মধুপুরের প্রথম অনলাইন সংবাদপত্র

বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৩১ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম :

ঘাটাইলে শ্রমিকদের লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পিআইও‘র বিরুদ্ধে

সংবাদ দাতার নাম
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ১৮ মার্চ, ২০২৪
  • ১৫৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ৪০ দিনের কর্মসূচিতে শ্রমিক কাজ করেনি একদিনও। এলাকায় ঘুরে কোথাও শ্রমিক কাজ করেছে, এমন প্রমাণ মেলেনি স্থানীয়দের কাছ থেকে। এ কর্মসূচির কাজ কখন শুরু হয় আর কখন শেষ হয়, তাও জানেন না এলাকাবাসী।

এমনকি যাদের মোবাইল নম্বর দিয়ে বিকাশ অ্যাকাউন্ট খুলে কর্মসূচির টাকা উত্তোলন করা হয়েছে, তারাও জানেন না কিছুই।

এভাবেই ধোঁকাবাজির মধ্য দিয়ে শ্রমিকদের নামে লাখ লাখ টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠেছে টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইলের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) এনামুল হকের বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে অতিদরিদ্র কর্মক্ষম বেকার শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের জন্য ৪০ দিনের কর্মসূচির (২য় পর্যায়) কাজ শুরু হয় গেল বছরের ৩০ এপ্রিল। শেষ হয় ৭ জুন।

উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে ৪১টি প্রকল্পে ১১৬৫ জন শ্রমিক রয়েছেন এ কর্মসূচির তালিকায়।

কাগজে-কলমে কর্মসূচির কাজ দেখানো হয়েছে ঠিকই। কিন্তু মাঠে শ্রমিক কাজ করেছে এমন নজির নেই স্থানীয়দের কাছে। তবুও শ্রমিকদের নামের বিকাশ অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে মজুরির টাকা।

আর পিআইও’র প্রত্যক্ষ মদদে বিকাশ অ্যাকাউন্ট সিম ভাগ-বাটোয়ারা করে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। ফলে ভেস্তে যেতে বসেছে প্রকল্পটি।

এ নিয়ে তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করা হলেও তথ্য প্রদানে অপারগতা প্রকাশ করেন পিআইও এনামুল হক।

এদিকে নিয়মানুযায়ী, কোনো কাজ শুরুর পূর্বেই প্রকল্প স্থলে প্রয়োজনীয় তথ্যসংবলিত সাইনবোর্ড স্থাপন করতে হবে। কিন্তু ঘাটাইলের ১৪টি ইউনিয়ন ঘুরে তা পরিলক্ষিত হয়নি।

উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে ওয়েজ প্রকল্পের তালিকায় ১২ নম্বরে রয়েছে আনেহলা ইউনিয়নের ‘ডাকিয়াপটল ময়েন উদ্দিনের বাড়ি থেকে ভোলা মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা মেরামত’ নামে একটি প্রকল্প।

সরেজমিন স্কুলছাত্র সামী, ফাহিম ও রবিনের সঙ্গে কথা হয়। তারা জানায়, এ রাস্তায় কোনো দিন শ্রমিকদের কাজ করতে দেখিনি।

ওই গ্রামের ব্যবসায়ী সুরুজ মিয়া জানান, ৫/৭ বছরের মধ্যে ৪০ দিন শ্রমিকের কোনো কাজ হয়নি। একই কথা বললেন যোগিহাটি গ্রামের বৃদ্ধ নবাব আলী।

অপরদিকে, তালিকার ১৩ নম্বরে রয়েছে দিঘলকান্দি ইউনিয়নের ‘দত্তগ্রাম বাচ্চু মিয়ার বাড়ি থেকে খাদেমের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা এবং দত্তগ্রাম হাফিজের পুকুর পাড় থেকে দত্তগ্রাম রফিক বিএসসির বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা ও মাদারীপাড়া শামীমের বাড়ি থেকে মদিনার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা মেরামত’ নামে একটি প্রকল্প।

ওই এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুজ্জামান বলেন, এখানে ভেক্যু (এস্কেভেটর) দিয়ে দুদিন একটু কাজ করতে দেখেছি। তাছাড়া কোনো দিন কোনো শ্রমিক এখানে কাজ করেনি।

জানতে চাইলে একাধিক ইউপি চেয়ারম্যান নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রত্যেক ইউনিয়ন থেকে ২৪-২৫টি সিম নিয়েছে পিআইও এনামুল হক। এতে ১৪টি ইউনিয়নের কমপক্ষে ৩৩৬টি শ্রমিকের নামে বিকাশ অ্যাকাউন্টে সিম নেন পিআইও এনামুল।

শ্রমিকের তালিকায় থাকা যোগিহাটি গ্রামের রেনু বেগম বলেন, আমি এখন পর্যন্ত ৪০ দিনের কাজ করিনি। ৬-৭ বছর আগে এক মেম্বার আমার কাছ থেকে ভোটার আইডি আর ছবি নিয়েছিলেন।

এ প্রকল্পের বিল প্রস্তুত হয় ফিল্ড সুপারভাইজার ও ট্যাগ অফিসারের প্রত্যয়নের ভিত্তিতে।

জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ট্যাগ অফিসার বলেন, বাধ্য হয়ে স্বাক্ষর দিতে হয়।

উপজেলা চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম লেবু বলেন, ৪০ দিন কর্মসূচি প্রকল্পে কোনো কাজ হয় না। শ্রমিকদের সিম থাকে পিআইও আর চেয়ারম্যান-মেম্বারদের হাতে। আর এ কাজের নাটের গুরু পিআইও এনামুল হক। তিনিই চেয়ারম্যান-মেম্বারদের বাধ্য করান।

২০২২-২০২৩ অর্থবছরে (২য় পর্যায়) শ্রমিক কাজ করেছিল কিনা জানতে চাইলে পিআইও এনামুল হক বলেন, কোনো ইউনিয়নে ২৮ দিন কোনো ইউনিয়নে ২২ দিন করে কাজ হয়েছে।

জানতে পারলাম শ্রমিকের বিকাশ অ্যাকাউন্ট সিম থাকে আপনার কাছে-এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, এটা সম্ভব নয়।

পরে বিকাশ পেমেন্টে মজুরি পেয়েছে এমন দুজন শ্রমিকের নাম চাইলে বলেন, আমাকে সময় দিতে হবে।

ইউএনও ইরতিজা হাসান বলেন, এ রকম হয়ে থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংবাদ টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

The Trend (Online Shop)

©২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি বা ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা আইনত দণ্ডনীয়)
Design by: POPULAR HOST BD
themesba-lates1749691102