নিজস্ব প্রতিনিধিঃ সারাদেশে চলমান কোটা বিরোধী আন্দোলন, সরকারি চাকুরিতে আরোপিত নতুন নিয়মাবলি, বিসিএস প্রশ্নফাঁস ও নানা অনিয়ম প্রসঙ্গে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করেছেন।
শিক্ষার্থীরা মনে করেন একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের বিকাশে যথাযথ মেধা মূল্যায়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি ক্ষেত্রে তারা সম-অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে যোগ্যতমের আবির্ভাব কামনা করেন। তারা কোটা প্রথা একেবারেই সমর্থন করেন না বরং এর সংস্কার দাবিকে পূর্ণ সমর্থন করেন। তারা মনে করেন এটি কেবল রাষ্ট্রের নাগরিকদের মধ্যে বৈষম্যের সঞ্চার করছে। শিক্ষিত যুব সমাজকে সরকারি চাকুরি হতে বিমুখ করে তুলছে। তাদের মধ্যে এখন দেখা দিয়েছে চরম হতাশা!
এ বিষয়ে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো: নাজমুস সাকিব বলেন,”সরকারি চাকুরি অনেকের কাছে একটি স্থিতিশীল ও সম্মানজনক কর্মক্ষেত্র হিসেবে বিবেচিত। সরকারি চাকুরির মূল আকর্ষণগুলোর মধ্যে নিয়মিত বেতন, পেনশন সুবিধা, এবং অন্যান্য ভাতাদি অন্তর্ভুক্ত।
প্রাইভেট চাকরির তুলনায় সরকারি চাকরি অধিক নিরাপদ, এতে সামাজিক মর্যাদাও বেশি, নিয়মিত কর্মঘণ্টা এবং ছুটির সুবিধা বিদ্যমান।
তবে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে যেমন: কর্মক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাব, পদোন্নতির ক্ষেত্রে ধীরগতি, এবং কখনো কখনো সৃষ্টিশীলতার অভাব।
তবে বর্তমানে কোটা পদ্ধতি ও প্রশ্নফাঁস সরকারি চাকুরীর ক্ষেত্রে বিরাট বাঁধার সৃষ্টি করছে।
প্রশ্নফাঁসের মাধ্যমে অযোগ্য ব্যক্তিরা সুযোগ পেয়ে যাচ্ছে এবং ক্ষেত্র বিশেষে সেটা দূর্নীতি থেকে শুরু করে অনেক বড় বড় অপরাধমূলক কাজের সূত্রপাত ঘটাচ্ছে।
কোটা পদ্ধতির জন্য অনেক মেধাবী এবং যোগ্য প্রার্থীও সরকারি চাকুরীতে সুযোগ পাচ্ছেন না।
তাই, সরকারি চাকুরীর প্রতি এখনকার মানুষের এক ধরনের নেতিবাচক চিন্তা তৈরি হয়েছে। শিক্ষিত যুব-সমাজ সরকারি চাকুরীর পরীক্ষা ব্যবস্থা ও নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিষয়েও আস্থা হারিয়ে ফেলেছে।”
একই প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সারিকা আক্তার রিয়া বলেন-”বাবার স্বপ্ন ছিলো বিসিএস ক্যাডার হবো। সেই জায়গা থেকে আমিও বিসিএস এর স্বপ্ন দেখতে শুরু করি। কিন্তু এখন চাকরির বাজারের যে পরিস্থিতি তাতে সরকারি চাকরির কথা চিন্তা করতেও যেন টাকা লাগে এমন মনে হচ্ছে আমার। আমাদের মতো মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানদের যেন সরকারি চাকরির স্বপ্ন দেখা এখন আকাশ কুসুম চিন্তা করার মতো।”
সরকারি চাকুরি ও এর পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নিয়ে নানান সংশয় এবং কোটা সংস্কার দাবি নিয়ে এখন পর্যন্ত একপ্রকার ধোঁয়াশার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা চায় তাদের দাবি মেনে নিয়ে সকল সংশয় এবং বৈষম্যের ইতি টানতে।