মধুপুরের প্রথম অনলাইন সংবাদপত্র

শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:১৮ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম :
মধুপুরে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আমিনুল ইসলাম বাবলু আটক টাংগাইলে কাজ না বুঝে নিয়েই প্রায় ৫ কোটি টাকা অগ্রিম বিল প্রদান আসছে সবুজ খানের প্রথম চলচিত্র “বেহুলা দরদী” মধুপুরে ভয়াবহ ত্রিমুখী সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই দু’জন নিহত মধুপুর চাপড়ী বহুমুখী গণ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও সুধী সমাবেশ মধুপুরে সেনাবাহিনীকে কটাক্ষ করে বক্তব্য দেয়ার অভিযোগ উপজেলা বিএনপি সভাপতির বিরুদ্ধে মধুপুরে জাতীয়  বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস উদযাপন মধুপুর সাবরেজিস্ট্রার অফিসে ঘুষ লেনদেনের প্রমাণ পেয়েছে দুদক!!! টাংগাইল-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী একাধিক, চমক দেখাতে চায় জামায়াত মধুপুরে মনোনয়নপ্রত্যাশী লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) আসাদুল ইসলাম আজাদ দীর্ঘদিন ধরে মাঠঘাট, পাড়া-মহল্লা চষে বেড়াচ্ছেন

নাগরপুরে সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহে মেতে উঠেছে মৌয়ালরা

সংবাদ দাতার নাম
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ১৭৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের নাগরপুরে ফসলের মাঠ এখন সরিষা ফুলে হলুদ রঙে সেজেছে। সকালের সূর্যের কিরণ প্রতিফলিত হওয়ার সাথে সাথেই সরিষা ফুলের সমারোহে হেসে উঠে চারদিক। এ যেন প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি। চোখ মেললেই মন জুড়িয়ে যায়। পুরো মাঠ যেন ঢেকে আছে হলুদ গালিচায়। ফুলে মৌমাছি আর প্রজাপতির নাচনে গ্রামীণ জনপদ হয়ে উঠেছে আরো মনোমুগ্ধকর। পড়ন্ত বিকেলের মিষ্টি রোদে সরিষা ফুলগুলো বাতাসে দোল খেতে থাকে। প্রকৃতি যেমন অপরুপভাবে সেজেছে, ঠিক সেই সাথে মেতে উঠেছে পেশাদার মধু সংগ্রহে মৌয়ালরা।

সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহে এসব জমির পাশে পোষা মৌমাছির শত শত বক্স নিয়ে হাজির হয়েছে এসব মৌয়াল। বক্স থেকে হাজার হাজার মৌমাছি বের হয়ে মধু সংগ্রহে ঘুরে বেড়াচ্ছে সরিষার ফুলে ফুলে। এই অপরূপ দৃশ্য যেকোনো প্রকৃতি প্রেমী মানুষকে আকৃষ্ট করবে। এই সরিষা থেকেই মিলছে খাঁটি তেল, গরুর স্বাস্থ্যকর খাবার, খৈল, জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে সরিষার গাছ। সরিষা চাষে খরচও কম। তাইতো কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় উপজেলা জুড়ে প্রতি বছরের ন্যায় এবার আরো ব্যাপকভাবে সরিষা চাষ হয়েছে।

একাধিক কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, একসময় উপজেলায় ব্যাপকভাবে সরিষার আবাদ হতো। সয়াবিন তেলের ওপর নির্ভরশীল হওয়ার কারণে বর্তমানে সরিষার আবাদ অনেকটা কমে গেছে।

মৌমাছি সরিষার ফুলে ফুলে উড়ে মধু সংগ্রহ করে। এতে সরিষা ফুলে সহজেই পরাগায়ন ঘটে। সরিষাক্ষেতের পাশে মৌ চাষের বক্স স্থাপন করলে, সরিষার ফলন অন্তত ২০ শতাংশ বাড়ে। এছাড়া মৌচাষিরা মধু আহরণ করেও লাভবান হচ্ছে। এসব মৌ চাষিরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাতক্ষীরার হয়ে থাকে।

সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার সব কয়টি ইউনিয়নের মধ্যে নাগরপুর সদর কাশাদহ, গয়হাটা, ধুবড়িয়া, ভাদ্রা, মোকনা, দপ্তিয়র, মামুদনগর, বেকড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় মৌচাষীরা সরিষাক্ষেতের পাশে মৌ চাষ করছে। এসব জমিতে সরিষার ফুল ফুটেছে আরো সপ্তাহ দু-তিন আগেই। ফুলের মধু আহরণে নেমেছেন, পেশাদার মৌয়ালারা। তাদের বক্স থেকে দলে দলে উড়ে যাচ্ছে পোষা মৌমাছি, আর সংগ্রহ করছে মধু। মুখভর্তি মধু সংগ্রহ করে মৌমাছিরা ফিরছে বক্সে রাখা মৌচাকে। সেখানে সংগৃহীত মধু জমা করে আবার ফিরে যাচ্ছে সরিষা ক্ষেতে। এভাবে দিনব্যাপী মৌমাছিরা যেমন মধু সংগ্রহ করে। ফুলে ফুলে ঘুরে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে পুরো জমির পরাগায়নেও সহায়তা করে। এ মৌসুমে মৌয়ালরা পোষা মৌমাছি দিয়ে প্রচুর মধু উৎপাদন করে যেমন লাভবান হচ্ছেন ঠিক তেমনি মৌমাছির ব্যাপক পরাগায়নে সরিষার বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনায় চাষিরাও বাড়তি আয়ের আশা করছেন। কর্মসংস্থান হয়েছে অনেকের। মৌ চাষের কারণে একদিকে যেমন সরিষা উৎপাদন বাড়বে, অন্যদিকে অল্প খরচে মৌ চাষ দূর করতে পারে বেকারত্ব।

সাতক্ষীরা থেকে আসা মৌয়াল মো: আবদুল জলিল (৪৩) জানান, আমরা প্রতি বছর সরিষা ক্ষেত থেকে অনেক খাঁটি মধু সংগ্রহ করে থাকি। এসব মধুর অনেক চাহিদা দেশ ও দেশের বাইরে। বেশ ভাল দামে মধু বিক্রি করা যায়। আগে সরিষা চাষিরা মনে করতো যে এভাবে মধু সংগ্রহ করলে সরিষার ক্ষতি হয়। কিন্তু এখন তারা বুঝতে পেরেছে মধু সংগ্রহে সরিষার ফলন আরো ভালো হয়। আমি এবছর মোট ৮৭ টি মৌ বক্স নিয়ে এই স্থানে এসেছি। বর্তমানে মৌ চাষে প্রতি বক্স থেকে সপ্তাহে ১.৫-২ কেজি মধু সংগ্রহ করা যায়। তবে অগ্রহায়ণ ও পৌষ মাসে মধু সংগ্রহ বেশি হয়। ৮৭ টি বাক্সে সপ্তাহে ১৬০ থেকে ১৮০ কেজি মধু সংগ্রহ করা হয়, যার বাজারমূল্য ৪৮ থেকে ৫৩ হাজার টাকা। মৌ চাষে আমরা বেশিরভাগ মৌয়ালারা মহাজন হতে অগ্রিম টাকা নিয়ে কাজ করি। পাইকারি প্রতি কেজি মধুর দাম ধরা হয় ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। আর খুচরা বাজারে আমরা মধু তেমন বিক্রি করি না। তবে খুচরা ৪০০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা বিক্রি করি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসাইন শাকিল দৈনিক নয়া দিগন্ত কে জানান, উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে এ বছর প্রায় ১৫ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। কৃষকরা সামান্য কিছু স্থানীয় জাতসহ উন্নত জাতের সরিষা চাষ করেছে। সরিষা নভেম্বরের ১৫ তারিখ থেকে আবাদ শুরু করতে হয়। ফসল ঘরে উঠতে সময় লাগে জাত ভেদে ৮৫ থেকে ৯০ দিন।

তিনি আরো জানান, নাগরপুর উপজেলায় স্থানীয়ভাবে কোনো মৌ চাষ করা হয় না। যারা মৌ চাষ করছেন তারা সকলেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা চাষী। তাই এখানে মৌ চাষে উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এই পর্যন্ত নাগরপুর উপজেলায় ৪ হাজার ৮০ টি বক্স স্থাপন করা হয়েছে।

সংবাদ টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

The Trend (Online Shop)

©২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি বা ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা আইনত দণ্ডনীয়)
Design by: POPULAR HOST BD
themesba-lates1749691102