নিজস্ব প্রতিনিধিঃ মফস্বলে সাংবাদিকতার প্রসারে ভূমিকা রাখায় বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক দুর্লভ বিশ্বাস মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি মির্জাপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার ও সমকাল পত্রিকার মির্জাপুর প্রতিনিধি ছিলেন।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) ও রাতে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৭১ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই কন্যাসহ বহু গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। অধ্যাপক দুর্লভ বিশ্বাসের বাড়ি মির্জাপুর পৌরসভার বাওয়ার কুমারজানী গ্রামে।
২০২২ সালে মফস্বলে সাংবাদিকতার প্রসারে ভূমিকা রাখায় টাঙ্গাইল জেলায় তাকে বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।
দুর্লভ বিশ্বাস উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র থাকাকালীন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সারা দিয়ে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহন করেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর পুনরায় লেখাপাড়া শুরু করেন। ১৯৭৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজকল্যাণ বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৮২ সালে মির্জাপুর কলেজে শিক্ষাকতা শুরু করেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতি এবং বংলার বাণী পত্রিকায় সক্রিয়ভাবে সাংবাদিকতা করেন। ১৯৯২ সালে দৈনিক সংবাদে মির্জাপুর প্রতিনিধি হিসেবে কাজ শুরু করেন। ২০০০ সালে যুগান্তর পত্রিকার শুরু থেকে ছয় বছর এবং পরে সমকাল পত্রিকার শুরু থেকে মির্জাপুর প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছিলেন। আগেও তিনি বিভিন্ন স্থানীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকায় কাজ করেন।
তিনি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের কমান্ডার হিসেবে টানা দুই মেয়াদ দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি সার্বক্ষনিক বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ছিলেন। মফস্বলে সাংবাদিকতার প্রসারে ভূমিকা রাখায় তিনি ২০২২ সালে বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।
তিনি দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্ট ও পাইলস রোগে ভুগছিলেন। মঙ্গলবার দুপুরে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে তার মৃৃত্যু হয়।
বুধবার (৬ মার্চ) বেলা ১১টায় উপজেলা পরিষদ চত্তরে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা শেষে পারিবারিক সমাধিস্থলে তাকে সমাহিত করা হয়।
অধ্যাপক দুর্লভ বিশ্বাসের মৃত্যুতে টাঙ্গাইল জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাবেক সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান ফারুক, টাঙ্গাইল-৭ মির্জাপুর আসনের সংসদ সদস্য খান আহমেদ শুভ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এছাড়া উপজেলা পরিষদ, উপজেলা প্রশাসন, মির্জাপুর শহীদ ভবানী প্রসাদ সাহা সরকারি কলেজ, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমানউ কাউন্সিল, টাঙ্গাইল ও মির্জাপুর প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়েছে।