নিজস্ব প্রতিনিধিঃ প্রায় আড়াই মাস আগে কক্সবাজারের টেকনাফে বেড়াতে গিয়ে মিয়ানমারে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর দ্বারা অপহৃত হয় টাঙ্গাইলের কালিহাতীর বল্লা ছোট গোরস্থান পাড়া গ্রামের মৃত আবু সাইদের ছেলে মনির হোসেন (২৫)। দীর্ঘদিন সেখানে মিয়ানমার সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর দ্বারা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন তিনি। নির্যাতনের ভিডিও পরিবারের কাছে পাঠিয়ে ৪ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করলেও অস্বচ্ছলতা ও দারিদ্র্যতার কারনে মুক্তিপণ দেওয়া সম্ভব হয়নি পরিবারের। এক পর্যায়ে মনির সিদ্ধান্ত নেয় সেখান থেকে পালিয়ে আসার। সুযোগ বুঝে পালিয়ে যাওয়ার সময় বিভিন্ন দেশের লোকদের সাথে আটক হন মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হাতে। পরে বাংলাদেশীসহ আটক হওয়া বিভিন্ন দেশের নাগরিকেরা পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে দেশে ফিরে আসার ব্যবস্থা করলেও পরিবারের দারিদ্র্যতার কারনে মনিরের পক্ষে তা সম্ভব হয়নি। তখন ব্যাংককস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস তাকে পরিবারে ফেরাতে প্রয়োজনীয় টাকা ও কালিহাতী উপজেলা প্রশাসন অন্যান্য যাবতীয় সহযোগিতা করেন। গতকাল বুধবার কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে কথাগুলো বলেন উদ্ধার হওয়া যুবক মনির হোসেন।
বাংলাদেশ দূতাবাস ও উপজেলা প্রশাসনের এ সহযোগিতা পূর্ণ রূপ পায় ১৯ মার্চ বুধবার দুপুর ২টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার খায়রুল ইসলাম মনিরকে তার বড় বোন জাকিয়ার নিকট হস্তান্তর করার মধ্য দিয়ে।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার খায়রুল ইসলাম বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয় মিয়ানমারে আটক হওয়া ১৮ জন বাংলাদেশীর মধ্যে ১৭ জন তাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে দেশে ফেরানোর প্রয়োজনীয় টাকা ব্যবস্থাও করেছেন। শুধু কালিহাতীর মনিরের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তখন আমি তাঁর পরিবারের সাথে যোগাযোগ করলে তাঁরা চেষ্টা করেও প্রয়োজনীয় টাকা ব্যবস্থা করতে অপারগ হোন। এ পরিস্থিতিতে তাঁদেরকে দিয়ে একটি আবেদন লিখিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রয়োজনীয় টাকা বরাদ্দের ব্যবস্থা করি। এরপর তাঁর ট্রাভেল কার্ড ও বিমান টিকেটের ব্যবস্থা হয়। বুধবার দিবাগত রাত ১ টায় ওনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।
তিনি আরও বলেন, বিমানবন্দর থেকে তাঁকে নিরাপদে পরিবারের নিকট পৌঁছাতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি ভাঢ়া গাড়ি ও আমার দুজন কর্মচারীকে পাঠিয়ে কালিহাতীতে আনি। পরে বুধবার (১৯ মার্চ) দুপুরে আমার কার্যালয় থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিকবৃন্দের উপস্থিতিতে বড় বোন জাকিয়ার নিকট মনির হোসেনকে হস্তান্তর করি।