মধুপুরের প্রথম অনলাইন সংবাদপত্র

সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০২:৩৭ পূর্বাহ্ন

First Online Newspaper in Madhupur

সখীপুরে বংশাই নদীতে সেতু না হওয়ায় ভোগান্তি চরমে

সংবাদ দাতার নাম
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
  • ২৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বংশাই নদীর বড়ইতলা খেয়াঘাটের মাঝি মহাদেব নিজেও খেয়া পারাপার করতে চান না। মহাদেবের পূর্ব পুরুষরা বংশপরম্পরায় বাৎসরিক ২০-৪০ কেজি বা ২০০-৫০০ টাকার বিনিময়ে টাঙ্গাইলের বাসাইল ও সখীপুর উপজেলার বড়ইতলা ঘাটে প্রতিদিন শতশত লোকজন এপার-ওপার আনা নেওয়া করে থাকেন। কিন্তু মহাদেব জীবন সায়াহ্নে এসে নিজের চোখ দিয়ে তার খেয়া পারের ঘাট বড়ইতলায় সেতু দেখে যেতে চান।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভর দুপুরে নদীর ঘাটে প্রতিবেদকের সাথে মহাদেবের দেখা হয়। এ সময় তিনি আরও জানান, এই ঘাট কখনো ইজারা হয়নি। স্থানীয় লোকজন সবাই কম-বেশি সম্পর্কিত। অর্থ নয় অনেকটা সম্পর্কের টানে দুইপারের লোকজন, কোমলমতি শিশু, স্কুল -কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের বছরের পর বছর পারাপার করছি। মহাদেব নিজে পড়াশোনা না করলেও তার সন্তানদিকে পড়াশোনা করাচ্ছেন। তারা আর এ পেশায় আসতে আগ্রহী নয়। তাছাড়া রাতের বেলায় মহাদেব তেমন একটা চোখে দেখেন না। গতবছর নদী সাতঁরে পার হওয়ার সময় দু’জনের মৃত্যুেতে মহাদেব ভীষণ কষ্ট পেয়েছেন। নদীর পশ্চিম তীরে গিলাবাড়ী, সুর্না, বার্থা। অন্যদিকে পূর্ব তীরে দাড়িয়াপুর, আকন্দপাড়া, আবাদি বাজারসহ দুইপারের কয়েকটি গ্রামের প্রায় লক্ষাধিক লোকের বসবাস।

নদীর পূর্ব পাড়ের বাসিন্দা শাহিন মিয়া জানান, আমাদের বড়ই ঘাটের ১০০-১২০ মিটার প্রশ্বস্ত নদীতে সেতু না থাকায় ভোগান্তি চরমে। নদীর ওই পাড়ে আমার মতো অনেকের আবাদি জমি আছে। পূর্ব পাড়ের ফসলি ক্ষেত ও উৎপাদিত শস্য ঘরে তোলার বাড়তি খরচ হয়। আবার পশ্চিম পাড়েও অনেকের আবাদি জমি আছে। নদীর পশ্চিম তীরের বাসিন্দা আবুল হোসেন জানায়, সেতু না থাকায় গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়। তিনি প্রতিবেদককে দেখে এগিয়ে এসে বলেন, আমরা আর কত কষ্ট কইরা নদী পার হমু। আমাগো কষ্ট কি আর শেষ হইবো না? দাড়িয়াপুর গামের শাহাবুদ্দিন আহমদ উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার বলেন, নদী পার হয়ে স্কুল যেতে মনে হলেই সবার মনে ভীতি কাজ করে। এ ঘাটে আমাদের পারাপারের একমাত্র ভরসা শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকো আর ভরা বর্ষায় নৌকা।

এ বিষয়ে দাড়িয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম শামীম বলেন, বড়ইতলা ঘাট জেলা সদরের সাথে সবচেয়ে সহজ সংযোগ সড়ক। এই ঘাটে সেতু হলে দুই পাড়ের মানুষের হাঁট-বাজার, চিকিৎসা, বছরে এপার ফালু চাঁন, ওপারে নব্বেছ পীর সাহেবের মেলায় লাখো মানুষের যাতায়াতসহ অন্যান্য জরুরি সেবা সহজতর হবে। এই ঘাটে সেতু নির্মাণ দুই উপজেলার মানুষের প্রানের দাবি।

সখীপুর উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল বাছেদ মিয়া জানান, ওই ঘাটে সেতু নির্মাণে প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। পাশ হলে ব্রিজের কাজ শুরু করা হবে।

এ ব্যাপারে বাসাইল-সখীপুর আসনের সংসদ সদস্য অনুপম শাজাহান জয় বলেন, নদীর দুইপাড়ের মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে ইতিমধ্যে বড়ইতলা ঘাটের সেতু নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন পেলে খুব শীগ্রই নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।

সংবাদ টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
©2024 All rights reserved
Design by: POPULAR HOST BD
themesba-lates1749691102
Verified by MonsterInsights