স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে উপজেলার চৌউরাশ-হরিনাচালা সড়কের তিন কিলোমিটার সড়ক পাকা হয়নি। এতে দুর্ভোগে পোহাচ্ছেন উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ। বিশেষ করে বেহাল কাঁচা সড়কটির কারণে বর্ষা মৌসুমে এ অঞ্চলের মানুষের ভোগান্তি বেড়ে যায় কয়েকগুণ। এমনকি বিয়ের জন্য পাত্রপাত্রী দেখতে এসে বেহাল রাস্তার কারণে অনেকেই ফিরে যান বলে জান গেছে। স্থানীয়রা দ্রুতই সড়কটি পাকাকরণের জন্য সরকারের কাছে দাবি করেছেন।
সড়কটিতে চলাচলে বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক, শিক্ষার্থী ও গর্ভবতী নারীরা পড়ছেন মারাত্মক সমস্যায়। এ ছাড়া জরুরি কোনো রোগীর জন্য অ্যাম্বুলেন্স আসার মতো কোনো ব্যবস্থাও নেই। বর্ষাকালে ও সামান্য বৃষ্টি হলেই দুর্ভোগ চরমে ওঠে এ এলাকার বাসিন্দাদের।
‘এমপিদের ভোটের প্রয়োজনে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলে আমাদের আর কোনো খোঁজখবর রাখেন না। এই রাস্তার জন্য এলাকার অনেকের বিয়ে হচ্ছে না। বেহাল এ রাস্তা দেখেই পাত্র কিংবা পাত্রী পক্ষের লোকজন ফিরে যায়।’
জানা যায়, ঘাটাইল উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের চৌউরাশ-হরিনাচালা সড়কটি জনসাধারণের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বাধীনতার আগে সড়কটি নির্মাণ হলেও দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সড়কটিতে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। প্রতিদিন গ্রামীণ এ সড়ক দিয়ে ৪-৫ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করেন। এসব গ্রাম থেকে ঘাটাইল ও জেলা শহরে যাওয়ার একমাত্র রাস্তা এটি। এছাড়া প্রতিদিন স্কুল-মাদরাসার শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের মধ্যে যাতায়াত করতে হয়। এর ফলে শিশুদের লেখাপড়া, কৃষিকাজ, ফসল আনা-নেওয়া, গ্রাম থেকে শহরে যেতে নানাভাবে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। একটু বৃষ্টিতে কাঁদা মাড়িয়ে চলতে হয় মানুষকে। অসুস্থ রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অ্যাম্বুলেন্স আসতে না পারায় গর্ভবতী নারীরা পড়ছেন বিড়ম্বনায়। সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে আর্থসামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও পিছিয়ে পড়েছে এ এলাকা।
স্থানীয়রা বলছেন, এ সড়কের কারণে আমাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে যে সরকারই ক্ষমতায় এসেছে স্থানীয় এমপি ও নেতারা শুধু প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু ভোটের পর কোনো জনপ্রতিনিধিকে পাওয়া যায় না। সড়কটিতে কোনো সরকারের আমলেই উয়ন্ননের কাজ করেনি কেউ। কোনো সরকারি অফিস থেকেও আমাদের কোনো আশ্বাস দেয়নি। এলজিইডি অনেক গ্রামীণ রাস্তা করলেও আজ পর্যন্ত তাদের কোনো কার্যক্রম চোখে পড়েনি।
স্থানীয় বাসিন্দা গাজী খান বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই আমাদের এ রাস্তার এমন অবস্থা। অনেক এমপি ও মন্ত্রী হলেও আমাদের এ রাস্তাটি ঠিক করে দেয়নি। ভোটের সময় ভোট চাইতে আসে। নির্বাচিত হলে পরে আর খবর থাকে না।
‘স্বাধীনতার পর থেকেই আমাদের এ রাস্তার এমন অবস্থা। অনেক এমপি ও মন্ত্রী হলেও আমাদের এ রাস্তাটি ঠিক করে দেয়নি। ভোটের সময় ভোট চাইতে আসে। নির্বাচিত হলে পরে আর খবর থাকে না।’
রফিকুল বলেন, এমপিদের ভোটের প্রয়োজনে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলে আমাদের আর কোনো খোঁজখবর রাখেন না। এই রাস্তার জন্য এলাকার অনেকের বিয়ে হচ্ছে না। বেহাল এ রাস্তা দেখেই পাত্র কিংবা পাত্রী পক্ষের লোকজন ফিরে যায়।
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা আক্তার আলী বলেন, অনেকে প্রতিশ্রুতি দিলেও রাস্তার কোনো উন্নয়ন হয়নি। স্কুল-মাদরাসায় যাওয়ার সময় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগে পড়তে হয়। বিশেষ করে বিয়ের জন্য মেয়ে দেখতে এসে রাস্তার কারণে অনেকেই ফিরে যায়।
দেওপাড়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুস ছালাম বলেন, দেওয়াপাড়া ইউনিয়নের অনেক রাস্তারই এমন বেহাল অবস্থা। স্বাধীনতার পর থেকেই আমাদের এ রাস্তার জন্য দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পাত্রপাত্রী দেখতে এসে বেহাল রাস্তার কারণে অনেকেই ফিরে যান। দ্রুতই রাস্তা পাকাকরণের দাবি করছি।
এ বিষয়ে ঘাটাইল উপজেলা প্রকৌশলী মোহামামদ ফজলুর রহমান বলেন, রাস্তাটির সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা নেই। তিনি স্থানীয় তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।