মধুপুরের প্রথম অনলাইন সংবাদপত্র

শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৫:৪৫ অপরাহ্ন

First Online Newspaper in Madhupur

শিরোনাম :
ভুঞাপুরে হিট‌স্ট্রো‌কে আক্রান্ত হ‌য়ে অসুস্থ্য শিক্ষার্থী সখীপুরে শাল-গজারি বনে এক মাসে ২৫ স্থানে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা নাগরপুরে তিনদিন ব্যাপী খাদ্যভিত্তিক পুষ্টি বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত ঘাটাইলে সংরক্ষিত বনাঞ্চল আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করছে দুর্বৃত্তরা টাংগাইলে নায়ক মান্নার বাসা থেকে ৬ শত ২০ মিটার রাস্তার উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন নাগরপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর রহমানের ইন্তেকাল ঘাটাইলে সড়ক দুর্ঘটনায় এক ব্যক্তি নিহত টাংগাইলে কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন বিতরন নাগরপুরে প্রবাসীকে হত্যার অভিযোগে দুইজন গ্রেফতার মাভিপ্রবিতে বিতর্কে জয়ী বিরোধী দল ‘ভগ্নমনস্কতা’

নায়ক মান্না চলে যাওয়ার ১৬ বছর

সংবাদ দাতার নাম
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ১২১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ নায়ক মান্না চলে যাওয়ার ১৬ বছর। বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় নায়ক মান্না মৃত্যুর ১৬ বছর পরেও দর্শকদের মনের মধ্যে আছেন। মৃত্যুর এতো বছর পরও তার সিনেমাগুলো পছন্দ করেন দর্শকরা। মান্না অভিনীত সিনেমার বিভিন্ন কাট কাট অংশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যবহার করা হয়।

মান্না অভিনীত ‘ত্রাস’ সিনেমাটি ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছিল। কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘আম্মাজান’ সিনেমার গান, অভিনয় দর্শক দীর্ঘদিন মনে রাখবেন। এ ছাড়া প্রচুর হিট সিনেমা উপহার দিয়েছিলেন মান্না।

১৭ ফেব্রুয়ারি নায়ক মান্নার ১৬ তম প্রয়াণ দিবস। ২০০৮ সালের এই দিনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি। মৃত্যুর ১৬ বছর পার হলেও জনপ্রিয়তার এতটুকুও ভাটা পড়েনি এ মহানায়কের।

১৯৬৪ সালে ১৪ এপ্রিল টাঙ্গাইলের কালিহাতীর এলেঙ্গায় জন্মগ্রহণ করেন চিত্রনায়ক মান্না। ছোটবেলা থেকেই অভিনয়ের প্রতি বেশ ঝোঁক ছিল তার।

উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করার পর ঢাকা কলেজে পড়াকালীন ১৯৮৪ সালে তিনি ‘নতুন মুখের সন্ধানে’ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। এ প্রতিযোগিতার মাধ্যমেই রুপালি জগতে পা রাখেন এ অভিনেতা।

মান্না অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘তওবা’ হলেও তার প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমার নাম ‘পাগলী’। তবে দর্শক নজরে পড়েন ১৯৯১ সালে মোস্তফা আনোয়ার পরিচালিত ‘কাসেম মালার প্রেম’ সিনেমায় অভিনয়ের মধ্য দিয়ে।

এরপরই ধীরে ধীরে চলচ্চিত্রে একটি শক্ত অবস্থান গড়ে তোলেন তিনি। কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘দাঙ্গা’ ও ‘ত্রাস’ সিনেমাতে দুর্দান্ত অভিনয় করে মান্না হয়ে ওঠেন পরিচালক-প্রযোজকদের নির্ভরযোগ্য নাম।

মোস্তফা আনোয়ার পরিচালিত ‘অন্ধ প্রেম’, মনতাজুর রহমান আকবর পরিচালিত ‘প্রেম দিওয়ানা’, ‘ডিস্কো ড্যান্সার’, কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘দেশদ্রোহী’ ছবিগুলো ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে তাকে তুমুল জনপ্রিয় করে তোলে।

১৯৯৯ সালে মান্না ‘কে আমার বাবা’, ‘আম্মাজান’, ‘লাল বাদশা’র মতো সুপার-ডুপারহিট সিনেমা দর্শকদের উপহার দিয়েছেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সাড়ে তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি।

অভিনয়, অ্যাকশন, সংলাপ বলার ধরন সবকিছু মিলেই একটা স্বতন্ত্র স্টাইল দাঁড় করেছিলেন তিনি। শুধু অভিনেতা নন, প্রযোজক হিসেবেও মান্না ছিলেন বেশ সফল। তার প্রতিষ্ঠান থেকে ৮টি সিনেমা প্রযোজনা করেন তিনি। সবকটি সিনেমাই ছিল সুপারহিট।

মান্না অভিনয়ের পাশাপাশি কয়েকটি চলচ্চিত্র প্রযোজনাও করেছেন। তিনি কৃতাঞ্জলী চলচ্চিত্র নামে একটি প্রযোজনা সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি লুটতারাজ, স্বামী স্ত্রীর যুদ্ধ, দুই বধু এক স্বামী, আমি জেল থেকে বলছি, পিতা মাতার আমানতসহ মোট আটটি চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেন।

অভিনেতা হিসেবে একবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, তিনবার মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার, পাঁচবার বাচসাস পুরস্কারসহ বিভিন্ন সম্মাননা পেয়েছেন মান্না।

ব্যক্তিগত জীবনে মান্না তার কর্মজীবনের শুরুর দিকের সহ-অভিনেত্রী শেলী কাদেরের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির সিয়াম ইলতিমাস মান্না নামে এক পুত্রসন্তান রয়েছে।

মৃত্যুর কয়েকমাস পর একই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর চিকিৎসকদের অবহেলায় তার মৃত্যু হয়েছে, এমন অভিযোগে তার পরিবারের পক্ষ থেকে ইউনাইটেড হাসপাতালের ছয় চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা করেন তার শ্যালক রেজা কাদের।

২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারি এই মামলার বিচারবিভাগীয় তদন্তে প্রাথমিকভাবে ডাক্তারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত ছয় ডাক্তারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। পরে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ তাদের আট সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের আদেশ দেন।

ওই বছরের ১৬ মার্চ চিকিৎসকরা আত্মসমর্পণ করলে ৫০ হাজার টাকা বন্ডে স্বাক্ষর করে জামিন লাভ করেন।

এরপর ২০০৯ সালের ১৮ অক্টোবর ওই ছয় ডাক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার বিশেষ দায়রা জজ। এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে একটি রিট করেন।

যে মানুষটি রাত অবধি শুটিং করলেন, প্রিয় কর্মস্থল এফডিসি থেকে হাসিমুখে বিদায় নিলেন, সকালবেলা জানা গেল তিনি হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। বিস্মিত হতবাক সবাই। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে লাগল উদ্বেগ উৎকণ্ঠা। লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন মান্না- এমন সংবাদে যে যেভাবে পারলেন ছুটলেন ইউনাইটেড হাসপাতালে।

১৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরবেলা সবাইকে শোকে পাথর করে চিকিৎসকরা জানালেন, মান্না নেই, চলে গেলেন সব বাঁধন ছিঁড়ে। ফিরবেন না আর কোনো দিনই।

এমন দুঃসংবাদের জন্য কেউই প্রস্তুত ছিলেন না। সবার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল।

তারপরের ঘটনাগুলো আজও সবার চোখের সামনে জ্বলজ্বল করে। প্রিয় নায়ক মান্নাকে শেষবারের মতো একনজর দেখার জন্য ভক্তদের সে কী উন্মাদনা। এফডিসিজুড়ে আপনজনদের আহাজারি। বিস্ময়ে হতবাক পুরো জাতি। সবার চোখেমুখে অভিব্যক্তি একটাই, সব শেষ।

মান্না শুধু একজন নায়ক কিংবা অভিনয়শিল্পীই ছিলেন না, তিনি ছিলেন আপাদমস্তক নিবেদিতপ্রাণ একজন সিনেমাপ্রেমী। যার কাজে কর্মে শয়নে স্বপনে ভালো চিন্তায় থাকতো শুধুই চলচ্চিত্র।

কী করলে চলচ্চিত্রের ভালো হবে, মৃত্যুর আগে পর্যন্ত মান্না কেবল সেটাই ভেবেছেন।

দিনরাত শুটিং করার পর যেটুকু সময় পেতেন, আরাম আয়েশ বিশ্রাম ত্যাগ করে মান্না অনেক বেশি সময় চলচ্চিত্রের জন্যই ব্যয় করতেন। তার জীবনে চলচ্চিত্র ছাড়া আর কোনো কিছুই ছিল না।

মান্নার মতো একজন আপাদমস্তক চলচ্চিত্রপ্রেমী, একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্মীকে হারিয়ে গত ১৬ বছর ধরে চলচ্চিত্র শিল্প ধুঁকতে ধুঁকতে শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে।

পর্দায় প্রতিবাদী নায়ক মান্না ছিলেন বাস্তবেও একটি প্রতিবাদী চরিত্র। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করাই ছিল তার স্বভাব। প্রতিবাদই তাকে দর্শক মনে যেমন স্থায়ী আসন দিয়েছিল, তেমনি চলচ্চিত্র শিল্পেও অদ্বিতীয় করে রেখেছে।

দর্শকদের ভালবাসা পাওয়া একজন শিল্পীর জন্য যা সবচেয়ে বড় পাওয়া।

মৃত্যুর পর এফডিসিতে এই মহানায়কের নামে মান্না ডিজিটাল কমপ্লেক্স হিসাবে একটি ভবন নামকরণ করা হয়। এছাড়া তার স্মৃতি স্মরণে এফডিসি নিয়মিত মান্না উৎসব আয়োজন করে থাকে। পাশাপাশি তার জন্ম ও মৃত্যুদিবসে বিভিন্ন টিভি চ্যানেল স্মৃতিচারণমূলক বিভিন্ন অনুষ্ঠান প্রচার করে।

অভিনয়ের মাধ্যমে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে নিজেই একটা ইন্ডাস্ট্রি হয়ে উঠেছিলেন মান্না।

সংবাদ টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
©2024 All rights reserved
Design by: POPULAR HOST BD
themesba-lates1749691102
Verified by MonsterInsights