উপজেলা প্রশাসন তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযান চালালেও কিছু সময়ের জন্য মাটি কাটা বন্ধ রেখে প্রশাসনের লোক সরে গেলে ফের মাটি কেটে নেয় বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।
মাঝালিয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান মতি জানান, কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত গ্রামীণ সড়কগুলো ডাম্প ট্রাকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পাথালিয়াপাড়া এলাকার ফসলি জমি থেকে প্রকাশ্য ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে নদী বানানো হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, ওই এলাকায় বাওয়ার কুমারজানী গ্রামে নদীর ওপর একটি বাঁধ নির্মাণ করতে দেখা গেছে। মাটি নেওয়ার জন্য এই বাঁধটি ব্যবহৃত হবে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।
বহুরিয়া গ্রামের কৃষক সুলতান মিয়া ও আসাদ মিয়া জানান, বর্গা নিয়ে তাঁরা প্রায় ১০০ শতাংশ জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। জমির মালিক মাটি বিক্রি করায় অপরিপক্ব সরিষা তুলে ফেলতে হচ্ছে।
গোড়াই ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার লিটন মিয়া জানান, তাঁর এলাকা পাথালিয়াপাড়ায় মাটি কাটা বন্ধের জন্য তিনি গত বছর উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন স্থানে স্মারকলিপি দিয়েছিলেন, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর জানান, মাটি লুটকারীর তালিকা করা হচ্ছে। ওই তালিকা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে জমা দেওয়া হবে।
মির্জাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার পাল জানান, যেভাবে ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে নদী বানানো হচ্ছে, তাতে আগামীতে মির্জাপুরে খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ার শঙ্কা রয়েছে।
মির্জাপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাসুদুর রহমান জানান, প্রতিনিয়ত ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালানো হচ্ছে।
মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাকিলা বিনতে মতিন জানান, মাটি লুটেরাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এক সপ্তাহে ছয়টি ভেকু মেশিন, ১২টি ডাম্প ট্রাক ও একটি ড্রেজার জব্দ করা হয়েছে। বিভিন্ন মাটি ব্যবসায়ীদের কাছ থাকে প্রায় ১২ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।