নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের একটি উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির নির্বাচনে ভোট কেনার অভিযোগ উঠেছে শিক্ষকের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (২৫ জুন) জেলার বাসাইল উপজেলার দাপনাজোর এলাকার মার্থা লিন্ডষ্ট্রম নূরজাহার বেগম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার আগেই এমন অভিযোগ উঠেছে।
পরিচালনা কমিটির বর্তমান সভাপতি আবুল কালাম মোস্তফা লাবু সমর্থিত একটি প্যানেল ও ওয়াটার গার্ডেন রিসোর্ট এন্ড স্পা’র চেয়ারম্যান ড. আহসান হাবিব মনসুর সমর্থিত দুটি প্যানেল এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে বলে গুঞ্জন রয়েছে।
তবে এরই মধ্যে ওয়াটার গার্ডেন রিসোর্ট এন্ড স্পা চেয়ারম্যান ড. আহসান হাবিব মনসুর সমর্থিত প্যানেলের সাধারণ শিক্ষক সদস্য প্রার্থী ও বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক সাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে ভোট কেনার অভিযোগ তুলেছেন প্রতিদ্বন্দ্বি প্যানেলের প্রার্থীরা। পাশাপাশি রয়েছে প্রতিদ্বন্দ্বি প্যানেলের প্রার্থীদের হুমকি ধামকির মাধ্যমে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার অভিযোগও।
জানা যায়, ১৯৯২ সালের ৩ জানুয়ারি স্থাপিত হয় মার্থা লিন্ডষ্ট্রম নূরজাহার বেগম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। ১৯৯৭ সালে হয় এমপিওভুক্ত। বর্তমানে এর শিক্ষার্থী সংখ্যা ১১৩জন।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২৫ জুন অনুষ্ঠিতব্য দুই বছর মেয়াদী বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচনের ভোটার সংখ্যা ১১৩জন। বিদ্যালয় ভেন্যুতে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে এর ভোট গ্রহণ। নির্বাচনে সাধারণ অভিভাবক সদস্য পদে ৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বি করছেন। এর মধ্যে বিজয়ী হবেন ৪জন। সাধারণ শিক্ষক সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩জন। এর মধ্যে বিজয়ী হবেন ২জন। সংরক্ষিত মহিলা অভিভাবক সদস্য পদে ২জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে বিজয়ী হবেন ১জন। এছাড়াও সংরক্ষিত মহিলা শিক্ষক সদস্য পদে রয়েছেন ১জন। এ পদে কোন প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী না থাকায় তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ইতোমধ্যেই বিজয়ী হয়েছেন।
ভোটার ও প্রার্থীরা জানায়, বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথম পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ কারণে নানা আলোচনা, সমালোচনা আর গুঞ্জন চলছে এ নির্বাচনকে ঘিরে। অপরদিকে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা রয়েছে ভোটার ও প্রার্থীদের মাঝে।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ঠ অভিভাবক ও শুভাকাঙ্খিদের অভিযোগ, বিদ্যালয়ের উজ্জল ভবিষ্যৎ আর ছাত্রীদের সুরক্ষার জন্য এ নির্বাচন আর ফলাফল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিদ্যালয়ের স্বার্থ রক্ষায় একটি প্যানেল এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও অপর পক্ষ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ব্যক্তি স্বার্থ ও বিদ্যালয়ের জমি দখল নেয়া ওয়াটার গার্ডেন রিসোর্ট এন্ড স্পা রক্ষার তাগিদ নিয়ে। এ পক্ষ বিজয়ী হতে ভোট কেনার মত নোংরা তৎপরতা শুরু করছেন বলেও তারা একাধিক অভিযোগ পেয়েছেন। এছাড়াও প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদের নানা ভাবে হুমকি দেয়াসহ বিদ্যালয়ের স্বার্থ রক্ষায় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা প্যানেলের ভোটারদের কেন্দ্রে আসতে বাঁধা প্রয়োগের মত অপচেষ্টা চালানোর অভিযোগও পেয়েছেন তারা। সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন বাস্তবায়নে সকল মহলের হস্তক্ষেপ আর সহযোগিতা চেয়েছেন তারা।
বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো. সাইদুর রহমান তার বিরুদ্ধে ভোট কেনার ও প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদের হুমকি দেয়ার অভিযোগের পক্ষে ও বিপক্ষে কোন বক্তব্য দেননি। ওই অভিযোগ গুলো যারা করছেন তাদের তার সম্মুখে নিয়ে যাওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মানছুর রহমান জানান, সহকারি শিক্ষক মো. সাইদুর রহমান এর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদের মনোনয়ন কেনা, প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার জন্য হুমকি দেয়াসহ ভোট কেনার অভিযোগ পাচ্ছি। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অভিযোগের বিষয়ে অবগত করার কথা জানান তিনি।
তিনি বলেন, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে, তবে কোন প্যানেল পরিচিতি নিয়ে নয়।
তিনি আরও বলেন, পরিচালনা কমিটির বর্তমান সভাপতি আবুল কালাম মোস্তফা লাবু সমর্থিত একটি প্যানেল ও ওয়াটার গার্ডেন রিসোর্ট এন্ড স্পা’র চেয়ারম্যান ড. আহসান হাবিব মনসুর সমর্থিত দুটি প্যানেল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে এমন গুঞ্জন আমিও শুনেছি। প্রতিদ্বন্দ্বিদের অনেকেরই লাবু ও মনসুর সাহেবের সাথে সুসম্পর্ক থাকায় এমন প্রচার চলছে বলে জানান তিনি।