মধুপুরের প্রথম অনলাইন সংবাদপত্র

শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২:৪৩ অপরাহ্ন

First Online Newspaper in Madhupur

শিরোনাম :
টাংগাইলে আজ কারফিউ সকাল ৭টা হতে সন্ধা ৭টা পর্যন্ত শিথিল কোরিয়ান শিক্ষার্থীদের মাভাবিপ্রবি পরিদর্শন টাংগাইলে কারফিউ শিথিল করায় জনজীবন স্বাভাবিক হয়েছে মির্জাপুরে বিয়ের দাবিতে আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে কলেজছাত্রীর অবস্থান টাংগাইলে আন্দোলনকারীদের জ্বালাও-পোড়াও হামলা-ভাঙচুর মামলায় গ্রেপ্তার ১৭৫ কলম্বিয়াকে হারিয়ে কোপার সর্বোচ্চ ১৬ বার চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা ঘাটাইলের সাগরদীঘি ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ বাসাইলে বন্যা ও নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ মির্জাপুরে সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ এর ৫ম মৃত্যু বার্ষিকী পালন টাংগাইলে কোট সংস্কারের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান

টাংগাইলে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জীবন রক্ষাকারী ওষুধের দাম

সংবাদ দাতার নাম
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ৯ জুন, ২০২৪
  • ৩২ বার পড়া হয়েছে
ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জীবন রক্ষাকারী ওষুধের দাম। গত দুই মাসে ৫০ ধরনের ওষুধের দাম বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে বেশি বাড়ানো হয়েছে অ্যান্টিবায়োটিক ট্যাবলেট, ডায়াবেটিসের রোগীদের ইনস্যুলিন ও ইনজেকশনের দাম। এছাড়া হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যা, হাঁপানিসহ বিভিন্ন ওষুধ এবং ভিটামিনের দামও বেড়েছে। বাদ যায়নি জ্বর-সর্দির ট্যাবলেট-ক্যাপসুল, বিভিন্ন অসুখের সিরাপও। দাম বৃদ্ধির এ হার ২০ থেকে সর্বোচ্চ ১৪০ শতাংশ পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহেও দাম বাড়ানো হয়েছে বেশ কয়েকটি ওষুধের।

মানুষের জীবন রক্ষাকারী ওষুধের দাম বাড়ানোর হার অস্বাভাবিক। এই অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির অজুহাত হিসেবে কোম্পানিগুলো ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন ও আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়াকে দায়ী করছে। এ সময় গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধিও উৎপাদন খরচ বাড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন ওষুধ কোম্পানিগুলোর শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা। বিভিন্ন কোম্পানির উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি এবং বিক্রি থেকে আয়ের হিসাব পর্যালোচনা করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

পর্যালোচনায় আরো দেখা গেছে, গত (২ মার্চ) একটি শীর্ষ কোম্পানি তাদের উৎপাদিত ওষুধগুলোর মধ্যে ২৪টির দাম বাড়িয়েছে। এর মধ্যে ক্যাপসুল ট্রিওসিম ২০০-এর দাম প্রতিটি ২৮ দশমিক ৫ শতাংশ বা ১০ টাকা বাড়িয়ে ৪৫ টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া কোম্পানির উৎপাদিত ট্যাবলেট মনোকাস্ট, ক্যাপসুল নার্ভালিন, ট্যাবলেট রিলেনটাস, ফ্যামোম্যাক্সসহ বিভিন্ন ওষুধের দাম প্রায় ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। ব্রঙ্কিয়াল অ্যাজমাসহ ফুসফুসের রোগে ব্যবহার হয় এ কোম্পানির ট্যাবলেট ফিক্সোলিন। ৪০০ মিলিগ্রামের এই ওষুধের প্রতি পিসের দাম গত ফেব্রুয়ারি মাসেও ৫ টাকা ছিল। কিন্তু একধাক্কায় এর দাম ১৪০ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১২ টাকা। গত ফেব্রুয়ারিতে আরেকটি কোম্পানির উৎপাদিত ১১টি ওষুধের দাম বাড়ানো হয়েছে। তাদের ওষুধের দাম ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এর মধ্যে ৩০ পিসের এরিস্টোগোল্ড ট্যাবলেটের প্যাকেটের দাম ২৭০ থেকে ৩৯০, স্টাফেন ২৫০ থেকে ৪০০, অ্যারোডিন সলিউশন ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা করা হয়েছে। এর আগেও কোম্পানিটি বিভিন্ন সময়ে তাদের ব্র্যান্ডের ওষুধের দাম ব্যাপকহারে বাড়িয়েছে। একইভাবে সাম্প্রতিক সময়ে একটি শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি তাদের উৎপাদিত এমব্রোক্স, সেফোটিল, সেফ-৩, সেফট্রোন, ক্লোফেনাকসহ ২৩টি ব্র্যান্ডের ওষুধের দাম বাড়িয়েছে।

বিভিন্ন কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, এক বছরে ওষুধের কাঁচামালের দাম গড়ে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ বেড়েছে। তবে গত দুই বছরে ডলার, কাঁচামাল ও জ্বালানির দাম যতটা না বেড়েছে, এর চেয়ে অনেক বেশি বেড়েছে তাদের উৎপাদিত ওষুধের দাম। ওষুধের দাম ব্যাপকহারে বেড়ে যাওয়ায় এ খাতে জনসাধারণের ব্যয়ও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের এক জরিপ অনুযায়ী, চিকিৎসা ব্যয়ের ৬৪ শতাংশই এখন ওষুধের পেছনে খরচ হচ্ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর লাগামহীন দর বাড়ার কারণে নিম্নআয়ের অনেকেই জরুরি প্রয়োজন না হলে ওষুধ কিনছে না। পর্যালোচনায় দেখা গেছে, করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের প্রায় সব খাতের ব্যবসা-বাণিজ্য অনেক চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামাল ও জ্বালানির দাম বাড়ায় সব কোম্পানির উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। অনেক কোম্পানির মুনাফা ব্যাপকহারে কমে গেছে, কোনো কোনো খাতের কোম্পানি পড়েছে লোকসানে। তবে এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ওষুধ উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো। দু-একটি ব্যতিক্রম বাদ দিলে প্রায় সব ওষুধ কোম্পানি দেশের অর্থনৈতিক অস্থিরতার এমন সময়ে উচ্চ মুনাফা বজায় রেখেছে।

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দেশে প্রায় দেড় হাজারের বেশি জীবনরক্ষাকারী ২৭ হাজারের বেশি ব্র্যান্ডের ওষুধ উৎপাদন হয়। এর মধ্যে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকায় আছে মাত্র ২১৯টি। এর মধ্যে ১১৭টি ওষুধের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করে দেয় সরকার।

১৯৮২ সালের ঔষধ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশের ১১ (১) ধারায় স্পষ্ট বলা আছে, সরকার গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে ওষুধের দাম নির্ধারণ করতে পারবে। অথচ এই নিয়মের তোয়াক্কা না করে ২০২২ সালে কোনো ধরনের পূর্বঘোষণা ছাড়া শুধু ওষুধ কোম্পানিগুলোর সুপারিশে ২০টি জেনেরিকের ৫৩টি ব্র্যান্ডের ওষুধের দাম বাড়িয়ে দেয় ঔষধ প্রশাসন। সে সময় প্যারাসিটামল এবং হৃদরোগ, ব্যথানাশক ও গ্যাস্ট্রিকের ওষুধের দাম ৫০ থেকে ১৩৪ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। সেই দাম বাড়ার রেশ না কাটতেই গত বছরের মে মাসে আবার শীর্ষ ছয় প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত ২৩৪টি জীবনরক্ষাকারী ওষুধের দাম ১০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

ওষুধ কোম্পানিগুলোর একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, এক বছরে টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে প্রায় ২১ শতাংশ। আন্তর্জাতিক বাজারে এক বছরে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ বেড়েছে কাঁচামালের (অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যালস ইনগ্রেডিয়েন্টস- এপিআই) দাম। বিগত ২০২২ সালের পর থেকে গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিনবার ১৫ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে বিদ্যুতের দাম। ডিজেলের দাম বেড়েছে ৩৭ শতাংশ। বিপণনের খরচ বাড়ার পাশাপাশি কর্মচারীদের বেতন-ভাতাও বেড়েছে। এসব কারণে উৎপাদন ব্যয় উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে গেছে। ওষুধের দাম বাড়ার এটিই প্রধান কারণ।

পর্যালোচনায় দেখা গেছে, উৎপাদন ব্যয় বাড়লেও বিক্রি থেকে আয় বাড়ায় ওষুধ কোম্পানিগুলো উচ্চ মুনাফা বজায় রেখেছে। ২০২৩-২৪ হিসাব বছরের প্রথমার্ধে শীর্ষ এক ওষুধ কোম্পানির উৎপাদন ব্যয় প্রতিষ্ঠানটির বিক্রি থেকে আয়ের ৫০ দশমিক ৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৪৭ দশমিক ৭ শতাংশ। চলতি অর্থ বছরের প্রথমার্ধে আরেকটি শীর্ষস্থানীয় কোম্পানির উৎপাদন ব্যয় বিক্রি থেকে আয়ের ৫৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা আগের বছরের প্রথমার্ধেও একই ছিল।

সংবাদ টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
©2024 All rights reserved
Design by: POPULAR HOST BD
themesba-lates1749691102
Verified by MonsterInsights