মধুপুরের প্রথম অনলাইন সংবাদপত্র

শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:৫৬ অপরাহ্ন

First Online Newspaper in Madhupur

টাঙ্গাইলে প্রতিবন্ধি কিশোরীর ভাতার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পৌরসভার এক স্টাফের বিরুদ্ধে

সংবাদ দাতার নাম
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪
  • ১৩২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইল পৌরসভার এক স্টাফের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধি কিশোরীর ভাতার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। প্রায় তিন বছর যাবৎ ওই টাকা আত্মসাৎ করছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। সম্প্রতি বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ায় তিনগুণ বেশি টাকা দিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারকে ম্যানেজ করার আশ্বাসসহ ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে মড়িয়া হয়ে উঠেছেন কতিপয় মাতাব্বররা বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

মেহেদী (২২) টাঙ্গাইল পৌরসভার পানি সরবরাহ কেন্দ্র ১ এ নলকূপ মিস্ত্রি পদে কর্মরত। তিনি টাঙ্গাইল পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের রবি মিয়ার ছেলে ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারুক হোসেনের ভাতিজা। অভিযুক্ত মেহেদীর বাবা রবি মিয়া কাউন্সিলর ফারুক হোসেনের ফুফাতো ভাই বলে নিশ্চিত করেছেন স্থানীয়রা।

প্রতিবন্ধি কিশোরীর ভাতার টাকা আত্মসাৎ করেছেন পৌরসভার স্টাফ মেহেদী, এটা খুবই দুঃখজনক বিষয়। অভিযোগের অধিকতর তদন্ত ও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও পৌর প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা।

সত্যতা জানতে ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধি কিশোরীর বাড়িতে যাওয়া হলে, লাবনী আক্তার তার নিজ নামে উত্তোলনকৃত বিগত ২০০৭ সালের (২৭ ডিসেম্বর) স্বাক্ষরিত টাঙ্গাইল পৌরসভার জন্মসনদ ব্যতিত দেখাতে পারেননি প্রতিবন্ধি ভাতার কার্ড। এ সময় কিশোরীর চাচা, চাচী উপস্থিত থাকলেও উনারা বক্তব্য দিতে রাজি হননি। এছাড়া বাবা লাল মিয়াকে পাওয়া যায়নি।

জেলা সমাজ সেবা অফিস সূত্র জানায়, মাসে ৮৫০ টাকা হারে প্রতিবন্ধি ভাতা দেয়া হয়। তিন মাস অন্তর অন্তর ভাতাভোগীর নগদ একাউন্টে ২৫৫০ টাকা প্রদান করা হচ্ছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পরই অলোয়া তারিনীর লাল মিয়ার বাক প্রতিবন্ধি কিশোরী লাবনী আক্তারের প্রতিবন্ধি ভাতার কার্ডটি করে দেন ফারুক হোসেন। পৌরসভায় চাকুরী আর উভয়েই কাউন্সিলরের আত্মীয় হওয়ার সুযোগ নিয়ে প্রতিবন্ধির ভাতার কার্ডটি করার সকল দায়িত্ব নেন অভিযুক্ত মেহেদী। তবে ভাতার কার্ডটি এখনও পাননি প্রতিবন্ধির পরিবার। সম্প্রতি অফিস মাধ্যমে প্রতিবন্ধি কিশোরীর ভাতার কার্ড অনুমোদন ও ভাতাপ্রাপ্তির বিষয়টি প্রকাশ পায়। কৌশলে মেহেদী প্রায় তিন বছর যাবৎ ওই ভাতার টাকা আত্মসাৎ করে আসছে বলে প্রতিবন্ধির বাবা লাল মিয়া স্থানীয়দের অবগত করেন। ঘটনাটি এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ায় স্থানীয় মাতাব্বররা তিনগুণ টাকা জরিমানা নিয়ে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে অভিযোগটি ধামাচাপা দিয়েছেন। এরপর থেকেই ভাতার টাকা নিয়ে আর কোন আলোচনা করছেন না প্রতিবন্ধি কিশোরীর বাবা লাল মিয়া। মেহেদী প্রতিবন্ধি কিশোরীর প্রায় অর্ধলাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।

বর্তমান কাউন্সিলরের সমর্থক লিটন মিয়া বলেন, পৌরসভার স্টাফ মেহেদী প্রতিবন্ধি লাবনীর টাকা আত্মসাৎ করেছেন। মেহেদী কাউন্সিলরের সমর্থক। আত্মসাতকৃত টাকা ফেরত দেয়াসহ মেহেদীর কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন তিনি।

অভিযুক্ত মেহেদী মুঠোফোনে অভিযোগটি কে দিয়েছেন জানতে চেলেও অভিযোগটি সত্য অথবা মিথ্যা বলে কোন মন্তব্য করেননি।

সত্যতা জানতে প্রতিবেদক টাঙ্গাইল পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের অলোয়া তারিনী এলাকার ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধি পরিবার ও অভিযুক্তসহ স্থানীয়দের বক্তব্য নেয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারুক হোসেন। তিনিসহ একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজল সরকার ও ট্রাক শ্রমিক নেতা শাহীনসহ বেশকয়েকজন যুবককে নিয়ে অভিযোগকারীর নাম জানার চেষ্টা চালানোসহ উত্তেজিত হয়ে প্রতিবেদকে চাঁদাবাজ বলে কটাক্ষ করেন ওই কাউন্সিলর। তবে এ ধরণের কোন অভিযোগ পাননি বলে জানিয়েছেন ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারুক হোসেন।

জরুরী ভিত্তিতে ভুক্তভোগীর নগদ একাউন্ট পরিবর্তন করার জন্য শহর সমাজ সেবা কর্মকর্তা বরাবর যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছেন টাঙ্গাইল সমাজ সেবা উপ-পরিচালক শাহ আলম। এছাড়াও অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে সামাজিক নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করতেও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীকে সমাজ সেবার মাধ্যমে সার্বিক সহযোগিতা করার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র সিরাজুল হক আলমগীর জানান, প্রতিবন্ধির ভাতার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সংবাদ টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

The Trend (Online Shop)

©2024 All rights reserved
Design by: POPULAR HOST BD
themesba-lates1749691102
Verified by MonsterInsights