায় দূর্ভোগে পড়েছে এ অঞ্চলের হাজারো জনগণ।

এ অঞ্চল বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হলেও অন্ধকারাচ্ছন্ন রয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। সড়ক উন্নয়ন না হওয়ায় এ অঞ্চলের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ মুখ থুবরে পড়েছে এলাকার সার্বিক উন্নয়ন।

উন্নয়ন বঞ্চিত পশ্চাৎপদ অবহেলিত জনপথের নাম এখন সারোটিয়া গাজি ও পাছ আরড়া গ্রাম।

এদিকে নামমাত্র ধূনাইল-দৌলতপুর ভায়া সারোটিয়া গাজি ও পাছ আরড়া যে কাঁচা রাস্তাটি রয়েছে তারও বেহাল দশা। চার কিলোমিটার এই সড়কে এলাকাবাসীর দুর্ভোগের শেষ নেই। বৃষ্টি হলে কাঁদা পানিতে চলাচলকারী মানুষকে জনদুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে।

এছাড়া বর্ষাকালে এ রাস্তার মাঝপথে অবস্থিত খালে পানি ঢুকলে নৌকা দিয়ে পার হতে হয়। এ কাঁচা রাস্তা সংস্কারের কোনো পদক্ষেপ না থাকায় নিয়মিত চরম ভোগান্তীতে পড়ছেন এলাকাবাসী।

বর্ষার মৌসুমে এ রাস্তার করুন অবস্থা দেখার যেনো কেউ নেই। আশপাশের কাচাঁ রাস্তাগুলো পাকাকরণ হলেও স্বাধীনতার ৫০ বছরেও পূর্ণাঙ্গভাবে এ রাস্তাটি পাকা করার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।
নির্বাচন এলেই প্রার্থী ও রাজনৈতিক নেতারা রাস্তাটি পাকা করার প্রতিশ্রæতি দিলেও নির্বাচিত হওয়ার পর পাকা করা তো দূরের কথা মেরামত করারও কোনো উদ্যোগ নেন না।

এই রাস্তা দিয়েই দুই গ্রামের হাজার হাজার মানুষের চলাচল। সারোটিয়া গাজি ও পাছ আরড়া গ্রামের চলাচলের একমাত্র এই রাস্তাটি কাঁচা ও কর্দমাক্ত। ফলে যানবাহন তো দূরের কথা পায়ে হাটাই দুস্কর। এই রাস্তার খালের ওপর একটি সেতু নির্মাণ করে পাকা করার দাবি স্থানীয় এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ধুনাইল-দৌলতপুর ভায়া সারোটিয়া গাজি ও পাছ আরড়া কাঁচা রাস্তা শুস্ক মৌসুমে ধূলাবালি আর বর্ষা মৌসুমে একটু বৃষ্টি হলেই একেবারে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। বৃষ্টির ফোটা পড়ার পরেই কাঁদা পানিতে একাকার হয়ে যায়। প্রচন্ড এ কাঁদায় চলতে গিয়ে অনেকেই পড়ে গিয়ে গন্তব্যে যাবার আগেই বাড়িতে ফিরে আসতে বাধ্য হয়। শিক্ষার্থীরা সময় মতো স্কুল কলেজে যেতে পারে না। স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করতে কাঁচা রাস্তা ব্যবহার করে সারোটিয়া গাজি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পার্শ্ববর্তী দৌলতপুর উপজেলার কলেজে প্রতিদিন যাতায়াত করে। অসুস্থ্য রোগীকে হাসপাতালে সময় মতো নিতে না পারায় বড় ধরণের ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তির আশায় বছরের পর বছর ভোগান্তীর স্বীকার এসব এলাকার জনসাধারণ স্থানীয় সংসদ সদস্য, ইউপি চেয়ারম্যান এবং মেম্বারের কাছে আবেদন জানালেও রাস্তার কোনো উন্নয়ন হয়নি।

এ রাস্তাটি এ দুই গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র অবলম্বন। এই রাস্তা দিয়েই গ্রামের মানুষের উৎপাদিত কৃষিপন্য হাট বাজারে নিয়ে যেতে হয়। তাই রাস্তাটি পাকা করণে স্থানীয় এলাকাবাসী স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

স্থানীয় সারোটিয়া গাজি গ্রামের বাসিন্দা আমিরুল ইসলাম আলোক ও মনির হোসেন ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, বৃষ্টি হলে কাঁচা রাস্তায় কাদাপানি জমে থাকে। তখন রিক্সা ও সিএনজি চালিত অটোরিক্সা চলতে পারে না। এমনকি হেঁটে চলাচলও কঠিন হয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীরা স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় সময়মতো যেতে পারেনা।

তাঁরা বলেন, কতো রাস্তাই তো ঠিক হয়, কিন্তু আমাদের এ রাস্তাটা পাকা হচ্ছে না কেন, বলতে পারেন? তারা আরো জানান, গ্রামের সন্তান সম্ভাবনা প্রসূতিদের সময়মতো গাড়ী না পাওয়ায় হাসপাতালে নেয়া কঠিন হয়ে পড়ে। স্থানীয় এলাকাবাসীর অসুবিধা বিবেচনা করে কাঁচা রাস্তাটি উন্নয়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তারা কতৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

দপ্তিয়র ইউপি চেয়ারম্যান এম ফিরোজ সিদ্দিকী বলেন, গ্রাম দুটির যোগাযোগের সমস্যা দীর্ঘদিনের। ইউনিয়ন পরিষদের ছোট প্রকল্প দিয়ে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব না। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে হলে মেগা প্রকল্প হাতে নিতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ বিভাগের আরো সংবাদ
Share via
Copy link
Powered by Social Snap