টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের প্রায় ১৫টি ভবন দেড় যুগ ধরে ঝুঁকিপূর্ণ, জরাজীর্ণ এবং পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। ঔষধ সরবরাহ বন্ধ এবং বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় দুর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (২৩ জুন) উপজেলার কয়েকটি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে খোঁজ নিয়ে এসব তথ্য জানা গেছে।
মির্জাপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সুদেব কর্মকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, উপজেলার ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের ভবনগুলোর করুণ অবস্থা দীর্ঘদিনের। অনেকগুলো ভবন সংস্কার করার মত উপযোগী নয়। নতুনভাবে ভবন নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত বরাদ্দ পাওয়া যায়নি।
ঔষধ সরবরাহ বন্ধ এবং বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার কথাটি স্বীকার করে তিনি জানান, ৬ মাস ধরে ঔষধ দেওয়া যাচ্ছে না। অর্থের অভাবে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় বিদ্যুৎ বিভাগ লাইন কেটে দিয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, তবে কোন কাজ হচ্ছে না বলে জানান তিনি।
মির্জাপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিস সূত্রে জানা যায়, মির্জাপুর পৌরসভাসহ ১৪ টি ইউনিয়নে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র এবং স্বাস্থ্য উপকেন্দ্র রয়েছে। এসবে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মা ও প্রসূতি সেবাসহ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রের ভবনগুলো করুণ ও বেহাল অবস্থায় রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশেষ করে আজাগানা, বাঁশতৈল, ভাদগ্রাম, ওয়ার্শি, বহুরিয়া, বানাইল, আনাইতারা, তরফপুর, বহনতলী এবং জামুর্কি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ। তদারকির অভাবে ভবনগুলোর দেওয়াল ও ছাঁদ খসে পরছে। চারপাশ বন-জঙ্গলে ঘিরে ফেলেছে।
ভুক্তভোগী বাঁশতৈল খলিলুর রহমান ডিগ্রি কলেজের ছাত্রী লাইজু ও শিউলী আক্তার জানান, বিভিন্ন সময় শারীরিক সমস্যা নিয়ে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে চিকিৎসাসহ পরামর্শের জন্য যাই। কিন্তু কেন্দ্র বন্ধ থাকায় কোনও ঔষধ কিংবা পরামর্শ পাচ্ছি না। তাদের অভিযোগ এসব স্বাস্থ্য কেন্দ্র পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে প্রায় দেড় যুগ হচ্ছে।
আজগানা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপ-সহকারী ডা. রঞ্জিত তরফদার বলেন, অর্থের অভাবে ভবনগুলো সংস্কার না হওয়ায় পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ঔষধ সরবরাহ বন্ধ থাকায় রোগীদের দেওয়া যাচ্ছে না।
তবে, চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের বারান্দা, হাট-বাজারের দোকান ও বাসাবাড়িতে স্বাস্থ্যকর্মীরা চিকিৎসা-পত্র দিয়ে আসছেন বলে জানান তিনি।
এসব কেন্দ্রের ভবন দ্রুত সংস্কার বা নতুনভাবে নির্মাণ করে পর্যাপ্ত ঔষধ ও চিকিৎসা সেবা প্রদানের দাবি এলাকাবাসীর।