নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বোর্ডের নিয়মনীতি উপেক্ষা করে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফরম পূরণে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও মডেল টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য থাকলেও তাদের টাকার বিনিময়ে ফরম পূরণ করছে। রবিবার (৫ মে) দুপুরে কালিহাতি উপজেলার এলেঙ্গা পৌর এলাকার সরকারি শামসুল হক কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা প্রথমে ক্লাস কক্ষে তালা ঝুলিয়া দেয়। পরে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার আশ্বাসে তা খুলে দেন।
এর আগে ভুক্তভুগী শিক্ষার্থীরা বিধি বর্হিভূতভাবে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করায় দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে তাদের ফরম পূরণ করতে দিবেনা বলেও হুমকি দিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য মাসিক বেতন ২০২২ সালের মার্চ মাস থেকে গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সরকারের সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে কলেজ অধ্যক্ষ বেতন আদায় করছেন। এছাড়াও বাধ্যতামূলকভাবে ৭০০ জন পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে অকৃতকার্যদের কাছ থেকে ৬০০ টাকা করে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
ঢাকা বোর্ড কর্তৃক এইচএসসি পরীক্ষার জন্য মানবিক বিভাগের ফরম পূরণের জন্য ২১২০ টাকা এবং বিজ্ঞান বিভাগের জন্য ২৬৮০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। সেখানে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে তিন হাজার ৪৫০ টাকা এবং বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩৮৭০ টাকা আদায় করে নিয়েছেন। তবে যারা অকৃতকার্য তাদের জরিমানা বাবদ ৬০০ টাকার টাকার কোনো রসিদ দেয়নি শিক্ষার্থীদের। শিক্ষার্থীরা অভিযোগে বলেন, অধ্যক্ষ নিয়ম বহির্ভূতভাবে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। অতিরিক্ত টাকার বিষয়ে প্রতিবাদ করলে পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ারও হুমকি দেন।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ আনোয়ারুল কবির বলেন, ফরম পূরণের জন্য ঢাকা বোর্ডের নির্ধারিত টাকা নিচ্ছি। অতিরিক্ত কোন টাকা নেওয়া হচ্ছে না। বিনা রসিদে টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোনো শিক্ষার্থীর রসিদ প্রয়োজন হয় না তাই দেই না। আর এই অভিযোগগুলো মিথ্যা ও বানোয়াট।
কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল নয়া মিয়া বলেন, আমি টাকা আদায়ের বিষয়ে কিছুই বলতে পারবো না। আপনারা অধ্যক্ষ স্যারের সাথে কথা বলেন বলে প্রতিবেদকের মোবাইল ফোনটি কেটে দেন।
কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সরকারি শামসুল হক কলেজের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে শুনলাম এই ধরনের টাকা নিচ্ছে কোচিং করানোর কথা বলে। আমি সভাপতি প্রতিষ্ঠানের আমি জানি না। এখনি আমি অধ্যক্ষকে ডাকিয়ে এনে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এ এম জহিরুল হায়াত বলেন, অতিরিক্ত ফি নেওয়ার কোন প্রকার রুলস নেই। যদি অতিরিক্ত টাকা আদায় করে থাকে তাহলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।