শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা অমান্য করে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার মহেড়া আনন্দ উচ্চ বিদ্যালয়ে উপবৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মাসিক বেতন ও বিদ্যুৎ বিল বাবদ অর্থ আদায় করার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। দাবি করা অর্থ না দিলে উপবৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদের এসএসসি পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে না- এমন হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিদ্যালয়, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রি-টেস্ট পরীক্ষা শুরু হয়। পরীক্ষা শুরুর আগে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পরীক্ষার ফি ও বিদ্যালয়ের বেতনসহ বিভিন্ন খাতে টাকা আদায় শুরু করছে।
টাকা জমার রশিদে পরীক্ষার ফি বাবদ ৫৫০ টাকা, ছয় মাসের বিদ্যুৎ বিল বাবদ ৬০ টাকা এবং জানুয়ারি মাসের বকেয়া বেতন ৩০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে।বিদ্যালয় সুত্র জানায়, দশম শ্রেণিতে বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্যিক শাখায় শিক্ষার্থী রয়েছে ৫১ জন। এর মধ্যে উপবৃত্তি পান ২৩ জন। পরীক্ষার ফির সঙ্গে এক মাসের বেতন ৩০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপবৃৃত্তি পাওয়া কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, তাদের কাছ থেকে অফিস সহকারী ৯১০ টাকা চেয়েছেন। পরে তারা প্রধান শিক্ষকের কাছে গিয়ে উপবৃত্তি পাওয়ার বিষয়টি জানায়। এ সময় প্রধান শিক্ষক তাদের বলেন, বেতনের টাকা না দিলে পরীক্ষায় অংশ তাদের অংশ দিতে দেওয়া হবে না।
এক শিক্ষার্থীর মা বলেন, আমার ছেলে দশম শ্রেণিতে পড়ে।
সে উপবৃত্তি পায়। আমার স্বামীর সামান্য আয় দিয়ে কোনো রকম সংসার চালিয়ে ছেলের লেখাপড়ার খরচ চালাচ্ছি। এখন পরীক্ষার কথা বলে স্কুলে ফি চাওয়া হচ্ছে। এরপর ফি দিতে গেলে এক মাসের বেতন চাওয়া হয়, সাথে বিদ্যুৎ বিলের ৬০ টাকা। পরীক্ষার ফিসের সঙ্গে মাসিক বেতন ও বিদ্যুৎ বিলের টাকা পরিশোধ না করলে ছেলেকে পরীক্ষা দিতে দেওয়া হবে না।
পরে আমি টাকা ধার করে ছেলের স্কুলে টাকা জমা দিয়েছি।
এ ব্যাপারে বক্তব্য চাওয়া হলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহিনুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে বলেন, ’আইন জেনে বিদ্যালয়ে আসেন। আপনি সব জানেন, তার পরও আমাকে কেন প্রশ্ন করেন। আমি মোবাইল ফোনে কোনো কথা বলবো না।’ এর পরই ফোন কেটে দেন ওই প্রধান শিক্ষক।
মির্জাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা জুলফিকার হায়দার বলেন, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রেবেকা সুলতানার মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। উপবৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন না নেওয়ার সরকারি নির্দেশনা রয়েছে। তার পরও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।