মধুপুরের প্রথম অনলাইন সংবাদপত্র

মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৯:২৭ অপরাহ্ন

First Online Newspaper in Madhupur

ঘাটাইলে হাঁস পালনে ঈশিতার ঘুরে দাড়াঁনোর গল্প

সংবাদ দাতার নাম
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৯০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ নিভৃত গ্রামাঞ্চলের বাসিন্দা গৃহবধূ ঈশিতা রানি। স্বামী পরিমল চন্দ্র কাজ করেন দিনমজুরের। দুই সন্তানসহ চার সদস্যের টানাপোড়েন এক সংসার। একমাত্র স্বামীর আয় দিয়ে সংসার চালাতে গিয়ে চোখে ঘোর অন্ধকার নেমে আসে ঈশিতার।

সংসারের অভাব আর হতাশার হাতছানিকে উপেক্ষা করে স্বপ্ন দেখেন নিজে কিছু করার। স্বামীর আয়ের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে ২০০১ সালে হাঁস পালন করে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার স্বপ্ন দেখেন ঈশিতা।

ঈশিতা রানির বাড়ি টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ধলাপাড়া ইউনিয়নের মুসুল্লিপাড়া গ্রামে। বাড়ির চার পাশে বিলের উন্মুক্ত জলাশয়ে হাঁস পালন শুরু করেন ঈশিতা। এর জন্য আলাদা কোনো ঘরের প্রয়োজন হয়নি। প্রয়োজন হয়নি বাড়তি খাবারের। প্রথমে ধারদেনা করে ৫০টি হাসের বাচ্চা দিয়ে শুরু করেন ছোট একটি খামার। বিলের কিনারায় জালের বেড়া দিয়ে সেখানে হাঁস রাখেন।

পাশেই রয়েছে বাঁশের চাটাই এবং পলিথিনে ঘেরা আরেকটি টং ঘর। সেখানে রাতে থেকে হাঁস পাহারা দেন ঈশিতা এবং তার স্বামী। এক দিকে স্বামীর সংসারের ঘানি, অন্য দিকে নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করে সাফল্যের মুখ দেখতে শুরু করেছেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের এই নারী উদ্যোক্তা। তার এই প্রচেষ্টা এবং ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প দেখে এলাকার অনেকেই আগ্রহী হচ্ছে হাঁস পালনে।

ধালাপাড়া সাগরদিঘী সড়কের ঘোড়াধহ সেতু থেকে দক্ষিণ দিকে চলে গেছে আঁকাবাকা মেঠো পথ। সামনেই মুসুল্লিপাড়া গ্রাম। গ্রামটি নিচু এলাকা হওয়ায় প্রায় সারাবছরই পানি থাকে। গ্রামটির নাম মুসুল্লিপাড়া হলেও এখানে বাস করে ৯০ ভাগ হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষ। সেই গ্রামেই বাস করেন ঈশিতা রানি।

গত শুক্রবার বিকেলে হাঁসের খামারে গিয়ে কথা হয় ঈশিতা রনির সাথে। তিনি বলেন, ‘ধারদেনা সব পরিশোধ করেছি। বিগত সময়ের অভিজ্ঞতা এবং লাভের জমানো ১৫ হাজার টাকা দিয়ে এবছর খামারে ৩০ টাকা করে ৫০০ হাঁসের বাচ্চা তুলেছি। বর্তমানে আমার খামারে প্রায় ৪০০ হাঁস ডিম দিচ্ছে। কিছু হাঁস মারা গেছে, বাকিগুলো পুরুষ হাঁস।’

তিনি বলেন, ‘হাঁসের ডিমের বাজার ভালো থাকায় প্রতিদিন ডিম বিক্রি করে আয় হচ্ছে প্রায় চার হাজার টাকা। মাসে আয় এক লাখ ২০ হাজার টাকা। সারাদিন হাঁসগুলো উন্মুক্ত জলাশয়ে খাবার খেয়ে নির্দিষ্ট সময়ে খামারে ফিরে আসে। ডিম পাড়ার সময়ে দুপুরে বাড়তি খাবার হিসেবে ধানের কুড়া দিতে হয়। মাঝে মাঝে হাঁসের ছোটখাটো রোগবালাই হলে ওষুধ দিতে হয়। তাছাড়া অন্য কোনো খরচ নেই।’

তিনি আরো বলেন, ‘ডিম পাড়া শেষ হলে বা হাঁসের বয়স হলে প্রতিটি তিন শ’ থেকে পাঁচ শ’ টাকা দরে বিক্রি করা যায়।’

হাঁস বিক্রি করেও প্রায় দুই লাখ টাকা আয় হবে বলে জানান ঈশিতা।

উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো: বাহাউদ্দিন সারোয়ার রিজবী বলেন, ‘ঈশিতা রানি উপজেলার একজন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা। আমরা আশা করছি, তার সফলতা দেখে এ উপজেলার অন্যান্য নারী-পুরুষ অনুপ্রাণিত হয়ে খামারি হয়ে আত্মকর্মসংস্থানের সৃষ্টি করবে।’

সংবাদ টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

The Trend (Online Shop)

©2024 All rights reserved
Design by: POPULAR HOST BD
themesba-lates1749691102
Verified by MonsterInsights