নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) সংসদীয় আসনটি বিএনপির দুর্গ হিসেবে পরিচিত। তবে সম্মেলনকে কেন্দ্র করে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে উপজেলা বিএনপি’র দুই গ্রুপ। আগামী বৃহস্পতিবার উপজেলা ও পৌর বিএনপি’র পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের লক্ষ্যে সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করেছেন বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির সদস্য ওবায়দুল হক নাছির গ্রুপের অনুসারীরা। অপরদিকে বিএনপি’র চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক মন্ত্রী লুৎফর রহমান খান আজাদ গ্রুপের নেতাকর্মীরা এ সম্মেলন প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছেন। পাল্টা সম্মেলনের ডাক দিয়েছেন তারা। ফলে উপজেলাজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পাল্টাপাল্টি এই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ঘাটাইল বিএনপি’র মধ্যে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। যেকোনো সময় উভয় গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে।
ঘাটাইল পৌর বিএনপি’র সদ্য বিদায়ী সভাপতি সাবেক পৌর মেয়র মঞ্জুরুল হক মঞ্জু বলেন, দুঃসময়ে যারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয় ছিলেন তাদের অবজ্ঞা করে দলকে যারা এড়িয়ে চলেছেন তাদের হাতে নেতৃত্ব দেয়া হয়েছে। ফলে দলের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ না করেও দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ পাওয়ার রেওয়াজ চালু হলো। সদ্য বিদায়ী উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আ.খ.ম. রেজাউল করিম বলেন, জেলা বিএনপি’র উচিত ছিল ত্যাগী ও যোগ্য নেতাদের দিয়ে কমিটি করা।
দলীয় কর্মসূচিতে অংশ না নিয়ে যারা পদ পেয়েছেন তাদেরকে ঘাটাইলের মানুষ চেনে না। এরা লিয়াজোঁ রাজনীতির মাস্টারমাইন্ড হিসেবে পরিচিত। লুৎফর রহমান খান আজাদের সঙ্গে সমন্বয় ছাড়া ঘাটাইলের বিএনপি’র সংকট সমাধান হবে না। ঘাটাইল পৌর বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন ধলা বলেন, কেন্দ্রের দোহাই দিয়ে নাছির যে কমিটিকে নিয়ে সম্মেলনের ডাক দিয়েছেন বিএনপি’র তৃণমূলের নেতাকর্মীদের নিয়ে সেটা প্রতিহত করে আজাদ খানের নেতৃত্বে ঘাটাইল বিএনপি ও পৌর বিএনপি’র পাল্টা নতুন কমিটি হবে। ইতিমধ্যেই আমরাও সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করেছি। উত্তরে দেউলাবাড়ী ইউনিয়ন, দক্ষিণে দিগড় ইউনিয়ন, পশ্চিমে জামুরীয়া ইউনিয়ন এবং পূর্বে পৌরসভার শেষ অংশে ঝড়কা পর্যন্ত আমাদের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষদের সঙ্গে নিয়ে বিশাল এলাকাজুড়ে আমরাও সম্মেলনের প্রস্তুতি নিয়েছি। আমরা সংবাদ পেয়েছি সম্মেলনের দিন বিভিন্ন উপজেলা থেকে লোকজন ভাড়া করে ঘাটাইলে এনে বিশৃঙ্খলা করার পাঁয়তারা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সাবেক ছাত্রনেতা মো. শামীম মিয়া বলেন, ঘাটাইল বিএনপিতে দুষ্ট লোকেরা নষ্ট রাজনীতির চর্চা করে দলের সকল পর্যায়ের সিনিয়র নেতাদের মাইনাস করে একনায়কতন্ত্র কায়েম করেছে। ঘোষিত কমিটিতে ৫-৭ জন সিনিয়র নেতাদের নিয়ে কমিটি সমন্বয় করলে আজ এমন দুর্দিন আসতো না। এদিকে সম্মেলনরে প্রস্তুতি নিয়ে সদ্য ঘোষিত উপজেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব বেলাল হোসেন বলেন, আমরা জেলা ও কেন্দ্রের নির্দেশ মোতাবেক পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠণের লক্ষ্যে সব রকমের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। বিএনপি’র অপর একটি গ্রুপও সম্মেলনের ডাক দিয়েছে। কোনো রক্তক্ষয়ী সংঘাত ও সংঘর্ষের সম্ভাবনা আছে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমাদের গায়ে পড়ে কারও সঙ্গে সংঘাতের ইচ্ছে নেই। কেউ যদি বুকের সঙ্গে বুক দিয়ে ধাক্কা মেরে প্রতিহত করতে চায় তাহলে আমরা প্রতিবাদ, প্রতিরোধ ও প্রতিশোধ নেয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছি।
Leave a Reply