মধুপুরের প্রথম অনলাইন সংবাদপত্র

রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:৩৩ পূর্বাহ্ন

First Online Newspaper in Madhupur

টাঙ্গাইলে বিষ দিয়ে পাখি শিকার, জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে!

সংবাদ দাতার নাম
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০২৪
  • ১৭৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ শীত মৌসুমে গ্রামাঞ্চলের বিল ও খোলা মাঠে অতিথি পাখির আনাগোনা বেড়ে যায়। এই সুযোগে টাঙ্গাইলে অভিনব কায়দায় পুঁটি মাছের পেটে বিষ দিয়ে বক শিকার করছে এক শ্রেণির অসাধু শিকারিরা।

খাওয়ার জন্য এই বক শিকার হয়। সেই সঙ্গে বিষযুক্ত মাছ খেয়ে শিকারির হাতে ধরা না পড়ে বকগুলো মারা যাচ্ছে। এতে মৃত পাখি থেকে গন্ধ ছাড়াচ্ছে, নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ।

ভূঞাপুর উপজেলার চরনিকলা বিল, কয়েড়া ধোপা চড়া বিল, আমুলা বিল, বাসাইল উপজেলার বর্ণি বিল, বার্থা বিল, বালিয়া বিল, নিরাইল বিল, কালিহাতী উপজেলার চারান বিল, সখীপুরের নকিল বিলসহ বিভিন্ন এলাকার মাঠে অল্প পানিতে পুঁটি ও চ্যালা মাছের পেটে সানফুরান জাতীয় বিষ ঢুকিয়ে রেখে দেওয়া হয়।

বক, পানকৌড়ি, বুনোহাঁস, চিল, ডগমখুর, শামুকভাঙ্গাসহ বিভিন্ন ধরনের পাখি এসে এসব মাছ খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে দূরে অপেক্ষারত শিকারি এসে পাখি ধরে জবাই করেন। পরবর্তীতে তারা স্থানীয় বাজারে বিভিন্ন দামে এসব পাখি বিক্রি করেন।

লাইলোনের সুতো দিয়ে তৈরি ফাঁদে পাখি শিকারের ঘটনা ঘটছে। তাছাড়া ব্লাটাল ও মারবেলের মাধ্যমেও দূর থেকে বক শিকার করছে শিকারিরা।

সরেজমিনে কয়েকজন শিকারির সঙ্গে কথা হয়। তারা জানান, শীতের মৌসুমে শখ করে বিল থেকে বক, পান কৌড়ি, বুনোহাস, ডগমখুর, শামুকভাঙ্গা, মাছরাঙ্গাসহ বিভিন্ন ধরনের পাখি শিকার করে তারা।

এগুলো বিষ জাতীয় দ্রব্য বা ব্লাটালের মাধ্যমে দূর থেকে শিকার করে। তবে বিষ খেয়ে অসুস্থ ও ব্লাটালের মাধ্যমে ছোঁড়া মারবেলের আঘাতে আহত হয়ে মাটিতে অজ্ঞান হয়ে পড়লে তারা জবাই করে। অনেকে আবার বেশি দামে বক বিক্রি করেন। একেকটি বক ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি করে। অন্যান্য পাখি প্রকার ভেদে বিক্রি করে তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিকারি বলেন, শীতের মৌসুমে পাখি শিকার করি। প্রতিদিন ৪০০-৫০০ টাকা বিক্রি করতে পারি। এতে বাড়তি আয় হচ্ছে। পড়াশোনার পাশাপাশি বিকাল বেলা পাখি শিকার করতে বিলে আসি।

বাসাইলের কাউলজানী গ্রামের বিনা বেগম বলেন, ‘আমি ১০টি হাঁস লালন-পালন করি। প্রতিদিন বিলে শামক খাওয়ার জন্য হাঁস দিয়ে আসি। অনেকে বিলে বকসহ বিভিন্ন পাখি শিকার করে। তারা  মাছের মধ্যে বিষ দিয়ে ছিটিয়ে রাখে। এই বিষযুক্ত মাছ খেয়ে আমার তিনটি হাঁসও মারা গেছে। প্রশাসনের কাছে জোড় দাবি জানাচ্ছি। এভাবে পাখি শিকার বন্ধ করা হোক।’

একই গ্রামের শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘এই শীত মৌসুমে পাখি শিকার বেড়েছে। বিষযুক্ত মাছ খেয়ে বকসহ বিভিন্ন পাখি অজ্ঞান পড়ে। শিকার করা পাখি ধরতে না পারলে অন্যস্থানে মরে গিয়ে গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।’

সাইফুল ইসলাম নামে আরেকজন বলেন, ‘সঠিক নজরদারি ও জনসচেতনতার অভাবে পাখি শিকার বেড়েছে। পাখি শিকার দণ্ডনীয় অপরাধ জেনেও তারা বিরত থাকছে না। এমনিতেই দেশিয় পাখি বিলুপ্তের পথে। যারা পাখি শিকার করে তাদের বিরেুদ্ধ জেল ও জরিমানার দাবি জানাচ্ছি।’

টাঙ্গাইল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদুজ্জামান বলেন, ‘কেউ অতিথি পাখি শিকার করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা এসব পাখি অবাধে শিকার করছে তাদেরকে বিরত থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি।’

সংবাদ টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

The Trend (Online Shop)

©2024 All rights reserved
Design by: POPULAR HOST BD
themesba-lates1749691102
Verified by MonsterInsights