মধুপুরের প্রথম অনলাইন সংবাদপত্র

রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৫০ অপরাহ্ন

শিরোনাম :
মধুপুরে ৫ম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা অভিযোগে সৎপিতার শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন মধুপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থী কর্নেল আজাদের মতবিনিময় মধুপুরে অ্যাড. মোহাম্মদ আলীর মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা   মধুপুরে খাদ্য সংকটে গারো জনপদে বানরের উপদ্রব দিন দিন বাড়ছে মধুপুর ফল্টে ভূমিকম্পে কোটি মানুষের প্রাণহানির শঙ্কা মধুপুরে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুই আরোহীর মৃত্যু মধুপুরে এক প্রতারক গ্রেফতার টাংগাইলের ৪টি আসনে বিএনপির হ-য-ব-র-ল অবস্থা!!! মধুপুরে প্রাইভেট হাসপাতাল ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক এসোসিয়েশনের মানববন্ধন মধুপুরে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ, ধাওয়া–পালটা ধাওয়া ও ভাঙচুর

১৬ বছর জেল খেটে বাড়ি ফিরলেন গোপালপুরের বাদল

সংবাদ দাতার নাম
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ১৫৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্বস প্রতিনিধিঃ আলোচিত পিলখানা ঘটনায় দীর্ঘ ১৬ বছর কারাগারে থাকার পর বাড়ি ফিরেছেন টাঙ্গাইলের গোপালপুরের বদরুল আলম বাদল। জামিনে বের হয়ে গত বৃহস্পতিবার বাড়ি ফেরেন তিনি। ১৬ বছরে নানা পরিবর্তনের কারণে চিরচেনা গ্রামটি অপরিচিত তার। বদরুলের আসার খবরে গ্রামের লোকজন দেখতে ভিড় জমাচ্ছে বাড়িটিতে। তাকে ফিরে পেয়ে খুশি পরিবার ও এলাকাবাসী। তবে ক্ষতিপূরণ, মামলা প্রত্যাহারসহ চাকরি বহাল রাখা দাবি তাদের।

টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার হেমনগর ইউনিয়নের নবগ্রামের মৃত আমজাদ হোসেনের ছেলে বদরুল আলম বাদল। চার ভাই ও তিন বোনের মধ্যে বদরুল তৃতীয়। তাদের পরিবারে বদরুলই একমাত্র সরকারি চাকরিজীবী। আর্থিক সচ্ছলতা ফেরাতে সে সময় যোগ দিয়েছিল বিডিআরে। কিন্তু ভাগ্য সহায় হয়নি তার। পিলখানার ঘটনায় আসামি হয়ে চাকরিচ্যুত হওয়ার পর পরিবারে নেমে আসে দুর্যোগ।

৪০ দিন বয়সী একমাত্র মেয়ে সোনালী এখন এসএসসি পরীক্ষার্থী। দীর্ঘ ১৬ বছর বাবার আদর থেকে বঞ্চিত সোনালী দীর্ঘদিন পর বাবাকে কাছে পেয়ে আবেগে আপ্লুত, ঘুরছে বাবার হাত ধরে। বাড়িতে আসার খবরে গ্রামের মানুষজন ভিড় করছে বদরুলকে দেখতে।

স্বামী না থাকায় ৪০ দিন বয়সী শিশুকে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়েছে স্ত্রী রেখা খাতুনকে। স্বামীর ফেরার আশাও ছেড়ে দিয়েছিলেন। স্বামী ফেরায় খুশি তিনিও। তবে বিনাদোষে কারাভোগ ও বিডিআরের চাকরি ফেরতসহ ক্ষতিপূরণ চেয়ে সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন তার পরিবার।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, একটি টিনের ঘর রয়েছে বিডিআর বদরুল আলমের। ঘরের মেঝে কাঁচা। মেয়েকে নিয়ে টিনের ঘরে থাকতেন স্ত্রী রেখা আক্তার। রান্না ঘরটিও জরাজীর্ণ।

জানা গেছে, ২০০৫ সালে বিডিআরে চাকরি নেওয়া বদরুল ২০০৯ সালে পিলখানায় বিস্ফোরক মামলায় ১৬ বছর কারাগারে থাকার পর জামিনে বের হয়ে বাড়ি এসেছেন গত বৃহস্পতিবার। বিডিআরে চার বছর চাকরির পর বদলির আদেশ হয়েছিল পিলখানা থেকে। শেষ প্যারেড করে ছুটি নিয়ে বাড়িতে আসার কথা থাকলেও ছুটির কাগজ হাতে না পাওয়ায় ব্যারাকেই থেকে যেতে হয়েছে। পরেরদিনই পিলখানার ট্রাজিডির ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরও দুইমাস পিলখানাতেই চাকরি করেছেন তিনি। পিলখানায় হত্যাকাণ্ডে জড়িত না হয়েও ঘটনার দুইমাস পর আসামি করা হয় তাকে। হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে আলাদা দুইটি মামলা হয় বদরুলসহ কয়েকশ জোয়ানের বিরুদ্ধে। পরে হত্যা মামলা থেকে ২০১৩ সালে খালাস পেলেও বিস্ফোরক আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে রাখা হয় তাকে। কারাগারে থাকার অবস্থায় ২০১৪ সালে মা আর ২০১৯ সালে মারা যায় বাবাও। বাবা ও মা মারা যাওয়ার সময় তাকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়নি।

নবগ্রামের বাসিন্দা নাসির হোসেন বলেন, “বদরুল খুবই দরিদ্র পরিবারের সন্তান। চাকরি করে ভাগ্য ফেরাতে চেয়েছিল। কিন্তু পিলখানার ঘটনায় সব শেষ হয়ে গেছে পরিবারের। জেলখানায় তাকে দেখতে যাওয়ার মত কেউ ছিল না।”

বদরুলের মেয়ে সোনালী জানায়, ৪০ দিন বয়সে বাবা জেলে গিয়েছিল। ছোটবেলায় গিয়েছি জেলখানায় বাবাকে দেখতে। কিন্তু বাবাকে ধরে দেখতে পারিনি। বাবাকে কাছে না পাওয়ার বেদনা সেটা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। স্কুলে যখন সহপাঠীদের বাবারা যেত তখন বাবা না থাকার অভাব বুঝেছি। বাবা এখনো আমার কাছে ফিরে এসেছে এটাই বড় পাওয়া। আজ আমি খুব খুশি। তবে বাবার সাথে অন্যায় হয়েছে। মামলা প্রত্যাহার ও ক্ষতিপূরণের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাই।

বদরুলের স্ত্রী রেখা খাতুন বলেন, “অপরাধী না হয়েও স্বামীকে কারাগারে রাখা হয়েছে। প্রথম তিন বছর চাকরির অর্ধেক টাকা পেলেও পরবর্তীতে আর কোনো টাকা দেওয়া হয়নি সরকার থেকে। মেয়েকে নিয়ে খুবই কষ্টে দিন পার করেছি, এখনো করছি। মেয়েটা বড় হয়েছে বাবাকে ছাড়া। মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, চাকরিতে বহালসহ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক আমাদের।”

বিডিআর বদরুল আলম বাদল বলেন, “পিলখানার ঘটনার সময় ব্যারাকে থেকেও হত্যা মামলার আসামি করা হয়েছে। এছাড়া চাকরিচ্যুত করা হয়। চাকরি পুর্নবহাল, মামলা হতে অব্যাহতিসহ ১৬ বছরের পাওনাদি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি সরকারের কাছে।”

সংবাদ টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

The Trend (Online Shop)

©২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি বা ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা আইনত দণ্ডনীয়)
Design by: POPULAR HOST BD
themesba-lates1749691102