নিজস্ব প্রতিনিধিঃ জয়দেবপুর-বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতুর রেল সংযোগ সড়কের ৫০ নম্বর সেতুর নিচ দিয়ে মাটিভর্তি ভারী ডাম্প ট্রাক চলাচল করছে। সেতুটি রক্ষায় রেলওয়ে বিভাগ স্লিপার পুঁতে রাস্তা বন্ধ করে এবং বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েও বন্ধ করতে পারছে না মাটি পরিবহন। সেতুটির নিচ থেকে স্লিপার তুলে আগের মতোই চলছে মাটিভর্তি ডাম্প ট্রাক।
জানা গেছে, টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার বংশাই নদীর যোগীরকোফা-রশিদ দেওহাটা-কদিম দেওহাটা এলাকায় প্রায় ৪৩ একর ভূমিতে সরকারি বালুমহাল রয়েছে।
একটি চক্র প্রতিবছর ওই বালুমহাল থেকে লাখ লাখ টাকার বালু লুট করে বিক্রি করে। এ বছরও তারা রাতে বালু তুলে নিয়ে বিক্রি শুরু করেছে। বালুভর্তি শত শত ট্রাক ওই সেতুর নিচ দিয়ে চলাচল করায় সেতুটি ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।
সেতুটির ঝুঁকি এড়াতে রেলওয়ের পাকশী বিভাগের বিভাগীয় প্রকৌশলী-২ বীরবল মণ্ডল রাস্তাটি বন্ধের নির্দেশ দেন।
তাঁর নির্দেশে গত ২৭ জানুয়ারি তিনটি স্লিপার পুঁতে অবৈধ রাস্তাটি বন্ধ করে রাতে আনসার সদস্যদের দিয়ে পাহারার ব্যবস্থা করা হয়।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাসুদুর রহমান সরকারি মহালে বালু কাটার অপরাধে দুজনের কাছ থেকে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন। ওই রাত থেকেই মাটি ব্যবসায়ীরা স্লিপারগুলো তুলে ফেলে আবার অবৈধ ব্যবসা শুরু করে।
আনসার সদস্যরা এতে বাধা দিলে তাঁদের নানাভাবে হুমকি দেওয়া হয়।
বালুবাহী ট্রাক চলাচল বন্ধ করতে ৫ ফেব্রুয়ারি জয়দেবপুরের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী এম রিয়াসাদ ইসলাম রেলওয়ের কমলাপুর থানার ওসি বরাবর একটি পত্র দেন।
এ ছাড়া রেলওয়ের বিভাগীয় প্রকৌশলী-২ বীরবল মণ্ডল একই দিন ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার, টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার এবং রেলওয়ের পাকশী বিভাগের বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা বরাবর লিখিতভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পত্র দেন।
জয়দেবপুরের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, রেল সেতুর নিচ দিয়ে প্রতি রাতে মাটিভর্তি ৫০ থেকে ৬০ টন ওজনের ডাম্প ট্রাক চলাচল করছে। এতে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যেকোনো সময় রেল সড়ক ও সেতুর ক্ষতি হয়ে বড় ধরনের ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
রেলওয়ের পাকশী বিভাগের বিভাগীয় প্রকৌশলী বীরবল মণ্ডল বলেন, রেলওয়ের সম্পদ রক্ষার দায়িত্ব সব নাাগরিকের। রেল সেতুর নিচ দিয়ে ভারী ডাম্প ট্রাক চলাচল করায় স্লিপার পুঁতে রাস্তা বন্ধ এবং আনসার সদস্য দিয়ে পাহারার ব্যবস্থা করা হয়।
কিন্তু তারা স্লিপার তুলে মাটি নিচ্ছে, আনসার সদস্যরা বাধা দেওয়ায় হুমকিও দিয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
রেলওয়ের ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন বলেন, এ বিষয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ মামলা করলে আইনি সহায়তা দেওয়া হবে।
রেলওয়ের পত্র এখনো পাননি বলে জানান টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক কায়ছারুল ইসলাম। তিনি ফোনে বলেন, প্রতিদিন মির্জাপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান হচ্ছে। রেলওয়ের পত্র পাওয়ামাত্রই আইনগত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।