মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) গ্রাহকরা টাকা কেটে নেওয়ার এমন এসএমএস পেয়ে সোনালী ব্যাংক ভূঞাপুর শাখায় ভিড় জমান। আতঙ্কিত গ্রাহকরা অনেকেই তাদের অ্যাকাউন্ট দেখতে ভিড় করছেন।
সরেজমিনে জেলার ভুঞাপুর শাখা সোনালী ব্যাংকে গিয়ে দেখা গেছে, হিসাব নম্বর থেকে টাকা কেটে নেওয়ার বিষয়ে গ্রাহকরা ব্যাংকে ভিড় করছেন। তাদের নিজেদের অ্যাকাউন্ট থেকে কীভাবে টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে সেই বিষয়টি জানতে এবং ফেরতের জন্য আসছে। গ্রাহকদের টাকা কেটে নিয়েছে এমন খবরে অন্য গ্রাহকরাও ব্যাংককে ভিড় করছেন।
জানা গেছে, ভুঞাপুর শাখা সোনালী ব্যাংকে চাকরিজীবীরা ব্যক্তিগত ঋণ নিয়েছেন। সেই অনুযায়ী অ্যাকাউন্টে প্রতিমাসের বেতনের টাকা থেকে ঋণের টাকা কেটে নেওয়া হয়। কিন্তু প্রতিমাসে ঋণের টাকা কেটে নেওয়ার পরও অ্যাকাউন্টে থাকা সবগুলো টাকা একসঙ্গে কেটে নেওয়া হয়েছে। তবে একসঙ্গে অ্যাকাউন্টের সবগুলো টাকা কী কারণে কেটে নেওয়া হয়েছে সেটার বিষয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। তবে সঞ্চয়ী হিসাব অ্যাকাউন্টে থাকা গ্রাহকদের সব টাকা কেটে নিয়ে মোবাইলে এসএমএস পাঠানো হয়েছে। এছাড়া কালিহাতীতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অ্যাকাউন্ট থেকে একইভাবে টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে।
ভুঞাপুর শাখা সোনালী ব্যাংকের গ্রাহক হাসান বিন রশিদ বলেন, সকালে মোবাইলে এসএমএস এসেছে। সেখানে দেখি আমার অ্যাকাউন্টে জমাকৃত ১ লাখ ৮১ হাজার টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে। পরে ব্যাংকে এসে যোগাযোগ করেছি কিন্তু কোনো সমাধান পায়নি।
গ্রাহক শামীমা আক্তার বলেন, অ্যাকাউন্টের সবটাকা কেটে নেওয়া হয়েছে। ব্যাংকে ঋণ ছিল কিন্তু সেটা প্রতিমাসে কেটে নেওয়া হয়। কিন্তু একসঙ্গে অ্যাকাউন্টের সব টাকা কেটে কীভাবে নিল। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কোনো সমাধান করেনি।
ভুঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ওমর ফারুক বলেন, স্ত্রীর অ্যাকাউন্ট থেকে ১ লাখ ৫১ হাজার টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু কেন টাকা কেটে নিয়েছে সেটা জানিনা। অনেক গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে একইভাবে টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে।
গ্রাহকদের টাকা গায়েব হওয়ার বিষয়ে ভুঞাপুর শাখা সোনালী ব্যাংকের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার (ম্যানেজার) খন্দকার রাইসুল আমিন কোনো মন্তব্য করেননি।
সোনালী ব্যাংক প্রিন্সিপাল অফিস ঘাটাইলের ডিজিএম আব্দুল্লাহ ফয়সাল বলেন, সিস্টেমের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট থেকে অটোমেটিক টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে। সিস্টেমের সমস্যার কারণে এটা হয়েছে বলে হেড অফিস থেকে জানানো হয়েছে। এই ঘটনায় আমরা বিব্রত অবস্থায় আছি। তবে গ্রাহকদের টাকা আবার ফেরত দেওয়া হবে। কত কতজন গ্রাহকের একাউন্টে এমন ঘটনা ঘটেছে সেটা জানা যায়নি।
উল্লেখ্য, এর আগে ভুঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী শাখা সোনালী ব্যাংকের গ্রাহকদের সঞ্চয়ী অ্যাকাউন্ট থেকে ম্যানেজার কর্তৃক প্রায় ৫ কোটি আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে।