মধুপুরের প্রথম অনলাইন সংবাদপত্র

বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৮:৪৬ অপরাহ্ন

First Online Newspaper in Madhupur

শিরোনাম :
ভুঞাপুরে হিট‌স্ট্রো‌কে আক্রান্ত হ‌য়ে অসুস্থ্য শিক্ষার্থী সখীপুরে শাল-গজারি বনে এক মাসে ২৫ স্থানে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা নাগরপুরে তিনদিন ব্যাপী খাদ্যভিত্তিক পুষ্টি বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত ঘাটাইলে সংরক্ষিত বনাঞ্চল আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করছে দুর্বৃত্তরা টাংগাইলে নায়ক মান্নার বাসা থেকে ৬ শত ২০ মিটার রাস্তার উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন নাগরপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর রহমানের ইন্তেকাল ঘাটাইলে সড়ক দুর্ঘটনায় এক ব্যক্তি নিহত টাংগাইলে কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন বিতরন নাগরপুরে প্রবাসীকে হত্যার অভিযোগে দুইজন গ্রেফতার মাভিপ্রবিতে বিতর্কে জয়ী বিরোধী দল ‘ভগ্নমনস্কতা’

গোপালপুরের শিক্ষক মরিয়ম খাতুন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অডিট পার্টির কাছে অসহায়

সংবাদ দাতার নাম
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ১০৩ বার পড়া হয়েছে

জয়নাল আবেদীনঃ মরিয়ম খাতুন গোপালপুর উপজেলার চাতুটিয়া এ এম মুজিবুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিষয়ের সহকারী শিক্ষক। ২০০২ সালে তিনি এমপিওভুক্ত হন। তার ইনডেস্ক নম্বর ৪৮৮১০২। মেধাবী শিক্ষক হিসেবে তার যথেষ্ট পরিচিতিও রয়েছে। কিন্তু শিক্ষা অধিদপ্তরের একটি বিতর্কিত নিরীক্ষা প্রতিবেদনের কারণে জাল সনদের বানোয়াট অভিযোগে টানা ৭ বছর ধরে তিনি চরম হয়রানির শিকার হচ্ছেন। সম্প্রতি তার বেতন-ভাতা বন্ধ করে দেওয়ায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন তিনি।

জানা যায়, ২০০১ সালে তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বগুড়ার নট্রামস থেকে কম্পিউটার সাইন্স ও টেকনোলজি বিষয়ে ডিপ্লোমা লাভ করেন। সনদ যাচাই-বাছাইয়ের পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধির সুপারিশে নিয়োগপত্র প্রদান ও এমপিওভুক্ত হন। ২০০২ সালের ২৬ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয় সারাদেশে কম্পিউটার বিষয়ে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পাওয়া ২৮৬ জনের জাল সনদপত্র অভিযোগ যাচাইয়ের জন্য বগুড়ার নট্রামসকে নির্দেশ দেয়। নট্রামস তদন্ত শেষে ২০০৩ সালের জুন মাসে মন্ত্রণালয়ে যে তালিকা পাঠান তাতে ৭৭ জনের সনদ জাল ধরা পড়ে। কিন্তু মরিয়ম খাতুনসহ অবশিষ্টদের সনদ বৈধ বলে জানানো হয়।

এ এম মজিবর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আবু মো, শফিউল আলম জানান, ২০১৫ সালের ১৫ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের এক জন পরিদর্শক স্কুল পরিদর্শনে আসেন। তিনি মরিয়ম খাতুনের শিক্ষা সনদ জাল ঘোষণা দিয়ে সরকারি বেতন-ভাতার ১২ লাখ টাকা ফেরত দেওয়ার চাপ দেন। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ নট্রামস ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যাচাই-বাছাই তালিকার রেফারেন্স দেখিয়ে জাল সনদের অভিযোগ চ্যালেঞ্জ করেন।

পরবর্তীতে ওই পরিদর্শক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অডিট আপত্তিতে জানান যে, মরিয়ম খাতুনের সনদ জাল এবং তার যাবতীয় বেতন-ভাতা ফেরতযোগ্য। এই পরিস্থিতিতে মাউসি টাঙ্গাইল জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসকে জাল সনদের বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন।

সাবেক জেলা শিক্ষা অফিসার মো. শফিউল্লাহ নট্রামসের মাধ্যমে যাচাই শেষে ২০১৬ সালের ১৯ এপ্রিল এক তদন্ত প্রতিবেদনে মাউসির মহাপরিচালকে জানান, মরিয়ম খাতুনের সনদটি জাল নয়। কিন্তু এতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সন্দেহ দূর হয়নি। ৩ মাস পুনরায় টাঙ্গাইল জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসকে পুনঃতদন্ত করে জাল সনদের বিষয়ে রিপোর্ট দিতে বলা হয়। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (সাবেক) লায়লা খানম সনদটি জাল নয় বলে জানান। কিন্তু এতেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তর সন্তুষ্ট হয়নি।

অবশেষে মন্ত্রণালয় ২০১৬ সালে পুনরায় নট্রামসকে মরিয়ম খাতুনের সনদ যাচাইয়ের নির্দেশ দেয়। নট্রামস পুনরায় তদন্ত প্রতিবেদনে মরিয়ম খাতুনের সনদ সঠিক বলে জানায়। কিন্তু এবারও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সন্দেহ শেষ হয়নি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিরীক্ষা অধিদপ্তরের ঐ কর্মকর্তা পুনরায় কলকাঠি নাড়তে থাকেন।

এমতাবস্থায় ২০১৭ সালে কম্পিউটার বিষয়ে জাল সনদ সন্দেহে সারা দেশের যে ৩১ জন সহকারী শিক্ষকের তালিকা যাচাইয়ের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনে পাঠানো হয়, তাতে মরিয়ম খাতুনের নাম পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। দুর্নীতি দমন কমিশন ২০১৭ সালের ৭ জুলাই নট্রামসের রেফারেন্স দিয়ে অনুসন্ধান রিপোর্টে ১৫ জনের সনদ জাল এবং মরিয়ম খাতুনসহ ১৬ জনের সনদ বৈধ বলে অবহিত করে।

একইসঙ্গে মরিয়ম খাতুনসহ ১৬ জনকে জাল সনদে চাকরি করার অভিযোগ থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করে। কিন্তু দুর্নীতি দমন কমিশনের ঐ সুপারিশ শিক্ষা মন্ত্রণালয় রাখেনি। গত অক্টোবর মাসে জাল সনদের অভিযোগে মরিয়ম খাতুনের এমপিও বন্ধ এবং উত্তোলিত বেতন-ভাতার সব টাকা পরিশোধ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অডিট পার্টি অনেক পাওয়ারফুল। তাদের কাছে বেসরকারি শিক্ষকরা যে কতটা অসহায় মরিয়ম খাতুন তার একটি নমুনা। শিক্ষক মরিয়ম খাতুন অভিযোগ করেন, স্বল্প বেতনের চাকরিতে এমনিতেই সংসার চলে না। বছরের পর বছর টাঙ্গাইল থেকে বগুড়া আবার বগুড়া থেকে ঢাকা বা টাঙ্গাইলের নানা অফিসে ঘুরতে ঘুরতে তিনি এখন পেরেশান। এমপিও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অর্থসংকটে পরিবার- পরিজন নিয়ে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। দুই সন্তানের লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম। তিনি হয়রানি থেকে রেহাই পেতে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। গোপালপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জুলফিকার হায়দার জানান, হয়রানি বন্ধের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক নট্রামসের এক কর্মকর্তা জানান, একই সনদ এতবার কেন যাচাই করতে হয় তা আমাদের বোধগম্য নয়।

সুত্র-ইত্তেফাক

সংবাদ টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
©2024 All rights reserved
Design by: POPULAR HOST BD
themesba-lates1749691102
Verified by MonsterInsights