মধুপুরের প্রথম অনলাইন সংবাদপত্র

শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৪১ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম :

সৌদিতে সড়ক দুর্ঘটনায় ঘাটাইলের সোহেল

সংবাদ দাতার নাম
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল, ২০২৫
  • ২৯ বার পড়া হয়েছে

পরিবারের অভাব ঘোচাতে সৌদি আরব গিয়ে লাশ হলেন সোহেল রানা (৩০) নামের এক যুবক। তিনি টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সন্ধানপুর ইউনিয়নের গুইয়াগম্ভির কোকরবাড়ী গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে।

বাবা পান দোকানদার আর বড় ভাই আল আমিন অটোচালক। সোহেলের স্ত্রীর নাম মাকসুদা (২৮)।

মাশরাফি নামের ৮ বছর বয়সী তার ছেলে রয়েছে। সংসারের অভাব ঘোচাতে ৪ বছর আগে সৌদি আরবে যান সোহেল। কাজ নেন গাড়িচালকের। ওই দেশের রিয়াদ শহরে গাড়িচালকের কাজ করতেন তিনি।

গত ৮ এপ্রিল স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৬টার দিকে লরিচাপায় মারা যান সোহেল। তার মৃত্যুতে গ্রামের বাড়িতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে বাতাস। সোহেলের পরিবার প্রহর গুনছে কবে বাড়িতে আসবে তার নিথর দেহ।

সোহেলের বড় ভাই আল আমিন বলেন, ‘৪ বছর আগে সোহেল সৌদি আরবে যান। ওই দেশের রিয়াদ শহরে ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারের কাজে নিয়োজিত ছিলেন। কর্মরত ছিলেন বলদিয়া কম্পানির গাড়ির ড্রাইভার হিসেবে।’

তিনি জানান, ৮ এপ্রিল স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৬টায় লরিচাপায় মারা যান সোহেল। সকাল ১০টার সময় মোবাইল ফোনে সোহেলের এক সহকর্মী সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের বিষয়টি জানান।

ওই সহকর্মী জানান, ময়লা পরিষ্কারের কাজ করার সময় তার লরির সঙ্গে আরেকটি লরির মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে ঘটনাস্থলেই সোহেল মারা যান।

গতকাল বুধবার সোহেলের গ্রামের বাড়ি উপজেলার গুইয়াগম্বির গ্রামের কোকরবাড়ীতে গিয়ে দেখা যায়, তার মৃত্যুর খবরে বাড়িতে মাতম চলছে। মা-বাবা ও ভাই বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। স্ত্রী মাকসুদা বারবার স্বামীর কথা বলে বিলাপ করছিলেন। ৮ বছরের ছেলে মাশরাফি বাকরুদ্ধ হয়ে মায়ের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন বাড়িতে আগতদের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে ছিল। এ সময় তার চোখ দিয়ে গড়িয়ে পানি পড়ছিল। পান দোকানদার বয়োজ্যেষ্ঠ বাবা লতিফ কথা বলতে পাচ্ছিলেন না। অটোচালক বড় ভাই আল আমিনেরও একই অবস্থা।

মা রত্না বেগম বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন আর বলছিলেন, ‘সংসারের অভাব দূর করার জন্য ধারদেনা করে পোলারে (ছেলে) বিদেশ পাঠাইছিলাম। কিন্তু আমার বাবা আমারে ফাঁকি দিয়া দুনিয়া ছাইড়া চইলা গেল। এহন আমাগো কী হইব। তোমরা আমার বাবার লাশ তাড়াতাড়ি আমার বুকে আইনা দাও।’

স্ত্রী মাকসুদা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘সংসারের অভাব ঘোচাতে ধারদেনা করে বিদেশ গিয়ে আমার স্বামীর প্রাণটাই চলে গেল। এখন সন্তান ও পরিবার নিয়ে আমাদের অভাবের সংসার কিভাবে চলবে।’ তিনি তার স্বামীর লাশ দ্রুত দেশে আনার ব্যবস্থা করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান। একই দাবি করেন নিহত সোহেলের ভাই আল আমিন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য জালাল মিয়া বলেন, নিহত সোহেলের পরিবারের তেমন কোনো আবাদি জমিজমা নেই। ধারদেনা করে ৪ বছর আগে সৌদি আরব প্রবাসে যান। এখনো মানুষের ধারদেনা পরিশোধ করতে পারেননি। তিনি তার মরদেহ দ্রুত দেশে আনার ব্যবস্থা করতে স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সহযোগিতা কামনা করেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবু সাঈদ বলেন, ‘সৌদিপ্রবাসী সোহেল ওই দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ার বিষয়টি আমি স্থানীয়ভাবে জেনেছি। লাশ ফেরত আনার বিষয়টি প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারাধীন। দ্রুত তার লাশ ফেরত আনার ব্যাপারে কোনো সহযোগিতার প্রয়োজন হলে, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তা করা হবে।’

সংবাদ টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

The Trend (Online Shop)

©২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি বা ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা আইনত দণ্ডনীয়)
Design by: POPULAR HOST BD
themesba-lates1749691102