মির্জাপুরে কুকুরের খামার করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন দিলিপ কুমার নামের এক ব্যবসায়ী

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে দিলিপ কুমার সাহা নামের এক ব্যবসায়ী শখের বশে বিদেশি প্রজাতির কুকুরের খামার গড়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। শখের বশে কুকুর পালন থেকে এখন তিনি বিশাল খামারের মালিক। দিলিপ কুমার সাহা টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার মহেড়া গ্রামের বাসিন্দা।

তার খামারে রয়েছে- ডগ আর্জিন্টিনা, পিট বল, ইউএস বুলি, কান কোর্সো, ফ্রান্স মার্সিভ, চাউচাউ, রাশিয়ান শামওয়েট, হোয়াইট টেরিমার, বাছে হাউন, বিগ্রোল ও টিবিভিয়ান মার্সিভসহ ২৪ জাতের ৭০টি কুকুর। এসব কুকুর তিনি ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করেছেন।

শিকার, দোকান ও অফিস পাহারাদারি, ছাগল-ভেড়া ইত্যাদির হেফাজত, ঘরবাড়ি, এবং অপরাধের উৎস সন্ধান ও অপরাধীকে চিহ্নিত করার মতো কুকুর পাওয়া যায় এই খামারে। এমনকি ওসামা বিন লাদেনকে খুঁজে বের করা জাতের কুকুরও ওই খামারে রয়েছে। কুকুরগুলোকে সকাল বিকেল ভাত, মাংস, সবজি একত্রে রান্না করে খাওয়ানো হয়। ওই খামারে স্থানীয় বেকারদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে।

প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দর্শনার্থীরা তার খামার পরিদর্শনে আসেন। তার কাছ থেকে কুকুর ক্রয় করলে অন্য দেশ থেকে আমদানি করা কুকুরের চেয়ে ৫০ শতাংশ সাশ্রয় হবে বলে জানান তিনি।

দিলিপ কুমার সাহা জানান, তিনি বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করার সময় বাসা বাড়িতে নানা প্রজাতির কুকুর পালন করা দেখে তার গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার মহেড়ায় কুকুর পোষা শুরু করেন। শখের বশে আট বছর আগে নিজের বাড়িতেই বিদেশি প্রজাতির কুকুর পালন শুরু করেন তিনি। পরবর্তীতে আড়াই বছর আগে বাড়ির আঙিনায় ২০ শতাংশ জমিতে অর্ক ক্যানেল নামে একটি কুকুরের খামার গড়েন তিনি।

খামারে কাজ করা শ্রমিক মাসুদ মিয়া বলেন, আগে কৃষি কাজ করতাম তখন নিয়মিত কাজ হতো না। দুই বছর যাবত এই খামারে চাকরি করি। নিয়মিত কাজ হওয়ায় এখন আর কাজ নিয়ে চিন্তা করতে হয় না।

মাসুদ মিয়া নামের আরেক শ্রমিক বলেন, আগে ঝড় বৃষ্টি ও রোদের মধ্যে মাঠে কাজ করতে হতো। এখন আর তা করতে হয় না। সকাল ৭ টায় আসি, সন্ধ্যা ৭ টায় চলে যাই। যা বেতন পাই তাতে আমার সংসার মোটামুটি ভালই চলে।

স্থানীয় বাসিন্দা মানিক মিয়া বলেন, আমার ৪৫ বছর বয়সে সৌদি আরব, সিঙ্গাপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ঘুরেছি। সেখানে অনেক হাঁস, মুরগী ও গরু ছাগলের খামার দেখেছি- কখনও কুকুরের খামার দেখিনি। এই প্রথম আমাদের গ্রামে কুকুরের খামার দেখলাম। খামারের কারণে দূর-দূরান্ত থেকে অনেক লোক আসে গ্রামে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য রতন মিয়া বলেন, জমিদার বাড়ি ও পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের পাশাপাশি কুকুরের খামারের কারণে মানুষ নতুনভাবে মহেড়া গ্রামকে চিনবে।

অর্ক ক্যানেলের পরিচালক গৌতম সাহা বলেন- ফ্যামিলি ডগ, গার্ডিন, টয়বিডসহ বিভিন্ন প্রজাতির কুকুর রয়েছে। প্রতিদিনই বিভিন্ন স্থান থেকে ক্রেতা আসে। আবার অনলাইনেও বিক্রি করা হয়। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী কুকুর বিক্রি করা হয়। আমার কাছ থেকে কুকুর নিলে আমদানি করার কুকুরের চেয়ে ৫০ শতাংশ সাশ্রয় হবে।

অর্ক ক্যানেলের মালিক দিলীপ কুমার সাহা বলেন, উন্নত বিশ্বে পোষা প্রাণী হিসেবে কুকুর বেশ জনপ্রিয়। আমার খামারের কুকুরগুলো অফলাইন-অনলাইনে বিক্রি হচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। প্রতিটি কুকুর প্রজাতি ও আকার ভেদে ২০ হাজার থেকে আড়াই লাখ টাকায় বিক্রি হয়।

তিনি বলেন, এ পর্যন্ত খামারে সব মিলিয়ে দেড় কোটি টাকা খরচ হয়েছে। স্বল্প সুদে ঋণ পেলে খামারটি পরিচালনা করতে সহজ হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ বিভাগের আরো সংবাদ
Share via
Copy link
Powered by Social Snap