মধুপুরের প্রথম অনলাইন সংবাদপত্র

বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:১৬ অপরাহ্ন

First Online Newspaper in Madhupur

মির্জাপুরে আন্দোলনে আহত লিকসনের মানবেতর জীবনযাপন

সংবাদ দাতার নাম
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৪৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের হামলায় আহত কলেজছাত্র লিকসন হোসেন খান মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তার চিকিৎসা খরচ জোগাতেও হিমশিম খাচ্ছে পরিবার। তার খণ্ডকালীন চাকরিটিও এখন অনিশ্চিত। তিনি গত ১৯ জুলাই ঢাকা-চট্রগ্রাম রোডের নারায়ণগঞ্জের সিদ্দিরগঞ্জের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় হামলার শিকার হয়ে আহত হন।

সরকারি নির্দেশনা থাকলেও কুমুদিনী হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন লিকসন হোসেন খান। তিনি মির্জাপুর উপজেলার উয়াশী ইউনিয়নের উয়ার্শী গ্রামের আবুল হোসেন খানের ছোট ছেলে। মানিকগঞ্জ সরকারি দেবেন্দ্র নাথ কলেজে মাস্টার্সের (ব্যবস্থাপনা) ছাত্র তিনি। লেখাপড়ার পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের পারটেএক্স পালস অ্যান্ড পেপার মিলস লিমিটেড কারখানায় অপারেটর পদে খণ্ডকালীন চাকরি করতেন।

জানা গেছে, চিকিৎসার খরচ মেটাতে সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. শহীদুজ্জামানের সুপারিশে লিকসন মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কাছেও লিখিত আবেদন করেছিলেন।

লিকসন হোসেন খান দরিদ্র কৃষক পরিবারের সন্তান। সংসারে ছিল মা-বাবা, তিন ভাই ও তিন বোন। দুই বোনের বিয়ে হয়েছে।

বড় দুই ভাই বিয়ে করে আলাদা সংসার করছেন। এখন কলেজপড়ুয়া ছোট বোন, মা-বাবাকে নিয়ে চার সদস্যের পরিবার।লেখাপড়ার পাশাপাশি লিকসন নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের পারটেক্সের পালস অ্যান্ড পেপার মিলস লিমিটেড কারখানায় খণ্ডকালীন চাকরি করতেন।আন্দোলনে লিকসন সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। ১৮ জুলাই মানিকগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যোগ দেন।

১৯ জুলাই ঢাকা-চট্রগ্রাম রোডের নারায়ণগঞ্জের সিদ্দিরগঞ্জের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আন্দোলন অংশ নেন। সেখানে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের নির্যাতনের শিকার হন লিকসন। রড ও লাঠি দিয়ে পেটালে তার বাঁ হাতের সোল্ডার হিমোরাজ ভেঙে যায়। ২৩ জুলাই লিকসন মির্জাপুরের কুমুদিনী হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। চিকিৎসক ভর্তি থেকে চিকিৎসার পরামর্শ দিলেও অর্থের অভাবে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিতে পারছেন না। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া আহতদের সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসার নির্দেশনা থাকলেও কুমুদিনী হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন লিকসন। তিনি বাড়ি থেকেই হাসপাতালে নিয়মিত চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।

মারধরে আহত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত লিকসন হোসেন খান। এ কারণে তিনি বেতনও পাচ্ছেন না। সুস্থ হয়ে চাকরি ফিরে পাবেন কিনা, তাও এখন অনিশ্চিত। এমনটা ভেবেই হতাশায় ভুগছেন তিনি।

গতকাল বুধবার (২ অক্টোবর) সকালে কথা হলে লিকসনের জানান, দরিদ্র পরিবারের সন্তান তিনি। বৃদ্ধ মা-বাবা এখন কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন। তার আয়েই সংসার চলত। দেশে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের আশায় আন্দোলনে অংশ নিয়ে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের নির্যাতনের শিকার হন তিনি। এখন বেতন পাচ্ছেন না। চাকরি ফিরে পাবেন কিনা, তাও জানেন না। চিকিৎসা করতেও প্রয়োজনীয় অর্থের অভাব।

তিনি আরো জানান, সরকারি নির্দেশনা থাকলেও কুমুদিনী হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না। সরকারি নির্দেশনা পত্র কুমুদিনী হাসপাতালের পরিচালক ডা. প্রদীপ কুমার রায়কে দেখানো হলে তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। বন্ধু-বান্ধবের কাছ থেকে ধার-দেনা করে চিকিৎসা করালেও এখন পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন বলে হতাশা প্রকাশ করেন তিনি।

কুমুদিনী হাসপাতালের পরিচালক ডা. প্রদীপ কুমার রায়ের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা নিতে লিকসন হোসেন খান নামের কেউ আসেননি। আন্দোলনে অংশ নেওয়া আহতদের মধ্যে কুমুদিনী হাসপাতালে ৩৪ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের নামের তালিকা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।’

সংবাদ টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

The Trend (Online Shop)

©2024 All rights reserved
Design by: POPULAR HOST BD
themesba-lates1749691102
Verified by MonsterInsights