টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে প্রবাসী ফিরোজ আল মামুনের চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, একসঙ্গে তিন যুবকের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে প্রবাসীর স্ত্রী ফিরোজা খাতুন। পরকীয়ার কারণে ঘটেছে এ হত্যাকাণ্ড।
সবশেষ বুধবার (২৩ জুলাই) সকালে ফিরোজার কথিত প্রেমিক জামাল উদ্দিন ওরফে সোনা মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর আগে মঙ্গলবার রাতে ফিরোজা খাতুনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ফিরোজ আল মামুন কিছুদিন আগে মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন। এরই মধ্য একই গ্রামের প্রবাসী শাহ আলমের স্ত্রীর ফিরোজা খাতুনের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। মামুন ছাড়াও আরও দুই যুবকের সঙ্গে ফিরোজা খাতুনের পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। গত সোমবার রাতে ফিরোজা বেগম ফোন করে কথিত প্রেমিক মামুনকে বাসায় আসতে বলে। কথা মতো বাসায় আসে মামুন। তবে কিছুক্ষণ পরই ফিরোজার কথিত প্রেমিক সোনা মিয়া ফিরোজার বাড়িতে চলে আসেন।
পরে এ ঘটনায় মামুন ও সোনা মিয়ার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে মামুনের মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করে সোনা মিয়া। এতে ঘটনাস্থলেই মামুনের মৃত্যু হয়। পরে মরদেহ গুম করার উদ্দেশ্যে ফিরোজা খাতুন ও সোনা মিয়া মিলে মামুনের মরদেহ পাশের ক্ষেতে ফেলে আসে। সবশেষ গত বুধবার স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে প্রবাসী মামুনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এদিকে ফিরোজ আল মামুন হত্যাকাণ্ডে তার ভগ্নীপতি ফরহাদ মোল্লা বাদী হয়ে মির্জাপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পর মির্জাপুর থানা পুলিশ হত্যার সঙ্গে জড়িত ফিরোজা খাতুন ও কথিত প্রেমিক জামাল উদ্দিন ওরফে সোনা মিয়াকে গ্রেপ্তার করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক জুযেল রানা জানান, হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকায় ফিরোজা ও তার কথিত প্রেমিক জামাল উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যার কথা স্বীকার করেছে। প্রেমঘটিত কারণেই ফিরোজ আল মামুনকে হত্যা করা হয়েছে।
এদিকে প্রবাসী মামুনের মরদেহ উদ্ধার ও জড়িত থাকার অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তারের খবরে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। তরফপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আজিজ রেজা জানান, শাহ আলম বিদেশ থাকায় তার স্ত্রী ফিরোজা খাতুন এলাকায় পরকীয়াসহ নানা অপকর্ম করে আসছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় বিচার সালিসও হয়েছে।
মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ রাসেদুল ইসলাম বলেন, পরকীয়ার জেরেই ফিরোজ আল মামুনকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে ফিরোজা খাতুন ও তার কথিত প্রেমিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রবাসী ফিরোজা খাতুনে স্ত্রীর সঙ্গে একই এলাকার জামাল উদ্দিন ওরফে সোনা মিয়া, প্রবাসী ফিরোজ আল মামুন এবং আরও এক যুবকের সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল বলে জানতে পেরেছি। হত্যাকাণ্ডের আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তা জানতে তদন্ত চলছে। জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।