নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ঘাটাইল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতিতে পাল্টাপাল্টি কমিটি গঠন হয়েছে। এ নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে অস্থিরতা বিরাজ করছে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সমিতির কার্যালয় দখলে নেন বিএনপিপন্থি শিক্ষকরা। এমরান হোসেন ও নাজমুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি ভেঙে দেয়া হয়। গত ১৬ই আগস্ট মো. মোস্তাক আহম্মেদ মোস্তাককে সভাপতি এবং হুসাইন আলম খোকনকে সাধারণ সম্পাদক করে ৪৩ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করেন বিএনপি নেতা আজাদের অনুসারী শিক্ষকরা। এরপর ২৭শে আগস্ট পাল্টা কমিটি গঠন করেন আরেক বিএনপি নেতা ওবায়দুল হক নাছির গ্রুপের অনুসারী শিক্ষকরা। এতে ঘাটাইল শিক্ষক সমিতিতে তৈরি হয় অস্থিরতা। শিক্ষকদের অভিযোগ- নিয়মনীতি অনুসরণ না করেই বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুজ্জামান মনিরের স্বাক্ষর করা একটি কমিটির অনুমোদন এনে দেন বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির সদস্য এডভোকেট ওবায়দুল হক নাছির। ঘোষিত ওই কমিটিতে অন্তত ১৫ জন আওয়ামী লীগের শিক্ষক ও অন্যান্য দলের অন্তত ৩ জন শিক্ষকের জায়গা হয়েছে। প্রায় ৮০ ভাগ শিক্ষকদের অভিযোগ-গণতান্ত্রিক পদ্ধতি অনুসরণ না করে সিলেকশনের মাধ্যমে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া ৪৩ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির মধ্যে ১৫ জনই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা। এ নিয়ে উপজেলা জুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। সদ্য ঘোষিত আজাদ গ্রুপের সভাপতি মো. মোস্তাক আহাম্মেদ বলেন, জালিম সরকার পালিয়ে যাওয়ার পর ভেবেছিলাম প্রাথমিক শিক্ষকদের মর্যাদা ও সম্মান ফিরিয়ে এনে শিক্ষকদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া গত ১৬ বছরের অনাচার, অবিচার ও দুর্নীতির শিকড় উপরে ফেলে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করবো। কিন্তু সেই কমিটির মেয়াদ ৭ দিন পূর্ণ হওয়ার আগেই কতিপয় হাইব্রিড বিএনপি ও আওয়ামী লীগের দালাল দিয়ে নতুন আরেকটি কমিটি মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে শিক্ষকদের ভেতরে বিভেদ ও হানাহানির পাঁয়তারা করছে। অথচ আমাদের দেয়া কমিটি এখনো বিলুপ্তি ঘোষণা করা হয়নি। নবগঠিত নাছির গ্রুপের সভাপতি মুহাঃ আব্দুর রহমান তালুকদার বলেন, দীর্ঘদিন অচলাবস্থায় থাকা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতিকে সচল, অন্যায়, অবিচার ও বৈষম্য দূর করার জন্য বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি কেন্দ্রীয় শাখার সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির স্বাক্ষরকৃত অনুমোদিত কমিটি পেয়েছি। এখানকার নেতৃত্বে যা আছেন তারা সকলেই যোগ্য ও দায়িত্বশীল শিক্ষক। আশা করি অতিদ্রুত শিক্ষক সমিতি তথা শিক্ষকদের হারানো গৌরব ফিরিয়ে এনে একটি স্বচ্ছ ও আধুনিক শিক্ষক সমিতি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।