নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীতে অবৈধভাবে বাঁধ (রাস্তা) নির্মাণ করে জেগে ওঠা চর কেটে বালু বিক্রির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে। উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের চিতুলিয়াপাড়া ও কোনাবাড়ি মৌজায় যমুনা নদীতে জেগে ওঠা চর কেটে বালু বিক্রি করছেন তারা। বালু বিক্রির কারণে এলজিইডি কর্তৃক নির্মিত নদী রক্ষা বাঁধের সড়ক ভেঙে যাচ্ছে। সেই সাথে ভাঙনরোধে নদীতে ফেলা ব্যাগ সরিয়ে বালুবাহী ট্রাক চলাচলের রাস্তা করা হয়েছে। একদিকে জেগে ওঠা চর কেটে বিক্রি করায় নদীতে অপরিকল্পিতভবে গভীরতার সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে ওই এলাকাগুলোতে ব্যাপক ভাঙনের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। অভিযোগ রয়েছে, প্রভাবশালীরা প্রশাসনের সহযোগিতায় অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের ভয়ে এলাকার কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না।
জানা গেছে, গোবিন্দাসী ইউনিয়নের ভালকুটিয়া ও চিতুএলাকায় গেল বর্ষা মৌসুমে ব্যাপক নদীভাঙনে ওই দুই গ্রামের শতাধিক ঘরবাড়িসহ ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে যায়। সে সময় তাৎক্ষণিক পানি উন্নয়ন বোর্ড জিওব্যাগ ফেলে ভাঙনরোধ করে। এরপর শুষ্ক মৌসুমে স্থানীয় নিকরাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা জুরান আলী মণ্ডল ও তার ছেলে সুমন এবং তার প্রতিবেশী আব্দুল্লাহসহ স্থানীয় যুবলীগের নেতাকর্মীরা সেখানকার জিও ব্যাগ ভেকু দিয়ে সরিয়ে ও পাকা সড়ক কেটে নদীতে রাস্তা (বাঁধ) তৈরি করে দিন-রাত অবাধে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় অনেকে বলেন, এ বিষয়ে যারা ব্যবস্থা নিবেন তাদেরকে মাসোহারা দিয়ে মুখ বন্ধ করে রাখা হয়। এ ছাড়া স্থানীয় জন প্রতিনিধিরাও বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত। জেগে ওঠা চর কাটা বন্ধে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন ভাঙনের শিকার ভুক্তভোগীরা।
বালু ব্যবসায়ী আওয়ামী লীগ নেতা জুরান আলী মণ্ডল বলেন, ওখানে আমি নিজে বালু উত্তোলন করি না। স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য কালাম মেম্বারসহ বেশ কয়েকজন ব্যবসা করেন। আপনারা কি আমাকেই দেখেন। অন্যদের কি আপনাদের চোখে পড়ে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদুর রহমান বলেন, নদী থেকে ফসলি জমি কেটে অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনের কোনো সুযোগ নেই। ইতোমধ্যে আমরা দু’টি অভিযান চালিয়ে অর্থদণ্ড করেছি। বালু উত্তোলন বন্ধে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে।