টাঙ্গাইলের যমুনা নদী সংলগ্ন ইব্রাহিমাবাদ রেলস্টেশন থেকে জেলার মির্জাপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত ৪৬টি রেলক্রসিংয়ের মধ্যে ৩০টি অরক্ষিত ক্রসিং মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। এসব রেলক্রসিংগুলোতে গেটম্যান না থাকায় আতঙ্ক নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, টাঙ্গাইলের যমুনা নদী সংলগ্ন কালিহাতী উপজেলার ইব্রাহিমাবাদ রেলস্টেশন থেকে সদর উপজেলার ঘারিন্দা রেলস্টেশন পর্যন্ত ১৯টি রেলক্রসিং রয়েছে। এরমধ্যে ৬টি রক্ষিত অর্থাৎ গেটম্যান রয়েছে। বাকি ১৩টি অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ে গেটম্যান নেই। টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ঘারিন্দা রেলস্টেশন থেকে মির্জাপুরের মহেড়া রেলস্টেশন পর্যন্ত ১৮টির মধ্যে ৬টিতে গেটম্যান রয়েছে এবং ১২টি অরক্ষিত। মহেড়া রেলস্টেশন থেকে মির্জাপুর উপজেলা রেলস্টেশন পর্যন্ত ৯টির মধ্যে ৪টি রক্ষিত এবং ৫টি অরক্ষিত। রেল পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অদ্যাবধি টাঙ্গাইলের ইব্রাহিমাবাদ থেকে মির্জাপুর পর্যন্ত অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া ২০২৪ সালে ২রা ফেব্রুয়ারিতে জেলার কালিহাতীর আনালিয়াবাড়ি এলাকায় ট্রেনে কাটা পড়ে বাবা-ছেলেসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ওই বছরের ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ায় ২৩ জনে। ২০২৩ সালে টাঙ্গাইল জেলায় ট্রেন দুর্ঘটনায় মারা যান ৪০ জন।
সরজমিন দেখা যায়, দেলদুয়ার-বাসাইল সড়কে টেঙ্গুরিয়াপাড়ায় অরক্ষিত রেলগেট রয়েছে। রেলগেটের দুই প্রান্তে বড় এবং মোটা আকারে দুটি স্পিডব্রেকার (গতিনিয়ন্ত্রক) রয়েছে। গেটের দুই প্রান্তে বসতভিটা ও লতাপাতায় সড়কটি প্রায় ঢেকে গেছে। দোকানদার আব্দুল ওয়ারেছ মিয়া জানান, প্রতিদিন প্রায় দুই হাজার যানবাহন রেলক্রসিং পার হয়ে সড়কে চলাচল করে থাকে। এ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী ও স্থানীয়রা পারাপার হয়। প্রায় সময়ই তিনি দোকান ফেলে জনস্বার্থে গেটম্যানের দায়িত্ব পালন করেন বলে জানান। রেললাইনের কর্মচারী রুবেল মিয়া জানান, বাসাইলের হাবলা ইউনিয়নের টেঙ্গুরিয়াপাড়া থেকে ৬ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে তিনি রেললাইনের দেখভাল করেন। তার দায়িত্বে থাকা ছয় কিলোমিটারের মধ্যে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ অরক্ষিত রেলক্রসিং রয়েছে। যেগুলো বাসাইলের টেঙ্গুরিয়াপাড়া, পাটখাকুরি ও সোনালিয়ায় অবস্থিত। মির্জাপুর উপজেলার মহেড়া রেলস্টেশনের সহকারী মাস্টার রকিবুল হাসান জানান, টাঙ্গাইলের ইব্রাহিমাবাদ রেলস্টেশন থেকে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত ৩০টি অরক্ষিত রেলক্রসিং রয়েছে। এ রেললাইনে ডাবল লাইনের কাজ হবে বলে আশা করছেন। টাঙ্গাইলের ঘারিন্দা রেলস্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার তৌহিদুর রহমান জানান, ইব্রাহিমাবাদ থেকে মির্জাপুর পর্যন্ত অরক্ষিত রেলক্রসিংগুলোর বিষয়ে দ্রুতই রেল কর্তৃপক্ষ কাজ করবে।