মধুপুরের প্রথম অনলাইন সংবাদপত্র

রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:২৪ পূর্বাহ্ন

First Online Newspaper in Madhupur

বাজারে আসছে মধুপুরের সুস্বাদু আনারস

সংবাদ দাতার নাম
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ২৩ জুন, ২০২৪
  • ৮৩ বার পড়া হয়েছে

জয়নাল আবেদীনঃ রসালো ফল আনারস। হাটবাজারে মৌসুমি ফলের ভিড়ে সুমিষ্ট ঘ্রাণ আর স্বাদের ভিন্নতার কারণে আনারসের পরিচিতি ও চাহিদা রয়েছে। আনারস মানেই মধুপুর। দেশি জাত ছাড়াও ফিলিপাইন জাতের আনারস আবাদ হয় এখানে। বস্তুত মধুপুরের আনারস সারা দেশেই জনপ্রিয়।

জানা যায়, দেশের বিশেষ ভৌগোলিক এলাকা মধুপুর গড়ের লালমাটির উঁচুনিচু টিলায় আনারস আবাদ শুরু ১৯৪২ সাল থেকে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর গারোরা প্রথম আনারস আবাদ শুরু করে। ফলন সন্তোষজনক হওয়ায় মধুপুর উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী ফুলবাড়িয়া, মুক্তাগাছা, ঘাটাইল ও জামালপুর সদরের (অংশবিশেষ) পাহাড়ি এলাকায় আনারস চাষ ছড়িয়ে পড়ে। এবার এ পাঁচ উপজেলায় প্রায় ২৩ হাজার একরে আনারসের আবাদ হয়েছে। শুধু মধুপুর উপজেলায় আবাদ ১৬ হাজার ৮৯৪ একর। মধুপুরে জায়েন্টকিউ, হানিকুইন এবং জলঢুপি জাতের আনারস আবাদ হলেও জায়েন্টকিউ সবার শীর্ষে।

তিন বছর আগে ফিলিপাইন থেকে আনা এমডি-২ জাতের আনারসের সফল চাষ হচ্ছে মধুপুরে। এ জাতের আনারস মধুপুরের মাটি ও জলবায়ুর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়েছে বলে দাবি স্থানীয় কৃষিবিদদের। মধুপুরে প্রায় সারা বছর আনারস পাওয়া যায়। হরমোন স্প্রে করে অকালে বা অমৌসুমে যে আনারস আনা হয় তা নিরাপদ খাবার নয় বলে কৃষিবিদরা গবেষণা থেকে জানান। সাধারণত মে মাসের শেষ সপ্তাহে বাজারে আনারস আসা শুরু হয়। টানা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সরবরাহ থাকে। এখন বাগান থেকে পুরোদমে আনারস সংগ্রহ চলছে। আনারসচাষি, মহাজন, ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা এখন দারুণ ব্যস্ত। আনারসের হাটগুলো এখন আনারসে সয়লাব। প্রতি দিন শত শত ট্রাকে করে এ ফল দেশের বিভিন্ন স্থানে চালান যাচ্ছে। মধুপুর উপজেলার পাহাড়ি ৬২টি গ্রামের মানুষের প্রধান অর্থনৈতিক অবলম্বন আনারস। এর চাষাবাদ, পরিচর্যা, পরিবহন, প্রক্রিয়াজাত ও বাজারজাতকরণ এবং সামগ্রিক কর্মকাণ্ডে দেড়-দুই লাখ মানুষের জীবন-জীবিকা জড়িত। কোনো কারণে বাজারে ধস নামলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় শ্রমিক শ্রেণি ও উত্পাদকরা। আনারস চাষে সেচের প্রয়োজন পড়ে না। তবু এবার টানা খরায় ফলন কিছুটা কম হয়েছে। মধুপুরে কৃষিঋণের বেশির ভাগ বিতরণ হয় আনারস খাতে। এছাড়া মহাজনি দাদনের কোটি কোটি টাকা লগ্নি হয়।

অবসরপ্রাপ্ত কৃষিবিদ আব্দুর রাজ্জাক তালুকদার গবেষণা থেকে জানান, মহাজনি ঋণের কুফল ছাড়াও অসাধু কেমিক্যাল ব্যবসায়ীদের ফাঁদ এখন দুশ্চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ আনারস, কলা ও এর সাথি ফসলকে কেন্দ্র করে কোটি কোটি টাকার চোরাই, নকল ও ক্ষতিকর হরমোন, সার এবং কেমিক্যালের অবাধ বাণিজ্য করছে প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। এতে যে শুধু আনারস, কলা ও অন্যান্য ফলমূল, সবজি বিষাক্ত হচ্ছে তা-ই নয়, জমির উর্বরতা শক্তি ও মাটির উপকারী জীব-অণুজীব বিনষ্ট হচ্ছে। ক্ষতিকর কেমিক্যালে উপকারী পতঙ্গ মৌমাছির সংখ্যা কমছে।

নিরাপদ ফল চাষ সমবায় সমিতির সভাপতি এবং রাষ্ট্রীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত আদর্শ কৃষক সানোয়ার হোসেন জানান, অর্গানিক পদ্ধতিতে ফল চাষ এখন সময়ের দাবি। ক্ষতিকর ও চোরাই হরমোন, কেমিক্যাল, সার ও বিষ ব্যবহার বন্ধে তারা আন্দোলন করছেন। তিনিসহ ৫৫ জন বড় কৃষক এখন অর্গানিক পদ্ধতিতে আনারস, ফলমূল আবাদ ও বাজারজাত করছেন। বেসরকারি সংস্থা এসএসের কৃষিবিদ প্রদীপ কুমার সরকার জানান, অর্গানিক পদ্ধতিতে ফল চাষের জন্য সহস্রাধিক কৃষককে জৈব সার ও বায়োপেস্টিসাইড সরবরাহ করা হচ্ছে। একটি কোম্পানির সহযোগিতায় এসব আনারস বাজারজাত করা হচ্ছে। মধুপুর উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, অর্গানিক ফল আবাদে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

সংবাদ টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

The Trend (Online Shop)

©2024 All rights reserved
Design by: POPULAR HOST BD
themesba-lates1749691102
Verified by MonsterInsights