নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের ঘাটাইল ও সখীপুর উপজেলার সীমান্ত এলাকায় এক রাতে কমপক্ষে চার বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক বিরাজ করছে।
মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতের কোন এক সময় দুই উপজেলার ধলাপাড়া ও কাকড়াজান ইউনিয়ের পাশাপাশি গ্রাম খাঁনমোড়, পোড়াবাসা, মোল্লাপাড়া, টিকুরিয়া চালার চার বাড়িতে সিঁধ কেটে, জানালা ভেঙ্গে, গ্রীলকেটে ও দরজা ভেঙ্গে মোবাইল, স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকাসহ অন্যান্য আসবাবপত্র চুরি হয় ।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ঘাটাইলের ধলাপাড়া ইউনিয়নের খাঁনমোড় এলাকার ভ্যানচালক নাসিরের বাড়িতে মানুষ না থাকার সুযোগে রাতের কোন এক সময় টিনের গেট ও দরজা ভেঙ্গে পুরাতন দুটি টাচ ও দুটি বাটন মোবাইলসহ একটি বিদেশী টর্চ লাইট ও দশ কেজি চাল চুরি করে নিয়ে যায় চোরেরা। চুরি হওয়া মোবাইলে ০১৭৮০-৭২৩৭৩৯ সিমটি সংযোজিত ছিলো।
এদিকে সখীপুর উপজেলার কাকড়াজান ইউনিয়নের পোড়াবাসা (বড়বাড়ি) এলাকায় প্রবাসী সামছুলের হকের ঘরে সিঁধ কেটে অপ্পো ব্র্যান্ডের একটি টাচ মোবাইল, বিছানার নিচে থাকা পনেরো শত টাকা ও একটি বিদেশী তেলের বোতল নিয়ে যায় চোরেরা। দু’চালা এই ছোট্ট ঘরে যদিও সামছুল হকের স্ত্রী ও দুই সন্তান ঘুমিয়ে ছিলো তারা কোনভাবেই টের পায়নি বিষয়টি। সকালে পাশের বাড়ির লোকজন তাদের ডেকে তুলে অবহিত করে।
তাছাড়া একই রাতে উপজেলার মোল্লাপাড়া এলাকায় ইসমাইল হোসেনের বাড়িতেও ঘরে সিঁধ কেটে একটি টাচ মোবাইল ও ঊনিশত টাকা নিয়ে যায় চোরেরা। উল্লেখ্য, ঘরে ইসমাইল ও তার স্ত্রী ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলো। সকালে প্রতিবেশীর ডাকে তারা বুঝতে পারে বিষয়টি।
এদিকে, একই রাতেই টিকুরিয়া চালা এলাকায় নুরুল ইসলামের বাড়িতেও ঘরের জানালা ভেঙ্গে দেড় ভরি ওজনের স্বর্ণ, কিছু কাপড় ও নগদ বিশ হাজার টাকা নিয়ে যায় চোরেরা। এ ঘরে কোন মানুষ ছিলো না রাতে।
চুরি হওয়া প্রসঙ্গে প্রবাসী সামছুলে স্ত্রী মোর্শেদা আক্তার বলেন, “রাত এগারোটার সময় বাবুর আব্বার সাথে ফোনে কথা বলে মোবাইলটা বালিশের নিচে রাইখা ঘুমাই। ছোট ছেলেটা আমার সাথে এই খাটে ও বড় ছেলেটা ঐ খাটে ঘুমাইছিলো (এক ঘরেই দুইটি খাট)। কিভাবে কখন সিং কাটলো, ঘরে আইসা এতো কিছু নিয়া গেলো কিছুই টের পাই নাই। সকালে আমার ছোট ঝাওয়ের ডাকে ঘুম ভাঙ্গে। পোলার স্কুলের সার্টিফিকেট, জমিনের দলিলপত্র, জাতীয় পরিচয়পত্রসহ আরও কিছু দামি-দামী কাগজ বাহিরে ফালাইয়া রাইখা গেছে চোরেরা”।
আরেক ভুক্তভোগী ভ্যানচালক নাসির বলেন, “আমি ও আমার বউ শশুর বাড়ি গেছিলাম ঘরে ও গেটে তালা দিয়া। বাড়িতে কেউ আছিলো না। সকালে “মা” ফোন দিলে বাড়ি আইসা দেখি টিনের গেট ও দরজার কয়ড়া ভাইঙ্গা চারটা মোবাইল, খালার দেওয়া একটা বিদেশী লাইট আর ঘরে থাকা দশ কেজি চাল নিয়া গেছে চোরেরা। “মা” খালার বাড়ি আছিলো “
কথা হয় ধলাপাড়া ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য শরীফুল ইসলাম শরীফ ও কাকড়াজান ইউনিয়নের ডিএম রফিকুল ইসলামের সঙ্গে। তারা একই সুরে বলেন, ইদানিং এলাকায় চুরি বেড়ে গেছে। আমরা চেয়ারম্যান মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলবো এ নিয়ে। তারা উভয়েই সকালে চুরি হওয়া বাড়িগুলো পরিদর্শন করেছেন বলেও জানান।
এ বিষয়ে কাকড়াজান ইউপি চেয়ারম্যান দুলাল হোসেন (দুলাল)-এর কাছে জানতে চাইলে মুঠোফোনে বলেন, আমার কাছে কেউ কিছু বলেনি এখনও চুরি হওয়া নিয়ে। তবে, এমনটি হয়ে থাকলে উপজেলার মাসিক সভায় আমরা আলোচনা করবো রাতের টহল বাড়াতে।
Leave a Reply