নিজস্ব প্রতিনিধিঃ উপমহাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সন্তান, প্রথম মুসলিম প্রিন্সিপাল, শিক্ষা বিস্তারে অগ্রপথিক, সাহিত্যিক, নাট্যকার, প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ, শিক্ষাগুরু, জ্ঞানতাপস, সমাজ সংস্কারক, সাবেক এমএনএ এবং বিকেবির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও একুশে পদক বিজয়ী সাহিত্যিক ও বাংলা একাডেমির ফেলো প্রিন্সিপাল ইবরাহীম খাঁ’র ১৩০ তম জন্মবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করেছে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর ইবরাহীম খাঁ সরকারি কলেজ।
রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে ইবরাহীম খাঁ সরকারি কলেজ মসজিদ প্রাঙ্গণে ইবরাহীম খাঁ মাজারে কলেজের অধ্যক্ষ, শিক্ষক, কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রীরা তার মাজারে পুস্পস্তবক অর্পণ শেষে ও মাজার জিয়ারত করে। পরে বাদ যোহর কলেজ মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর কামরুজ্জামান সরকার, শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন তালুকদারসহ কলেজের সকল বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক, কর্মচারী ও কলেজের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, প্রিন্সিপাল ইবরাহীম খাঁ ১৮৯৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার শাহবাজনগর (বিরামদী) গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন এবং ১৯৭৮ সালে ২৯ মার্চ মৃত্যু বরণ করেন। ৮৪ বছরের জীবনে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন স্কুল, কলেজ, মাদরাসাসহ অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
প্রিন্সিপাল ইবরাহীম খাঁ কর্মময় জীবনে স্বল্পসময় ময়মনসিংহ জজ কোর্টে আইন পেশায় সম্পৃক্ত ছিলেন। পরে টাঙ্গাইলের করটিয়া সা’দৎ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল, ঢাকা মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের প্রেসিডেন্ট, বাংলা কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সচিব, পূর্বপাকিস্তানে জাতিসংঘের প্রতিনিধি, প্রাদেশিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি, ১৯৬৪ সালে বাংলার প্রাদেশিক আইন সভার সদস্য, ১৯৬২ সালে জাতীয় পরিষদের সদস্য, ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য, বাংলা একাডেমির নির্বাচিত সদস্য, পূর্ব বাংলার জাতীসংঘের সাধারণ পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।
এছাড়াও তিনি বাংলা একাডেমি ও একুশে পদকে ভূষিত হন। ভাষা আন্দোলনের অন্যতম উৎসশক্তি ও ভাষাসংগ্রামী ছিলেন। শুধু তাই নয়, বাংলা সাহিত্যে তিনি উল্লেখ যোগ্য অবদান রেখে গেছেন। তাঁর ছোঁয়ায় আজকের আধুনিক টাঙ্গাইলস্থ ভূঞাপুর উপজেলার স্বাপ্নিক ও রূপকার। তিনি প্রায় ১৩০টি গ্রন্থের রচয়িতা। অপরদিকে, তাঁর নামে প্রিন্সিপাল ইবরাহীম খাঁ স্মৃতিসংঘ, স্থানীয় ইবরাহীম খাঁ ভূঞাপুর ও ইবরাহীম খাঁ আলোকিত ভূঞাপুর নামে সামাজিক সংগঠন করা হয়েছে।