নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইল জেলায় ধনবাড়ী, মধুপুর ও ঘাটাইল উপজেলায় আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিলুপ্তির পথে গরিবের ‘রাজপ্রাসাদ’ খ্যাত ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘর। মানুষের অর্থনৈতিক সচ্ছলতা বৃদ্ধি, পারিবারিক নিরাপত্তা ও রুচিবোধের পরিবর্তনের কারণে মানুষ এখন আর মাটির ঘরে থাকতে চায় না।
সচ্ছল মানুষেরা এখন বহুতল ভবন পাকা দালানের মধ্যেই থাকতে স্বস্তিবোধ করেন। এতে করে দ্রুতই বিলুপ্ত হচ্ছে মাটির ঘর। একসময় টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ী ও মধুপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বেশিরভাগ বাড়িতে ছিল মাটির ঘর।
কিন্তু মানুষের রুচিবোধের পরিবর্তন ও অর্থনৈতিক সচ্ছলতা বৃদ্ধির কারণে বর্তমানে ঐসব বাড়িতে মাটির ঘরের জায়গায় শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন ডিজাইনের পাকা দালান বাড়ি। টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ী, মধুপুর ও ঘাটাইল উপজেলায় বিভিন্ন গ্রামে বেশিরভাগ মানুষের বাড়িতেই ছিল মাটির ঘর। বর্তমানে ঐসব গ্রামের হাতেগোনা কিছু বাড়িতে মাটির ঘর থাকলেও অধিকাংশ বাড়িতে নির্মিত হয়েছে দালান ঘর ও সেমি-পাকা টিনের ঘর।
তবে বর্তমানে বিলুপ্তপ্রায়। এ অঞ্চলের কৃষাণ-কৃষাণী ও তাদের ছেলে-মেয়েরা মিলেই অল্প কয়েক দিনেই তৈরি করতেন। মাটিতে কোদাল দিয়ে ভালো করে গুড়িয়ে নেওয়া হতো। তারপর পরিমাণ মতো পানি মিশিয়ে থকথকে কাঁদা বানাতেন। সেই মাটি দিয়েই হয় ঘর। অল্প-অল্প করে কাঁদা মাটি বসিয়ে ৭ ফুট থেকে ৮ ফুট উচ্চতার পূর্ণাঙ্গ ঘর তৈরি করতে সময় লাগতো মাত্র মাস খানেক।
সম্পূর্ণ হলে তার উপর ছাউনি হিসেবে ব্যবহার হয় ধানের খড়। এমনভাবে ছাউনি দেয়া হয় যেন ঝড়-বৃষ্টি কোন আঘাতেই তেমন একটা ক্ষতি করতে না পারে। কাল পরিক্রমায় বর্তমানে অর্থনৈতিক স্বচ্ছল পরিবারের লোকজন মাটির দেয়াল দিয়ে উপরে টিনের চালা দেন তারা। আবার ধনীদের বাড়ীতে থাকতো বিভিন্ন নকশা করা দুই তালা ঘর। আর্থিক স্বচ্ছলতা এবং এলাকায় ইট ভাঁটির কারণে বাপ-দাদার আমলের দোতলা মাটির ঘরটিও ভেঙে পাকাঘর তৈরি করেছেন। তবে কিছু এলাকায় এখনও কিছু কিছু বাড়িতে মাটির ঘর রয়েছে।