নিজস্ব প্রতিনিধিঃ হাঁড় কাঁপানো শীতকে অপেক্ষা করে টাঙ্গাইলের কৃষকরা বোরো ধানের চারা রোপনে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে এই ব্যস্ত সময়ে শ্রমিক সংকট দেখা দেওয়ায় ২০০ থেকে ৩০০ টাকা অতিরিক্ত দিয়েও ধানের চারা রোপনের জন্য শ্রমিক না পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন বোরো চাষি কৃষকরা।
একইসাথে চাষাবাদেও বেড়েছে অনেক খরচ। একদিকে যেমন শ্রমিক সংকট, অপরদিকে অনেকে ধান চাষের জন্য আবাদি জমি বর্গা দিচ্ছেন।
সরেজমিনে জেলার ভূঞাপুর, ঘাটাইল, গোপালপুর, ধনবাড়ী, মধুপুর ও কালিহাতী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, উঁচু ও নিম্ন অঞ্চলের জমিতে সেচ দিয়ে ট্রাক্টরের মাধ্যমে হাল চাষ করে জমি প্রস্তুত করা হচ্ছে। কেউ ধানের বীজতলা থেকে চারা উঠাচ্ছেন, কেউ জমি সমতল করছে, কেউ সার ছিটাচ্ছেন, ও আবার কেউ ধানের চারা রোপন কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
কৃষক ও শ্রমিকদের দম ফেলার সময় নেই।
টাঙ্গাইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানা যায়—চলতি মৌসুমে এ জেলায় ধানের চারা রোপনের জন্য ১২ টি উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৭৬ হাজার ২০০ হেক্টর জমি। গত বছর ছিল ১ লাখ ৭৫ হাজার ২০০ হেক্টর জমি।
এছাড়া সরকারিভাবে এ বছর ১২ টি উপজেলা ও বিভিন্ন পৌরসভায় ১ লাখ ১ হাজার (বিঘা) কৃষকদের মাঝে ধানের বীজ ও কীটনাশক বিনামূল্যে কৃষি প্রণোদনা প্রদান করা হয়েছে।
ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের কয়েড়া গ্রামের রাশেদ আলী বলেন—গত কয়েকদিন ধরে ২ বিঘা জমি হাল চাষ করে ধানের চারা রোপনের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছি। এই প্রস্তুত জমিতে দ্রুত ধানের চাা রোপন না করতে পারলে মাটি জমে যাবে। তাই বাধ্য হয়ে ৫০০ টাকার পরিবর্তে ৭০০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। ২ বিঘাতে চারা রোপনে কমপক্ষে ৮ জন শ্রমিকে লাগবে। এতে বাড়তি আরও ২ হাজার টাকা বেশি খরচ হচ্ছে।’
দিনাজপুরের খানসামা থেকে ভূঞাপুর উপজেলার অলোয়া ইউনিয়নের চর অলোয়া গ্রামে ধানের চারা রোপনে কৃষি কাজ করতে আসা শ্রমিক ইসমাইল, টুটুল আহম্মেদ ও রমজান আলীসহ অনেকে বলেন, ‘আমাদের এলাকায় বেশ কিছুদিন আগে বোরো ধানের চারা লাগানো শেষ। তাই এ অঞ্চলে চলে আসছি। আমরা ১০ জন এসেছি ৭ দিন হয়েছে। চর অলোয়া গ্রামে একেকজন একেক বাড়িতে ৭০০ টাকা করে কাজ করতেছি।’
টাঙ্গাইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ দুলাল উদ্দিন বলেন, ‘চলতি মৌসুমে জেলার ১২টি উপজেলায় ১ লাখ ৭৬ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অপরদিকে, জেলায় ১ লাখ ১ হাজার (বিঘা) কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে কৃষি প্রণোদনা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া বোরো মৌসুমে শ্রমিকের সংকট দেখা দিয়ে থাকে। তবে, কৃষিতে আধুনিকতায়নের মাধ্যমে সংকট কমিয়ে আনা সম্ভব বলে মন্তব্য করেন তিনি।