মধুপুরের প্রথম অনলাইন সংবাদপত্র

বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:২০ অপরাহ্ন

শিরোনাম :
মধুপুর সাবরেজিস্ট্রার অফিসে ঘুষ লেনদেনের প্রমাণ পেয়েছে দুদক!!! টাংগাইল-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী একাধিক, চমক দেখাতে চায় জামায়াত মধুপুরে মনোনয়নপ্রত্যাশী লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) আসাদুল ইসলাম আজাদ দীর্ঘদিন ধরে মাঠঘাট, পাড়া-মহল্লা চষে বেড়াচ্ছেন টাংগাইলের পাহাড়ি অঞ্চলে বাড়ছে হলুদের আবাদ মধুপুরে ভিক্ষুক পুনর্বাসনে উপহার সামগ্রী তুলে দিয়েছেন জেলা প্রশাসক মধুপুরের পাহাড়ীয়া গড়াঞ্চলে নতুন ধরনের আদা চাষে কৃষকরা আনন্দে চাপড়ী ও গারো বাজারে হোটেলে মোবাইল কোর্ট, ২৩ হাজার টাকা জরিমানা মধুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে জরিমানা অপরুপ সৌন্দর্যে ভরপুর মধুপুর মধুপুরে করাতকলে মোবাইল কোর্ট, জরিমানা ৪০ হাজার

মির্জাপুরে টনসিল অপারেশনের পর শিশুর মৃত্যু, গাঢাকা দিয়েছে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ!!!

সংবাদ দাতার নাম
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ২৬ জুলাই, ২০২৫
  • ১৪৬ বার পড়া হয়েছে

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বেসরকারি প্রাইভেট ক্লিনিকে টনসিল অপারেশনের পৌনে দুই ঘণ্টার মধ্যে তাসরিফা আক্তার নামের ৯ বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (২৫ জুলাই) দুপুরে উপজেলা সদরের মির্জাপুর মডার্ন হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ, ডাক্তার, নার্সসহ সবাই গাঢাকা দিয়েছেন বলে অভিযোগে জানা গেছে।

তাসরিফা দেলদুয়ার উপজেলার লাউহাটি ইউনিয়নের পাচুটিয়া গ্রামের পারভেজ মিয়ার মেয়ে।

এদিকে মেয়ের মৃত্যুর পর বাবা পারভেজ মেয়ের মরদেহ ঝাপটে ধরে আহাজারি করছেন। সন্ধ্যা ৮টা পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ না আসায় ক্ষিপ্ত হয়ে পারভেজ বিলাপ করতে করতে হাসপাতালের একটি গ্লাস ভাঙচুর করেন। রাত সোয়া ৮টার দিকে মৃত শিশুকে নিয়ে পরিবারের লোকজন ক্লিনিকের ভেতর আহাজারি করছেন বলে জানা গেছে।

এ ঘটনার পর হাসপাতালের কয়েকজন পরিচালক ও স্টাফদের সঙ্গে কথা হলে তাদের দেওয়া তথ্যেও কোনো মিল পাওয়া যায়নি।

তারা শিশু তাসরিফার টনসিল অপারেশনে অংশ নেওয়া ডাক্তারদের একেক সময় একেক নাম-পরিচয় দিয়েছেন। ক্লিনিকটি ১০ বেডের অনুমোদন থাকলেও ১৫ থেকে ২০ বেড ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।জানা গেছে, শুক্রবার সকালে দেলদুয়ার উপজেলার লাউহাটি ইউনিয়নের পাচুটিয়া গ্রামের পারভেজ মিয়ার মেয়ে তাসরিফাকে শ্বাসকষ্ট বা খাদ্য গ্রহণ সমস্যা নিয়ে মির্জাপুর মডার্ন হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে (প্রা.) আসেন। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটির পরীক্ষা শেষে টনসিল অপারেশনের জন্য ভর্তি করেন।

দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে ডাক্তার মো. সাইফ আব্দুল্লাহ অ্যানেসথেসিয়া দেন বলে জানা গেছে। পরে নাক-কান গলার চিকিৎসক ডা. মো. মাসুম বিল্লাহ্ শিশু তাসরিফার টনসিল অপারেশন করেন। দুপুর ২টা ৫ মিনিটে শিশুটিকে বেডে আনার কিছুক্ষণ পর হাত-পা ছটফট করতে থাকে। তাসরিফাকে ছটফট করতে দেখে মা পলি বেগম ও বাবা পারভেজ চিকিৎসক ও নার্সদের ডাকেন। চিকিৎসক না গেলেও দায়িত্বরত নার্স গিয়ে বলেন, টনসিল অপারেশন হওয়ার পর এ রকম হয়ে থাকে বলে জানিয়েছিলেন।
হঠাৎ ছটফট থেমে নিস্তেজ হয়ে গেলে আবার নার্সদের ডাকেন। পরে নার্স এসে বিকেল সোয়া ৩টার দিকে কুমুদিনী হাসপাতালে পাঠান। সাড়ে ৩টায় কুমুদিনী হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। স্বজনরা পরে মৃত শিশুটিকে নিয়ে আবার ক্লিনিকে গিয়ে আহাজারি করতে থাকেন। এরপরও কর্তৃপক্ষ তাদের পাশে দাঁড়ায়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে একটি চক্র মালিক পক্ষের সঙ্গে কাজ করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে শিশু তাসরিফার মা পলি বেগম ও বাবা পারভেজ বলেন, টনসিল অপারেশনের কিছুক্ষণ পর তার মেয়ে ছটফট করতে থাকে। তখন ক্লিনিকের নার্স বলেন, এটি স্বাভাবিক বিষয়, ঠিক হয়ে যাবে। কিছুক্ষণ পর আমার মা নিস্তেজ হয়ে গেলে নার্সদের ডেকে আনি। পরে মেয়েকে কুমুদিনী হাসপাতালে নেওয়া হলে মৃত ঘোষণা করেন। আমরা ক্লিনিক মালিকের বিচার দাবি করি।

ডা. মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, আমার অপারেশন ভালোভাবে সম্পন্ন হয়েছে। অজ্ঞানজনিত (অ্যানেসথেসিয়াজনিত) কারণে শিশুটির মৃত্যু হতে পারে বলে তিনি জানান।

অ্যানেসথেসিয়া দেওয়া ডাক্তারের নাম জানতে চাইলে তিনি ক্লিনিক মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।

অ্যানেসথেসিয়া ডাক্তার মো. সাইফ আব্দুল্লাহ বলেন, রোগীর জ্ঞান ফেরার পর মৃত্যুর  সঙ্গে অজ্ঞানজনিত কারণ থাকে না। আমি শুক্রবার ওই ক্লিনিকে পাঁচজন রোগীকে অজ্ঞান করেছি। তাসরিফা তার চার নম্বর রোগী। জ্ঞান ফেরার পর আমি ও তার বাবা-মা কথাও বলেছি। অন্য কোনো কারণে শিশুটির মৃত্যু হতে পারে বলে তিনি জানান।

মির্জাপুর মডার্ন হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক মোস্তফা মিয়া সাংবাদিকদের শিশুটির অপারেশনকারী ডাক্তারের একেক সময় একেক  নাম জানিয়েছেন।

হাসপাতালে বেডের সংখ্যা বেশি থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে কয়েকটি বেড বেশি রয়েছে বলে স্বীকার করেন।

মির্জাপুর মডার্ন হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল হালিমের সঙ্গে কথা হলে তিনিও শিশুটির অপারেশনে একেক সময় একেক চিকিৎসকের নাম বলেন।

ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল হালিম ও পরিচালক মোস্তফা মিয়া অর্থোপেডিক ডাক্তার সানাউল হক শুভ ও অ্যানেসথেসিয়া ডাক্তার সাইদের নাম উল্লেখ করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নাক-কান-গলার চিকিৎসক ডা. মো. মাসুম বিল্লাহ এবং ডাক্তার সাইফ আব্দুল্লাহ অ্যানেসথেসিয়া দিয়েছেন।

মির্জাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. ফরিদুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

সংবাদ টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

The Trend (Online Shop)

©২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি বা ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা আইনত দণ্ডনীয়)
Design by: POPULAR HOST BD
themesba-lates1749691102