নাগরপুরে টেক্সটাইল ও স্পিনিং মিলের পরিত্যক্ত প্লাষ্টিক দিয়ে তৈরী হচ্ছে হস্তশিল্পে

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের নাগরপুরে টেক্সটাইল ও স্পিনিং মিলের পরিত্যক্ত প্লাষ্টিক জাতীয় ওয়ান টাইম বেল্ট দিয়ে হস্তশিল্পে তৈরী হচ্ছে ধানসহ বিভিন্ন ফসল সংরক্ষনের ডোল কিংবা বেড়ী তৈরী হচ্ছে। প্লাষ্টিকের তৈরী হলেও দেখতে বাঁশ ও বেতের তৈরী মনে হয় এ পণ্যটি। গ্রামীণ জনপদের নারী-পুরুষ সামান্য প্রশিক্ষন নিয়ে তৈরী করছেন এমন পণ্য। তাদের তৈরী এ পণ্যটি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। এতে করে তৈরী হয়েছে ব্যাপক কর্মসংস্থানের।

জেলার প্রায় প্রতিটি অঞ্চলেই আমন ধান কাটার মহোৎসব শেষ পর্যায়ে। কষ্টার্জিত এ ফসল ভালভাবে সংরক্ষণে কৃষকের চিন্তার শেষ নেই। তাই এ ধান সংরক্ষণ করার জন্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ বাঁশ-বেত দিয়ে তৈরী বিভিন্ন ধরণের ডোল কিংবা বেড়ী তৈরী করে থাকেন। বিভিন্ন অঞ্চলে শুধু বাঁশ-বেত দিয়ে ডোল কিংবা বেড়ী তৈরী হলেও টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার বেকড়া ও গয়হাটা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে এটি তৈরী হচ্ছে টেক্সটাইল ও স্পিনিং মিলের পরিত্যক্ত প্লাষ্টিক জাতীয় ওয়ান টাইম বেল্ট থেকে। নাগরপুরের বিভিন্ন গ্রামে গড়ে উঠেছে একাধিক কারখানা। কারখানার মালিকরা শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন কারখানা থেকে কিনে নিয়ে আসেন পরিত্যক্ত প্লাষ্টিক জাতীয় ওয়ান টাইম বেল্ট। এই প্লাষ্টিক দিয়ে গ্রামীণ নারী-পুরুষরা মিলে তৈরী করেন ডোল কিংবা বেড়ী। সারাদেশেই চাহিদা রয়েছে এ পণ্যের। স্থানীয় হাট-বাজার ছাড়াও কারখানা থেকে খুচরা ও পাইকারী বিক্রি হয় এ পণ্য। ধান কাটার মৌসুমে ডোল/বেড়ী বেশী তৈরী হলেও বছরের অন্যান্য সময়ে কারখানার পরিত্যক্ত প্লাষ্টিক জাতীয় ওয়ান টাইম বেল্ট দিয়ে কারিগররা তৈরী করেন ঘরের সিলিং, বেড়াসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র।

ব্যাপক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে এ শিল্পকে ঘিরে। এ ডোল/বেড়ীতেই জীবিকা নির্বাহ করছে স্থানীয় বহু পরিবার। মাত্র কয়েক বছর আগেও এলাকার পুরুষরা বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত থাকলেও নারীরা ছিলেন বেকার। নিজ বাড়ির গৃহস্থালী কাজ করেই তাদের সময় কাটতো। এর ফলে সংসারে অভাব-অনটন লেগেই থাকতো। তবে, বর্তমানে এ চিত্র পাল্টেছে। নারী-পুরুষ উভয়েই প্লাষ্টিক দিয়ে তৈরী করছেন ডোল/বেড়ী। এখন সচ্ছলতা এসেছে তাদের সংসারে। চাহিদা বেশী থাকলেও অর্থের অভাবে পর্যাপ্ত পরিমাণ ডোল/বেড়ী সরবরাহ করতে পারছেন না এখানকার কারিগররা। তবে রাষ্ট্রায়াত্ব ব্যাংক কিংবা কোন এনজিও প্রতিষ্ঠান সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করলে হয়তো এ হস্তশিল্পটি আরও সম্প্রসারিত করা সম্ভব হতো বলে দাবি এখানকার কারিগরদের।

টাঙ্গাইল বিসিকের কর্মকর্তা আছাদুজ্জামান আল ফারুক বলেন, এ শিল্পের সাথে জড়িতরা চাইলে বিসিকের পক্ষ থেকে এ শিল্প উদ্যোক্তাদের সহায়তা করা হবে।

টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত-ই-জাহান বলেন, এ শিল্পের সম্পসারণের জন্য উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের সহায়তা করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ বিভাগের আরো সংবাদ
Share via
Copy link
Powered by Social Snap