নিজস্ব প্রতিনিধিঃ হলুদ ও বেগুনী রঙের ফুলকপি চাষ করে সফল হয়েছেন কৃষক আশরাফুল ইসলাম (৩৫)। বাহারি রঙের ফুলকপি চাষ করে এলাকায় সাড়া ফেলেছেন তিনি। এ ফুলকপি দেখতে ও কিনতে ভিড় করছেন ক্রেতারা। আর এসব ফুলকপি বিক্রি করে লাভবানও হয়েছেন আশরাফুল।
কৃষক আশরাফুল টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার পাঁচটিকরী গ্রামের আকবর হোসেন তালুকদারে ছেলে। তিনি বারোমাসি সবজি চাষ করে আসছেন। এ মৌসুমে তাকে রঙিন ফুলকপি চাষে পরামর্শ দেন উপজেলার পাঁচটিকরী কৃষি ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা তৌকির আহমেদ। তিনি উন্নতজাতের রঙিন ফুলকপির বীজ সংগ্রহ করে দেন আশরাফুলকে।
কৃষক আশরাফুল বলেন, বাড়ি সংলগ্ন ৭৫ শতক জমিতে আমি যখন রঙিন ফুলকপি চাষ করি, তখন অনেকেই বলেছিলেন ভালো ফলন হবে না। বীজ রোপণের আড়াই মাসের মধ্যে ক্ষেত থেকে হলুদ ও বেগুনী রঙের ফুলকপি সংগ্রহ করে প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি করি। সঠিকভাবে পরিচর্যা করে ভালো ফলন পেয়েছি এবং আর্থিকভাবেও সফল হয়েছি। ৭৫ শতক জমিতে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচে দুই লক্ষাধিক টাকার ফুলকপি বিক্রি হয়েছে।
একই এলাকার কৃষক মিনহাজ, ইউসুফ বলেন, আশরাফুলের পাশাপাশি আমরাও আগামীতে রঙিন ফুলকপির চাষ করার চিন্তা করছি।
উপজেলার পাঁচটিকরী কৃষি ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা তৌকির আহমেদ বলেন, উপজেলায় সর্বপ্রথম আশরাফুল ইসলামের মাধ্যমে এ বাহারি ফুলকপির আবাদ করানো হয়। সফলতা আসায় আগামীতে এ অঞ্চলে সবজিটি ব্যাপকভাবে চাষাবাদ করানো হবে। ঘাটাইলে কৃষিতে এটি একটি নতুন সংযোজন। তিনি আরো বলেন, বাহারি রঙের ফুলকপি চীনে খাওয়া হয় সালাদ হিসেবে। সাদা ফুলকপির চেয়ে রঙিন ফুলকপির পুষ্টিগুণ বেশি। কম খরচ ও কম পরিশ্রমে চাষ করে লাভবান হওয়া সম্ভব। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে ময়মনসিংহ অঞ্চলের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় মোটিভেশনের মাধ্যমে ঘাটাইলে রঙিন ফুলকপি চাষ করা হয়েছে। জমিতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের বদলে ব্যবহার করা হয়েছে জৈবসার। পোকা দমনে ফেরোমন ও হলুদ ফাঁদ ব্যবহার করা হয়েছে। চারা রোপণের ৭০-৮০ দিনের মধ্যেই রঙিন ফুলকপি বিক্রি করা যায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলশাদ জাহান বলেন, ঘাটাইলে প্রথমবার কৃষক আশরাফুল ইসলাম বাহারি রঙের ফুলকপি চাষ করে সফল হয়েছেন। রঙিন ফুলকপিতে ভিটামিন এ, সি, কে, ফলিক অ্যাসিড, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, এন্টিঅক্সিডেন্টসহ মানবদেহে উপকারী বিভিন্ন উপাদান আছে। আশা করা যাচ্ছে, বাহুবলে আগামীতে রঙিন ফুলকপি চাষ অনেকটাই বাড়বে।