টাঙ্গাইলের সখীপুরে একসঙ্গে এবারের এইচএসসি পরীক্ষা অংশগ্রহণ করে জিপিএ-৪ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে আপন তিন বোন। একসঙ্গে তিনবোনের পরীক্ষা দেওয়া ও উত্তীর্ণ হওয়ার বিষয়টি সবার নজর কেড়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১০টায় দেশের শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট, সংশ্লিষ্ট সব পরীক্ষা কেন্দ্র বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং এসএমএসের মাধ্যমে ফল প্রকাশ করা হয়।
গত ২৬ জুন শুরু হওয়া এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় তারা উপজেলার সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজের মানবিক বিভাগ থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন।
এই তিন বোন হলেন— সখীপুর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রবাসী শফিকুল ইসলামের বড় মেয়ে সুমাইয়া ইসলাম (১৯), মেজো মেয়ে সাদিয়া ইসলাম (১৮) এবং ছোট মেয়ে রাদিয়া ইসলাম (১৭)।
একসঙ্গে তিন বোনের পরীক্ষা দেওয়ার বিষয়টি শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক আগ্রহের জন্ম দিয়েছে।
জানা যায়, তিন বোনই জন্মগ্রহণ করেছেন সৌদি আরবে, যেখানে তাদের বাবা শফিকুল ইসলাম দীর্ঘ দিন প্রবাস জীবন কাটিয়েছেন। বাবা-পরিবারসহ তিন বোনের জন্ম হয় সৌদি আরবে। ২০১০ সালে সৌদি আরবের মক্কা শহর থেকে ব্যবসা-বাণিজ্য গুটিয়ে পরিবারসহ দেশে ফিরে আসেন তিনি। এরপর সুমাইয়া, সাদিয়া ও রাদিয়াকে ভর্তি করানো হয় স্কুলে। সেই থেকে একসঙ্গেই পড়ালেখা করছেন তিন বোন।
শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রথম শ্রেণি থেকেই এ পর্যন্ত তিন বোন একসঙ্গে পড়াশোনা করছে। বিগত সব পরীক্ষায় মেয়েরা ভালো ফলাফল করেছে। এবারও এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সন্তোষজনক ফলাফল লাভ করেছে তিনজনই। তারা যেন উচ্চশিক্ষা অর্জন করে সমাজ ও দেশের জন্য অবদান রাখতে পারে, এটাই আমার চাওয়া।
তিনবোনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা জানান, সুমাইয়া ইসলাম (১৯) হতে চান দেশের প্রখ্যাত একজন আইনজীবী। মেঝ বোন সাদিয়া ইসলাম (১৮) বলেন, আমি উচ্চ শিক্ষা অর্জন করে বিসিএস ক্যাডার হতে চাই এবং রাদিয়া ইসলাম (১৭) বলেন, আমি উচ্চ শিক্ষা লাভ করে পুলিশ অফিসার হতে চাই।
তিনবোনই উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে বাবা-মার স্বপ্ন পূরণের প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। পাশাপাশি তারা দেশের কল্যাণেও নিবেদিত থাকবেন বলে জোর প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন।
সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ এম এ রউফ জানান, তিন বোনই মেধাবী শিক্ষার্থী। তারা প্রাথমিক, জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করেছে। এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে তারা জিপিএ-৪ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে তিনবোন তাদের ভবিষ্যৎ স্বপ্ন পূরণ করবে এটা প্রত্যাশা করছি।