নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাকুয়াতে আবাদী জমি নষ্ট করে বালু উত্তোলন এবং বালু মহাল করার পায়তারা করছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। কাকুয়া ইউনিয়নের কাকুয়া, গয়লা হোসেন, দেওগোলা, আরগোলা, গোপালতিথিল ও রাজনগর এলাকায় আবাদী জমির উপর এই বালু মহাল করার চেষ্টা করছে তারা। বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) অবৈধভাবে যাতে বালু মহাল না করতে পারে সেই ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয় এলাকাবাসী জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন।
এদিকে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে কাকুয়া ইউনিয়নের বেশকয়েকটি গ্রামে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে ভাঙনে ঘর-বাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে নদী তীরবর্তী পরিবারগুলো।
লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাকুয়া ইউনিয়নের কাকুয়া, গয়লা হোসেন, দেওগোলা, আরগোলা, গোপালতিথিল ও রাজনগর এলাকায় স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় বালুখেকোরা বালু মহালের ইজারা না থাকলেও অবৈধভাবে যমুনা নদী থেকে বালু উত্তোলন করার পায়তারা করছে। ওইসব এলাকার মানুষজন চাষাবাদের উপর নির্ভরশীল। এলাকাগুলো থেকে বালু খেকোরা উন্নয়নমুলক কাজের অজুহাতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলণ করার পায়তারা করছে। বালু উত্তোলণ করা হলে বর্ষা মৌসুমে যমুনা নদীতে ভাঙন শুরু হবে। এতে আবাদি জমি ও বাড়ীঘর নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া হুমকিতে পড়বে এই ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মসজিদ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
জানা গেছে, যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাতুলি ইউনিয়নের চরপৌলি গ্রামের অরক্ষিত ১৬২৫ মিটার এলাকা এবং কাকুয়া ইউনিয়নের বেশকয়েকটি গ্রাম ও ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের চিতুলিয়াপাড়া, ভালকুটিয়া, কষ্টাপাড়া ও নিকরাইল ইউনিয়নের মাটিকাটা, পাটিতাপাড়া, কোনাবাড়ীসহ বেশকয়েকটি গ্রামে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
কাকুয়া এলাকার সেরাজুল ইসলাম জানান, গেল কয়েক বছর ধরে এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এবারও কাকুয়াসহ কয়েকটি এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। এরপরও বালু খেকোরা বালু উত্তোলণের পায়তারা করছে। যমুনা নদীতে বালু উত্তোলণ করা হলে বহু ঘর-বাড়ি নদীতে বিলীন হবে। প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করা হয়েছে। স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানান, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা জুয়েলসহ চেয়ারম্যানের লোকজন গত বছর কাকুয়াসহ কয়েকটি এলাকায় বালু উত্তোলণ শুরু করেছিল। পরে প্রশাসন অবৈধ বালু উত্তোলণ বন্ধে অভিযান পরিচালনা করেছিল। পরে ওই এলাকায় বালু উত্তোলণ বন্ধ রাখা হয়। এ বছরও একইভাবে তারাই পুণরায় বালু উত্তোলণ শুরু করতে পায়তারা করছে। তাদের ভয়ে এলাকার কেউ প্রতিবাদ করে না।
টাঙ্গাইর সদর উপজেলার কাকুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান ফারুক বলেন, গত বছর বালু মহাল বা বালুর ব্যবসা করতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। সবাই সব ব্যবসা করতে পারে না। সিরাজগঞ্জের লোকজন এই ব্যবসা করছে। রাজনগরসহ আরেকটি এলাকা ইউনিয়নের শেষ সীমনায় যমুনা নদীর মধ্যে। বর্তমানে বালু ব্যবসায় জড়িত নই।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসান বিন আলী জানান, অবৈধভাবে যমুনা নদী থেকে কেউ বালু উত্তোলন বা বালু মহাল করতে পারবে না। নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হয়।