মধুপুরের প্রথম অনলাইন সংবাদপত্র

রবিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০১:৫০ পূর্বাহ্ন

First Online Newspaper in Madhupur

টাংগাইলে এক বিধবা পরিবারের ফ্ল্যাট দখলের চেষ্টার অভিযোগে মানববন্ধন

সংবাদ দাতার নাম
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৬৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইল শহরের সাবালিয়া এলাকায় শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ রোডে অবস্থিত বনফুল টাওয়ারে এক বিধবা পরিবারের ফ্ল্যাট দখলের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরিবারটির এখন নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটছে। এ ব্যপারে প্রতিকার চেয়ে টাঙ্গাইল সদর থানাসহ বিভিন্ন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ওই পরিবার। এছাড়াও প্রতিকার চেয়ে দশতলা বিশিষ্ট ওই টাওয়ারে অন্যান্য ফ্ল্যাট মালিক ও স্থানীয়দের নিয়ে শুক্রবার বিকেলে টাঙ্গাইল বনফুল টাওয়ারের সামনে মানববন্ধন করা হয়েছে।

অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, ওই টাওয়ারের জনৈক ফ্ল্যাট মালিক উজ্জ্বল চক্রবর্তী অপর ফ্ল্যাট মালিকদের উপর দীর্ঘদিন ধরে নানাভাবে হয়রানী ও নির্যাতন চালিয়ে আসছে। উজ্জল পুলিশের চাকুরী করতো। চাকুরী থেকে বর্তমানে অবসরে রয়েছে। প্রায় ১০ বছর আগে বনফুল টাওয়ারে তিনটি ফ্ল্যাট ক্রয় করেন। ফ্ল্যাট চালু হওয়ার পর তার ফ্ল্যাটে মাদক সেবন, বিক্রি ও নারী কেলেংকারীসহ বিভিন্ন অপরাধমুলক কর্মকান্ড চলে আসছে। এক সময়ে পুলিশের চাকুরীর সুবাদে টাঙ্গাইল থানায় বিভিন্ন সময়ে কর্মরত পুলিশের অনেক দারোগার সাথে তার সম্পর্ক গড়ে উঠে। আর এ সুযোগে উজ্জল তার ফ্ল্যাটে এসব অনৈতিক কর্মকান্ড করে আসছে। এসব কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করলে অন্যান্য ফ্ল্যাটের মালিকদের নানাভাবে হয়রানী করতো। এরই ধারাবাহিকতায় ফ্ল্যাটের মালিক মৃত রহমত উল্লাহের দ্বিতীয় স্ত্রী দিলাওয়াতীর পরিবার দীর্ঘদিন ধরে হয়রানী হেনস্থা করে আসছে।

ফ্ল্যাটের মালিক মৃত রহমত উল্লাহের দ্বিতীয় স্ত্রী দিলাওয়াতী লিখিত অভিযোগ করেন, মুখলেসুর রহমান ও আব্দুল আউয়ালের সহযোগিতায় উজ্জ্বল চক্রবর্তী বনফুল টাওয়ারের বাসায় বিভিন্ন মেয়ে নিয়ে এসে অসামাজিক কার্যকলাপ করে। আমি ও ফ্ল্যাটের শেয়ারগণ এবং এলাকাবাসীর প্রতিবাদ করলে উজ্জ্বল চক্রবর্তী, মুখলেসুর রহমান ও আব্দুল আউয়াল আমাদেরকে চাঁদাবাজি, মাদক মামলায় জেল হাজতে পাঠানোসহ নানা ভয়-ভীতি ও হুমকি দিয়ে থাকেন। ইতিপূর্বে তারা স্থানীয় উঠতি বয়সী ছেলেদের ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদকদিয়া ধরাইয়া দিয়ে জেল হাজতে প্রেরন করে। আমরা মান সম্মানের ভয়ে ও মামলাসহ হয়রানীর ভয়ে কোন অভিযোগ দায়ের করতে সাহস পাইনি। এক পর্যায়ে প্রতিবাদ করায় তারা আমাদেরকে বিভিন্ন প্রকার ভয়-ভীতি হুমকিধামকী প্রদর্শন করে। উজ্জ্বল চক্রবর্তী কিছুদিন পূর্বে অপরাধ সংগঠন করিলে পুলিশের নিকট গ্রেপ্তার হয়ে জেল ছিল। গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাতের বেলায় বনফুল টাওয়ারের সামনে তাদের এই ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপে বাঁধা দেয়ায় আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে। আমাকে বলে তোমাকে কিছু টাকা দিয়ে দেই কাগজে সাইন করে তোমার দেশে চলে যাও। এ অবস্থায় তাদের ভয়ে স্থানীয় ছাত্রসমাজ ও এলাকাবাসীসহ আমরা ফ্ল্যাটের মালিকগণ চরম নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি। যেকোনো সময় তারা আমাদের আরো বড় ধরনের ক্ষতিসাধন করতে পারে বলে আশঙ্কা করছি।

এ ব্যপারে ফ্ল্যাটের আরেক মালিক আকবর হোসেন মিঠু অভিযোগ করেন, বনফুল টাওয়ারে আমার দুইটি ফ্ল্যাট আছে। একটা ফ্ল্যাট আমি দশ বছর আগে কিনেছি। আরেকটা দুই বছর আগে কিনেছি। উজ্জ্বলের ভয়ে আমি ফ্ল্যাটে ঢুকতে পারি না। সে প্রশাসনের ভয়ভীতি দেখিয়ে মাদক সেবন, মাদক বিক্রি ও নারি কেলেঙ্কারি সহ বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। সে ফ্ল্যাট সকল সার্ভিসচার্জ নিলেও তা কোথায় কিভাবে খরচ করছে সে হিসাব কখনো দেয়নি। টাকার হিসেব চাইলে উজ্জল ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে। নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে থাকে। সে দীর্ঘদিন ধরে টাওয়ার মালিক কল্যান কমিটির সাধারন সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। কোন কমিটি আজও পর্যন্ত নতুন করে নির্বাচন বা অন্য কোনভাবে পরিবর্তন করতে দেয়নি। এককথায় গায়ের জোরে সে এই পদ দখলে রেখেছে। নানা সময়ে পুলিশ প্রশাসনের সাথে তার ঘনিষ্ট সম্পর্ক থাকায় আমরা আইনী কোন পদক্ষেপ নিতে সাহস পাইনি। গত ১৬ সেপ্টেম্বর আলোচনার মাধ্যমে এসব সমস্যা সমাধানের জন্য বসার প্রস্তাব দেয়া হয়। এরপর তিনি অভিযোগ করেন আমরা নাকি তার কাছে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করেছি। আমাদের বিরুদ্ধে এমন মিথ্যা অভিযোগ এনে সেনাবাহিনীর কাছে অভিযোগ করার হুমকিও দেন তিনি। এ অবস্থায় আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। বিবাদীগণ যেকোনো সময় আমাদের আরো বড় ধরনের ক্ষতি সাধন করিতে পারে বলে আশঙ্কা করছি। আমি তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বনফুল টাওয়ারের সাধারন সম্পাদক উজ্জ্বল চক্রবর্তী বলেন, আমার নামে যে সব আভিযোগ আনা হয়েছে মিথ্যা, বানোয়াট। আমি সব সময় বনফুল টাওয়ারের উন্নয়নের জন্যে কাজ করে যাচ্ছি। আমাকে নিয়ে যেহেতু কথা উঠেছে। আমি আমার দ্বায়িত্ব থেকে সরে যাব। আমি কয়েক দিনের মধ্যে সব হিসাব শেষ করে আমার দ্বায়িত্ব থেকে অব্যহতি নিব।

এ বিষয়ে সদর পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ রুহুল আমিন বলেন, আমি অভিযোগটি পেয়েছি, বাদী ও বিবাদী উভয় পক্ষ আমার সাথে কথা বলেছে। উভয় পক্ষ এই বিষয় নিয়ে বসবে। তাদের মধে যদি কোন সমাধানে না যায় তবে আমরা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা নিব।

সংবাদ টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

The Trend (Online Shop)

©2024 All rights reserved
Design by: POPULAR HOST BD
themesba-lates1749691102
Verified by MonsterInsights