টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ধলাপাড়া ইউনিয়নের সরাসাক ও গাংগাইর গ্রামের মধ্যদিয়ে বয়ে যাওয়া বংশাই নদের উপর ৫০ বছরেও নির্মাণ হয়নি একটি সেতু। সেতুর অভাবে চরম দুর্ভোগে আছেন ১৫ গ্রামের প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। বর্ষা মৌসুমে নৌকা ও শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকোই তাদের একমাত্র ভরসা। এলাকাবাসী দেশ স্বাধীনের পর থেকেই এখানে একটি সেতু নির্মাণের দাবি করে আসছেন।
জানা যায়, উপজেলার ধলাপাড়া ও দেওপাড়া ইউনিয়নের গাংগাইর, সরাশাক, আমজানি, বাদে-আমজানি, গোলাবাড়ি, মলাজানি, জুগিয়াটেংগর, নয়ারহাট, সরিষাআটা, শরাতৈল, বর্গাসহ ১৫টি গ্রামের মানুষকে যাতায়াত করতে হয় বংশাই নদী পার হয়ে। এলাকার সরাসাক ও গাংগাইর গ্রামে রয়েছে দু’টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ ছাড়া ধলাপাড়া বাজার, মসজিদ-মাদ্রাসা, কলেজ ও মাধ্যমিক বালক এবং বালিকা বিদ্যালয় রয়েছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শত শত শিক্ষার্থী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বংশাই নদী পার হয়ে বিদ্যালয়ে যায়। সরাশাক গ্রামের স্কুলশিক্ষক মজিবর রহমান বলেন, বংশাই নদে সেতু না থাকায় গ্রামে পাকা সড়ক হয়নি। শিক্ষার্থীদের স্কুল-কলেজে যাতায়াত, ফসল পরিবহনসহ উপজেলা সদরে যেতে হয় এ নদী পার হয়ে। ভরা বর্ষায় খেয়া নৌকাডুবি এবং শুকনোয় কাঠের সাঁকো পার হতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
একই গ্রামের আলমগীর হোসেন বলেন, বিভিন্ন সময়ে জনপ্রতিনিধিরা প্রতিশ্রুতি দিলেও বিগত ৫০ বছরে বংশাই নদে কোনো সেতু নির্মিত হয়নি। অথচ প্রতিদিন ১৫টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষকে এ নদীর উপর দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। আমি সরকারের কাছে দ্রুত সেতু নির্মাণের দাবি জানাই। খেয়াঘাটের মাঝি দুলাল চন্দ্র দাস বলেন, আমার পরিবারের বাপ-দাদারা বৃটিশ আমল থেকে এ ঘাট পরিচালনা করে আসছে। আমি প্রায় ২৬ বছর ধরে এ ঘাটে নৌকা দিয়ে মানুষ পারাপার করছি। এ জন্য বছরে সবার কাছ থেকে নির্দিষ্ট টাকা এবং ধান নিয়ে থাকি। বর্ষা মৌসুমে খেয়া থাকলেও শুকনো মৌসুমে বাঁশের সাঁকো তৈরি করি। তবে এখানে একটি সেতু হলে আমাদের কষ্ট অনেক লাঘব হবে।
ধলাপাড়া ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফি বলেন, সেতু নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন ও সাবেক এমপিকেও বারবার অবগত করেছি। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবু সাঈদ বলেন, বংশাই নদে সেতুর অভাবে স্থানীয় জনগণের দুর্ভোগের বিষয়টি জানা আছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে সেতু নির্মাণের বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হবে।