নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের সরকারি সা’দত কলেজে “রবীন্দ্র-নজরুল জন্মজয়ন্তী”–২০২৪ উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মঙ্গলবার (১১জুন) সকালে সরকারি সা’দত কলেজ মিলনায়তনে এ আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সরকারি সা’দত কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর সুব্রত নন্দী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সরকারি সা’দত কলেজের উপাধ্যক্ষ সুলতান আহম্মেদ এবং সরকারি সা’দত কলেজ শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক জনাব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান।
উক্ত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন রবীন্দ্র-নজরুল জন্মজয়ন্তী ২০২৪ কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ডঃ তাহমিনা খান। উপস্থিত ছিলেন সরকারি সা’দত কলেজের বিভিন্ন বিভাগীয় প্রধান , শিক্ষক মন্ডলী এবং সরকারি সা’দত কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক মোঃ রতন মিয়া, সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সবুজ হোসেন, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক লুৎফর রহমান, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সবুজ হোসাইন, নাছির হোসেনসহ কলেজ শাখা ছাত্রলীগের একাধিক নেতৃবৃন্দ। উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইল সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রিফাত খান রানা।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিএনসিসি ও স্কাউট সহ সরকারি সা’দত কলেজের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর সদস্যবৃন্দ। আলোচনার শুরুতে অধ্যক্ষ মহোদয় উপস্থিত সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তার বক্তব্য শুরু করেন। তিনি বলেন, আমি আমার চাকরি জীবনের একটা বিশেষ সময় (প্রায় ৮বছর) আনন্দ মোহন কলেজ, ময়মনসিংহ এ কাটিয়েছি। যেখানে শিক্ষক মিলনায়তনে একটি ছবির মধ্যে একটি স্লোগান লিখা ছিল। স্লোগান টির মূল কথা হচ্ছে- আমি খুনিকে ভয় করি না কারণ সে আমাকে সর্বোচ্চ খুন করতে পারে, আমি চোর-ডাকাত কে ভয় করি না কারণ সে আমার সর্বোস্ব লুটে নিতে পারে। কিন্তু আমি ভয় করি এই সমাজের নিরাশহত মানুষদের যাদের কারণে খুন, ডাকাতি, রাহাজানি আজও সমাজে বিরাজমান। গত সপ্তাহের কথা, একজন আন্তর্জাতিক গবেষক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন গবেষক তাদের যৌথ গবেষণার একটা ফলাফল প্রকাশ হয়েছে প্রথম আলো পত্রিকায়। ঘটনাটির মূল বিষয় টা ছিল- আমরা হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে যাচ্ছি এবং আমরা উত্তেজিত হয়ে নিজেদের প্রতি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছি। তার ফলশ্রুতিতে সেই সময় আমরা যে কাজগুলো করছি তা মানুষের পক্ষে শোভা পায় না। সুপ্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ, তোমরা এই বিষয়টি নিয়ে চিন্তাকর, রবীন্দ্রনাথ- কাজী নজরুল আজকের এই দিনে কতটা প্রাসঙ্গিক। আমরা আমাদের নিজেদের থেকে হারিয়ে যাচ্ছি, পরিবার থেকে হারিয়ে যাচ্ছি। আজকে যে দুইজন কবি সম্পর্কে আমরা জন্ম জয়ন্তী করছি, সব বক্তারা সুন্দর করে বলে গেলেন যে উনারা মানুষের কথা বলেছেন,মানবতার কথা বলেছেন। একজন পূর্ণাঙ্গ মানুষ হতে গেলে আমাদের কী কী গুনাবলি থাকা দরকার? আমি বিজ্ঞানের মানুষ, এই নজরুল- রবীন্দ্রনাথের কবিতা, গান, এগুলো বিশ্লেষন করা আমার সাধ্যের বাইরে। তারপর ও আমি যতটুকু বুঝি তাদের যে মনুষ্যত্বের হাতছানি এই টুকু যদি আমরা আরোহণ করতে পারি তাহলেই আমরা আমাদের জীবনে এই যে গবেষণায় আসছে আমরা হতাশ হয়ে যাচ্ছি, হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে যাচ্ছি, নিজেকে হারিয়ে ফেলছি, কেন আমরা সমাজের বাইরে চলে যাচ্ছি এটি আমরা খুঁজে পাবো। তোমরা আগামী দিনের প্রজন্ম, যে দেশটিকে চালাবে। পড়াশোনার পাশাপাশি পূর্ণাঙ্গ মানুষ হতে হবে। এই পূর্ণাঙ্গতার জন্য এই সব সাহিত্যের অবদান অবশ্যই ধারণ করতে হবে। আজকের দিনে আমি আমার শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করবো, তোমরা নিজেদের কে গড়ার জন্য এই সকল মহান ব্যক্তিত্বের, তাদের সাহিত্যকর্ম, তাদের ফলাফল রস সার সমেত পড়ো এবং নিজেকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলো, তোমরা জীবনে অনেক বড় হও। এই দোয়া করে বক্তব্য শেষ করেন।
পরিশেষে সভাপতি তার বক্তব্যের মাধ্যমে আলোচনা সভা শেষ করে। পরবর্তীতে সরকারি সা’দত কলেজের শিক্ষার্থীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে।