ঘাটাইলে ৩ মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২১, আহত অর্ধশতাধিক মানুষ

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলায় বেড়েই চলেছে সড়ক দুর্ঘটনা। গত তিন মাসে উপজেলার মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কে ঝরেছে ২১টি তাজা প্রাণ। আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক মানুষ।

এসব ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, মোটরবাইক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৪ জন। ট্রাক-সিএনজির মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন ৮ জন। রাস্তা পারাপারের সময় ট্রাক ও বাসের চাকায় পৃষ্ঠ হয়ে নিহত হয়েছেন ৭ জন। এ ছাড়া অটো, মাহেন্দ্র ও হালকা যানবাহনের ধাক্কায় পথচারীসহ নিহত হয়েছেন অন্তত ২ জন। এদের মধ্যে নারী, শিশু ও বৃদ্ধরাও রয়েছেন।

অপরদিকে ট্রাক-সিএনজির মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন ৮ জন। গত ১৯শে নভেম্বর ঘাটাইল-সাগরদীঘি আঞ্চলিক মহাসড়কে ট্রাক-সিএনজির মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত হন ২ জন। নিহতরা হলেন- মধুপুর উপজেলার গোপীনপুর গ্রামের আব্দুল হালিমের ছেলে আমজাদ হোসেন (৪৩) ও গোপালপুর উপজেলার কাঁঠালিয়া গ্রামের সোরহাব উদ্দিনের ছেলে মন্‌জুরুল করিম (৩৮) নিহত। এ ঘটনায় আহত হয় ৩ জন। অপরদিকে একই ঘটনায় নিহত হন শাহাপুর গ্রামের মৃত দরাজ আলী মুন্সির ছেলে হামিদ আলী (৭০)। আহত হন আরও ৪ জন। এছাড়া গত নভেম্বর মাসে ঘাটাইল-মধুপুর উপজেলার মাঝামাঝি স্থানে একই ঘটনায় নিহত হন ৩ জন। নিহতরা হলেন- শেরপুর জেলার শ্রীবর্দী উপজেলার শ্রীবর্দী গ্রামের মিনারের ছেলে রাসেল, জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার মেরুর চর গ্রামের সাইদুর রহমানের স্ত্রী শারমীন ও তার শিশু কন্যা সোহাগী। এ ঘটনায় আহত হন ৫ জন। গত ৬ই জানুয়ারি ঘাটাইল-সাগরদীঘি আঞ্চলিক মহাসড়কের শহর গোপীনপুর চেচুয়া নামক স্থানে সাগরদীঘি গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে আসাদুল ইসলাম (২২) ও শহর গোপীনপুর গ্রামের হারুন মুন্সীর ছেলে ফরিদ উদ্দিন নিহত হয়। এ সময় আহত হয় আরও ২ জন। এ ছাড়াও রাস্তা পারাপারের সময় ট্রাক ও বাসের চাকায় পৃষ্ঠ হয়ে নিহত হয়েছেন ৭ জন। গত ৬ই জানুয়ারি টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দেউলাবাড়ি নামক স্থানে রাস্তা পারাপারের সময় ট্রাকের চাকায় পৃষ্ঠ হয়ে ঝুনকাইল আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের কৃষি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলামের করুণ মৃত্যু হয়। গত ১৪ই নভেম্বর টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাকুটিয়া বটতলী নামক স্থানে বিনিময় পরিবহনের একটি বাস গভীর রাতে একটি অটোরিকশার উপর দিয়ে উঠিয়ে দিলে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় ২ জন। নিহতরা হলেন- রক্তিপাড়া নয়াপাড়া গ্রামের মৃত আবুল কাশেমের ছেলে সাইদুর রহমান (৪৫) ও গাংগাইর পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত মোকছেদ আলীর মেয়ে নাছিমা বেগম। এ ঘটনায় মারাত্মক আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করছেন ৩ জন। এছাড়া গত জানুয়ারি মাসে রাস্তা পারাপারের সময় নিহত হন পাকুটিয়া খালপাড়া গ্রামের শুকুর মাহামুদ (৫২)। একই মাসে এক অন্ধ মহিলা পাকুটিয়া বটতলী সংলগ্ন ফুলহারা নামক স্থানে নিহত হওয়াসহ আরও অন্তত ২ জনের করুণ মৃত্যু হয়েছে। এসব নিহতদের পাশাপাশি মারাত্মক আহত হয়ে জীবনযাপন করছেন কমপক্ষে ২৭জন মানুষ। যাদের মধ্যে মারাত্মক আহত হয়ে চিরদিনের মতো পঙ্গুত্ব বরণ করছেন পোড়াবাড়ি গ্রামের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সেতু এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. সালামত আলী খানসহ রাসেল, তোতা, হাবিব, মনসুর, বেলায়েত, নূরুল ইসলামসহ অসংখ্য মানুষ।

অপরদিকে গত ৯ই জানুয়ারি একটি মালবাহী ট্রাক ক্যান্টনমেন্ট মোড় এলাকায় ৩৩ হাজার ক্ষমতা সম্পন্ন বৈদ্যুতিক লাইনের ৩টি খুঁটি উপড়ে মারাত্মক দূর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পায় ঘাটাইল ক্যান্টনমেন্টসহ গোটা উপজেলার মানুষ। এ সময় বিদ্যুতের বড় ২টি ট্যান্সফরমার ভেঙে গেলে প্রায় ২৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে। এছাড়া গত ১৮ই জানুয়ারি ভোররাতে মধুপুরগামী একটি পণ্যবাহী ট্রাক পোড়াবাড়ি মাদ্রাসা সংলগ্ন মিন্টু ভূঁইয়ার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ঢুকে পড়ে ৩ লক্ষাধিক টাকার মালামাল ক্ষতিসহ দোকানটি গুড়িয়ে দেয়। এর আগে ঘাটাইল বাস স্টেশন এলাকায় গভীর রাতে হোটেল তাজমহলের ভিতরে ট্রাক ঢুকে প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্ষতিসাধনসহ হোটেলটির সামনের অংশ গুড়িয়ে দেয়। এছাড়াও গত ১০ই ফেব্রুয়ারি একটি লোহাড় রড ভর্তি ট্রাক পোড়াবাড়ির যাত্রী ছাউনির ভেতর ঢুকে পড়লে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ বিভাগের আরো সংবাদ
Share via
Copy link
Powered by Social Snap